রাজস্থানের পালি জেলায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে আফসানা বানু নামে এক মহিলা ছয় মাসে আটবার সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন। বারবার সাপের দংশনের এই ঘটনা পরিবার এবং ডাক্তারদের জন্য এক রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা পুরো গ্রামে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
পালি নিউজ: রাজস্থানের পালি জেলার শেখো কি ধানি গ্রামে বসবাসকারী মুসলিম মহিলা আফসানা বানু গত ছয় মাসে আটবার সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন। এই সমস্ত ঘটনা দিনের আলোয় ঘটেছে, যা পরিবার ও প্রতিবেশীদের স্তম্ভিত করে দিয়েছে। আফসানার পরিবারে ২৫ জন সদস্য রয়েছে, কিন্তু কেবল তাঁকেই ক্রমাগত সাপ নিশানা বানাচ্ছে। বেশ কয়েকবার তাঁর অবস্থা এতটাই গুরুতর হয়েছিল যে তাঁকে যোধপুরের এইমসে ভর্তি করে ভেন্টিলেটরে রাখতে হয়েছিল। বারবার ঘটা এই রহস্যময় ঘটনা পুরো গ্রামে ভয় ও অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি করেছে।
আফসানা বানুকে ছয় মাসে আটবার সাপ দংশন করেছে
রাজস্থানের পালি জেলার শেখো কি ধানি গ্রামে বসবাসকারী আফসানা বানু বারবার সাপের শিকার হচ্ছেন। গত ছয় মাসে তাকে আটবার সাপ কামড়েছে, যার ফলে পুরো পরিবার আতঙ্কিত। বিশেষ ব্যাপার হলো, প্রতিবার এই ঘটনা দিনের আলোয় ঘটেছে এবং আফসানাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে।
একবার তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে তাঁকে যোধপুরের এইমসে দুই দিন ভেন্টিলেটরে রাখতে হয়েছিল। ডাক্তারদের মতে, শরীরের ওপর সাপের কামড়ের স্পষ্ট চিহ্নও পাওয়া গেছে, যা এই ঘটনাকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে।
গুরুতর অবস্থায় ভেন্টিলেটরে ভর্তি হয়েছিলেন আফসানা
প্রথম ঘটনাটি মার্চ মাসে ঘটেছিল, যখন ঝাড়ু দেওয়ার সময় হঠাৎ সাপ আফসানাকে কামড়ে দেয়। তাঁর স্বামী মুস্তাক খান দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সাপটিকে ধরে নিরাপদে রাখেন। এরপর এপ্রিল ও মে মাসে দুবার করে, জুন ও সেপ্টেম্বর মাসেও দুবার করে তাঁকে সাপ কামড়েছে।
পঞ্চমবারের ঘটনাটি সবচেয়ে বিপজ্জনক ছিল, যখন বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং তাঁর অবস্থা গুরুতর হয়ে যায়। এই সময়ে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। পরিবার এবং প্রতিবেশীরা এখনও বুঝতে পারছেন না যে কেন কেবল আফসানাই বারবার সাপের শিকার হচ্ছেন।
ডাক্তাররা বলেছেন বারবার কামড়ের কারণ
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বারবার সাপের কামড়ে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে থাকে। যদি সাপ বিষাক্ত হয়, তাহলে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধে না এবং রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে থাকে।
মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ডঃ এইচ.এম. চৌধুরী জানিয়েছেন যে আফসানার রক্ত পরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন যে এতবার সাপের কামড়ের ঘটনা চিকিৎসাবিজ্ঞানকেও অবাক করেছে।
গ্রামে কুসংস্কার ও গ্রহ-নক্ষত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে
গ্রামের কিছু মানুষ এটিকে কুসংস্কারের সঙ্গে যুক্ত করছেন এবং ঝাড়-ফুঁককেই এর সমাধান বলে জানাচ্ছেন। তবে আফসানার স্বামী মুস্তাক খান এতে বিশ্বাস করেননি এবং প্রতিবার স্ত্রীর আধুনিক চিকিৎসা করিয়েছেন।
অন্যদিকে, জ্যোতিষী সুরেশ ব্যাস এটিকে গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি চন্দ্র ও রাহুর প্রভাবের সঙ্গে মঙ্গল-শনির মহাদশাকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন এবং আফসানাকে প্রবাল পরার পরামর্শ দিয়েছেন।
রহস্যময় ঘটনায় পরিবার ও গ্রামে ভয়ের পরিবেশ
আফসানা বানুর বারবার সাপের কামড়ের এই ঘটনা শুধু পরিবার নয়, পুরো গ্রামের জন্য এক রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপাতত তিনি সুস্থ আছেন, কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে কেন শুধু তাঁকেই সাপ নিশানা বানাচ্ছে।
পরিবার এখন সতর্কতা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং আফসানা নিজেও বাড়ির কাজ করার সময় ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই ঘটনা সামাজিক, চিকিৎসা এবং জ্যোতিষশাস্ত্রীয় স্তরে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।