রায়পুরে জন বিতরণ ব্যবস্থা (PDS)-এ বড় ধরনের জালিয়াতি সামনে এসেছে। হাজার হাজার রেশন কার্ড ভুল পাওয়া গেছে, যার মধ্যে নাবালক এবং ১১০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত। নকল আধার নম্বর ব্যবহার করে সরকারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রায়পুর: খাদ্য বিভাগের তদন্তে জন বিতরণ ব্যবস্থায় (PDS) বড় ধরনের অনিয়ম ধরা পড়েছে। হাজার হাজার রেশন কার্ড ভুলভাবে তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে নাবালক এবং ১১০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। ৮৬ হাজারের বেশি কার্ড নকল আধার নম্বর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। বিভাগ এখন সন্দেহজনক কার্ডগুলির ভৌত যাচাইকরণ করে সেগুলি বাতিল করছে। সকল সুবিধাভোগীকে ই-কেওয়াইসি করানোর আবেদন জানানো হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে কার্ডের অপব্যবহার রোধ করা যায় এবং সরকারের আর্থিক ক্ষতি কমানো যায়।
রায়পুরে জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি রেশন কার্ড
খাদ্য বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, রায়পুরে অনেক রেশন কার্ড অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী ১,৮০০-এর বেশি শিশুর নামে আলাদা আলাদা কার্ড তৈরি করা হয়েছে, যা নিয়মের পরিপন্থী। এছাড়াও, রাজ্যে ১১০ বছরের বেশি বয়সী ১,৮০৬ জন ব্যক্তির নাম রেশন কার্ডে নথিভুক্ত আছে, যাদের নামে বছরের পর বছর ধরে রেশন তোলা হচ্ছে।
এই কার্ডগুলির ব্যবহার শুধু রেশন তোলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং অনেক সুবিধাভোগী স্বাস্থ্য প্রকল্প এবং অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধাগুলিও গ্রহণ করেছেন। বিভাগ জানিয়েছে যে এখন এই সন্দেহজনক কার্ডগুলির ভৌত যাচাইকরণ করা হচ্ছে এবং সেগুলি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
নকল আধার নম্বরের ব্যবহার
তদন্তে আরও জানা গেছে যে হাজার হাজার মানুষ নকল আধার নম্বর ব্যবহার করে বিভিন্ন জেলায় রেশন কার্ড তৈরি করিয়েছেন। রাজ্যে মোট ৮৬ হাজারের বেশি রেশন কার্ড নকল আধার নম্বর দিয়ে তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে রায়পুরের অংশ ১৮ হাজারের বেশি।
খাদ্য বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে শহরে মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি এবং বসতির সংখ্যা বাড়ার কারণে এই অনিয়ম হয়েছে। বিভাগ সতর্ক করেছে যে এই ধরনের অবৈধ কার্ড বন্ধ করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুবিধাভোগীদের জন্য ই-কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক
খাদ্য বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে ১,০৫,৫৯০টি রেশন কার্ড রয়েছে যাদের আধার নম্বর নিষ্ক্রিয়। এছাড়া, ৮৩,৮৭২ জন সদস্য এখনও ই-কেওয়াইসি করাতে পারেননি। রাজ্যে মোট ২.৭৩ কোটি রেশন কার্ডধারী রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২.২৭ কোটি মানুষ ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করেছেন, যখন ৪৬.৩৪ লক্ষ মানুষের ই-কেওয়াইসি এখনও বাকি রয়েছে।
বিভাগ সকল সুবিধাভোগীকে অনুরোধ করেছে যে তারা পাঁচ বছরের বেশি বয়সী সকল সদস্যের ই-কেওয়াইসি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করিয়ে নিন। এর জন্য ‘আমার ই-কেওয়াইসি’ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
ছয় মাস রেশন না নিলে কার্ড বাতিল
খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে যে যদি কোনো সুবিধাভোগী ছয় মাস পর্যন্ত রেশন না তোলেন, তাহলে তার কার্ড সাময়িকভাবে বাতিল করা হবে। তিন মাসের মধ্যে যাচাইকরণ এবং ই-কেওয়াইসি করার পরেই কার্ডটি আবার চালু করা হবে।
বিভাগ আরও সতর্ক করেছে যে ভবিষ্যতে এই ধরনের অনিয়ম রোধ করতে নিয়মিত নজরদারি এবং প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভাগ মনে করে যে সময়মতো ই-কেওয়াইসি এবং ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রেশন বিতরণ ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত করা যেতে পারে।