কাওাড় যাত্রা: QR কোড বাধ্যতামূলক করার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ, জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট

কাওাড় যাত্রা: QR কোড বাধ্যতামূলক করার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ, জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট

কাওাড় যাত্রা পথে দোকানগুলিতে QR কোড এবং বিক্রেতার পরিচয় বাধ্যতামূলক করার নির্দেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। আদালত উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের কাছে জবাব চেয়েছে।

QR কোড বিতর্ক: কাওাড় যাত্রা পথে দোকান ও ধাবাগুলিতে QR কোড এবং মালিকের পরিচয় প্রকাশ করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কড়া মনোভাব দেখিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের কাছে জবাব তলব করে উভয়কে নোটিশ জারি করেছে। আদালত জানতে চেয়েছে, কেন বিক্রেতাদের তাদের পরিচয় এবং ধর্মের তথ্য প্রকাশ্যে আনতে বাধ্য করা হচ্ছে?

সুপ্রিম কোর্টে শুনানি এবং নোটিশ জারি

বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি এম কোটেশ্বর সিং-এর বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করেন। আদালতে দায়ের করা আবেদনে বলা হয়েছে, কাওাড় যাত্রা পথে দোকানগুলির বাইরে এমন QR কোড লাগানোর নির্দেশ অসাংবিধানিক, যেখানে দোকান মালিকের নাম এবং ধর্ম প্রকাশ করা হয়। আবেদনকারীদের বক্তব্য, এটি গোপনীয়তার অধিকারের লঙ্ঘন এবং ব্যবসার স্বাধীনতাকে সরাসরি প্রভাবিত করে।

আদালত এই যুক্তিগুলি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের কাছে জবাব চেয়েছে। উভয় সরকারকে ২২শে জুলাইয়ের মধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দিতে হবে।

উত্তরপ্রদেশ সরকারের সময় চাওয়া

শুনানির সময় উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী আদালতের কাছে দুই সপ্তাহের সময় চেয়েছেন, যাতে তারা বিস্তারিত জবাব দিতে পারেন। এর উপর আবেদনকারীর আইনজীবী আপত্তি জানান। তিনি বলেন, ততক্ষণে কাওাড় যাত্রা শেষ হয়ে যাবে এবং এই আবেদনটি অকার্যকর হয়ে যাবে। তিনি আদালতের কাছে আবেদন করেন, এই মামলার দ্রুত শুনানি করা হোক, যাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বস্তি দেওয়া যায়।

আবেদনে কি বলা হয়েছে

আবেদনকারীরা আদালতে বলেছেন, কোনও বিক্রেতাকে তার ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে বাধ্য করা ভারতীয় সংবিধানের ১৪, ১৯ এবং ২১ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। সংবিধান অনুসারে, প্রত্যেক নাগরিকের समानता, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে। এমতাবস্থায়, এই ধরনের পরিচয়-ভিত্তিক নীতি বৈষম্যকে উৎসাহিত করে।

QR কোড লাগানোর নির্দেশ কি

আসলে, কাওাড় যাত্রা পথে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড প্রশাসন নির্দেশ জারি করেছিল যে, সমস্ত ধাবা, রেস্টুরেন্ট এবং দোকানগুলিতে QR কোডযুক্ত একটি সাইনবোর্ড লাগানো বাধ্যতামূলক। এই QR কোডে দোকান বা প্রতিষ্ঠানের মালিকের নাম এবং ধর্ম সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রশাসনের যুক্তি ছিল, এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

তবে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পক্ষ আপত্তি জানিয়েছে। আবেদনকারীদের বক্তব্য, এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করলে কেবল সামাজিক উত্তেজনা বাড়তে পারে না, বরং এটি ধর্মীয় ভিত্তিতে পরিচয় প্রকাশেরও মাধ্যম হতে পারে।

আদালতের পরবর্তী শুনানি ২২শে জুলাই

সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ২২শে জুলাই ধার্য করেছে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে, ততক্ষণে সব পক্ষকে তাদের জবাব জমা দিতে হবে। আদালত উত্তরপ্রদেশ সরকারকে হস্তক্ষেপের আবেদনগুলিতে উত্থাপিত সমস্ত বিষয়ে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

Leave a comment