মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হাঙ্গেরিকে রাশিয়া থেকে তেল কেনার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এই পদক্ষেপটি হাঙ্গেরির জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ দেশটি সমুদ্রপথে তেল আমদানি করতে পারে না এবং সম্পূর্ণভাবে পাইপলাইনের ওপর নির্ভরশীল।
ওয়াশিংটন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানকে রাশিয়া থেকে তেল কেনার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে দুই নেতার বৈঠকের সময় এই ঘোষণা করা হয়, যেখানে ট্রাম্প এবং অরবান একে অপরের প্রকাশ্যে প্রশংসা করেন। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর অরবান-এর এটিই ছিল প্রথম হোয়াইট হাউস সফর। বৈঠকে অরবান বলেন যে ইউক্রেনের পক্ষে রাশিয়াকে পরাজিত করা একটি অলৌকিক ঘটনা হবে, যা তার এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ তুলে ধরে।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো এই সাক্ষাৎ এবং অব্যাহতিকে দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন যে এই পদক্ষেপটি হাঙ্গেরির জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশকে জ্বালানি সংকট থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
ট্রাম্প হাঙ্গেরিকে কেন অব্যাহতি দিলেন?
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যাখ্যা করেছেন যে হাঙ্গেরির ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে এই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। হাঙ্গেরির কোনো সমুদ্রবন্দর নেই এবং এটি কেবল পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল ও গ্যাস সরবরাহ পায়। এমন পরিস্থিতিতে, রাশিয়া থেকে তেল কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারত। প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বারবার বলেছেন যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি তাদের ভৌত প্রয়োজন, কোনো রাজনৈতিক বা আদর্শগত বিষয় নয়।

তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাপ প্রতিহত করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন যে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহ তাদের দেশের জন্য অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এই পদক্ষেপ হাঙ্গেরির জন্য অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই লাভজনক প্রমাণিত হতে পারে।
হাঙ্গেরি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রভাব
হাঙ্গেরিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়া উভয়েরই ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে দেখা হয়। হাঙ্গেরি এর আগে বুদাপেস্টে ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ইউক্রেন নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিবাদের কারণে ট্রাম্প অক্টোবরে এই বৈঠক বাতিল করেন। তবে, ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার দুটি বৃহৎ তেল কোম্পানি — রোসনেফট এবং লুকোইল-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং মার্কিন কোম্পানিগুলোকে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এই বৈঠক অরবান-এর জন্য একটি প্রতীকী বিজয়। ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের প্রতি হাঙ্গেরি এবং তার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আরও সম্মান প্রদর্শনের আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হাঙ্গেরি এবং এর নেতার প্রতি সম্মান জানানো উচিত, কারণ তারা অভিবাসন-এর মতো বিষয়ে সঠিক অবস্থান নিয়েছেন।












