সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবারে শেয়ার বাজারের শুরুটা ধীর গতিতে এবং পতন দিয়ে হয়েছে। প্রারম্ভিক कारोबारে সেনসেক্স ৭০ পয়েন্ট কমে ৮২,১৯০-এর স্তরে খোলে, যেখানে নিফটি ১৩ পয়েন্ট দুর্বল হয়ে ২৫,০৯৯-এ আসে। ব্যবসায়িক মহলে এই মন্দার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হচ্ছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা এবং কিছু প্রধান কোম্পানির ত্রৈমাসিক ফলাফলের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া।
মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ স্টকগুলির উপরও চাপ
বাজারের দুর্বল শুরুটা শুধুমাত্র প্রধান সূচকগুলিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ শেয়ারগুলিতেও সামান্য পতন দেখা গেছে। নিফটি মিডক্যাপ সূচকে ০.০৫ শতাংশ এবং নিফটি স্মলক্যাপ সূচকে ০.০২ শতাংশ পতন রেকর্ড করা হয়েছে। এর মানে হল ছোট এবং মাঝারি স্তরের কোম্পানিগুলির স্টকেও বিনিয়োগকারীরা সতর্কতা দেখাচ্ছেন।
ফলাফল প্রকাশের মরসুমের প্রভাব বাজারের গতিবিধির উপর
এই সপ্তাহে অনেক কোম্পানি তাদের প্রথম ত্রৈমাসিকের ফলাফল প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, উইপ্রো এবং এলটিআইমাইন্ডট্রির মতো কোম্পানিগুলির ফলাফলের দিকে বাজারের নজর ছিল। এই কোম্পানিগুলির পারফরম্যান্স থেকে বিনিয়োগকারীরা ইঙ্গিত পাচ্ছেন যে আগামী দিনে কোন সেক্টরগুলিতে গতি দেখা যেতে পারে। যদিও প্রাথমিক ইঙ্গিত মিশ্র ছিল, যার কারণে বাজার কোনও স্পষ্ট দিশা খুঁজে পায়নি।
বৈশ্বিক সংকেত থেকেও জোর মেলেনি
আমেরিকা ও ইউরোপের বাজার থেকেও ভারত কোনও বিশেষ শক্তি পায়নি। বিশ্ব বাজারে অস্থিরতা বজায় রয়েছে এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের পরবর্তী সুদের হার নীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক। তেলের দাম কম থাকা সত্ত্বেও টাকার অবস্থা এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কার্যকলাপ নিয়ে স্পষ্টতা না থাকায় দেশীয় বাজারের উপর প্রভাব পড়েছে।
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্ক মনোভাব
বাজারে দেখা গেছে যে বিনিয়োগকারীরা আপাতত আক্রমণাত্মক হওয়ার মুডে নেই। বাণিজ্য চুক্তি, বিশ্ব বাজারের সংকেত এবং কোম্পানিগুলির ফলাফলের মতো কারণগুলির কারণে বাজারে একটি দ্বিধা-দ্বন্দ্বের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা আপাতত অপেক্ষা করার কৌশল অবলম্বন করছেন এবং নতুন বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন।
ব্যাংকিং এবং আইটি সেক্টরের উপর ফোকাস
শুক্রবার ব্যাংকিং এবং আইটি সেক্টরের স্টকগুলির দিকে বিশেষ নজর ছিল। অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের ফলাফল এসেছে এবং তারপরে এর শেয়ারে উত্থান-পতন আশা করা হয়েছিল। একই সময়ে, আইটি সেক্টর থেকে উইপ্রো এবং এলটিআইমাইন্ডট্রির ফলাফল এসেছে, যার প্রভাব তাদের স্টকগুলিতে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। তবে এর ব্যাপক প্রভাব বাজারের গতিপথের উপর খুব বেশি পড়েনি।
বাজারে অস্থিরতা বজায় থাকার সম্ভাবনা
যদিও শুরুটা ধীর গতিতে হয়েছে, তবে বাজার বিশেষজ্ঞরা আগামী কিছু সেশনে আসা অর্থনৈতিক ডেটা এবং গ্লোবাল সংকেতের দিকে নজর রাখছেন। আগামী সপ্তাহে প্রধান কোম্পানিগুলির ফলাফল, বিদেশী বাজারের গতিবিধি এবং আমেরিকার সুদের হার নিয়ে সম্ভাবনাগুলি বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে।
সেক্টর অনুযায়ী পারফরম্যান্স
শুক্রবার সকালের সেক্টর অনুযায়ী পারফরম্যান্সের কথা বললে, এফএমসিজি এবং ফার্মা শেয়ারে সামান্য কেনাকাটা দেখা গেছে, যেখানে অটো, ব্যাংকিং এবং মেটাল শেয়ারে চাপ ছিল। জ্বালানি এবং অবকাঠামো সম্পর্কিত কোম্পানিগুলির শেয়ারও সামান্য পতনের সাথে লেনদেন করছিল।
অন্যান্য প্রধান শেয়ারের অবস্থা
কিছু প্রধান কোম্পানির শেয়ারের দিকে নজর রাখলে দেখা যায় রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচডিএফসি ব্যাংক, টিসিএস এবং ইনফোসিসের মতো ব্লুচিপ স্টকগুলিতে সামান্য পতন দেখা গেছে। একই সময়ে, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ এবং গ্রিন এনার্জি সম্পর্কিত কোম্পানিগুলিতে কিছু বিনিয়োগকারী আগ্রহ দেখিয়েছেন, তবে এর প্রভাব পুরো বাজারের উপর পড়েনি।
ব্যবসায়ীদের জন্য অনিশ্চয়তাপূর্ণ পরিবেশ
এই মুহূর্তে বাজারে ট্রেডিং করা ব্যবসায়ীদের বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। ফলাফলের মরসুম চলছে এবং প্রতিটি স্টকের গতিবিধি কোম্পানিগুলির ত্রৈমাসিক পারফরম্যান্সের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই কারণে ইন্ডেক্সের দিক বারবার পরিবর্তিত হতে দেখা যাচ্ছে।
আইপিও মার্কেটেও স্থবিরতা
আইপিও বাজারের কথা বললে, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে কোনও বড় তালিকাভুক্তি দেখা যায়নি। বিনিয়োগকারীরা এই সেক্টরেও আপাতত অপেক্ষা করছেন। কিছু আসন্ন আইপিও-র ঘোষণা অবশ্যই হয়েছে, তবে সেগুলিতে উৎসাহের অভাব স্পষ্ট।
বাজারের গতিবিধির উপর নজর থাকবে
শুক্রবারের শুরুটা যেমন ছিল, তাতে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে বিনিয়োগকারীরা আপাতত বড় কোনও ট্রেন্ডের জন্য অপেক্ষা করছেন। যতক্ষণ না কোনও বড় অর্থনৈতিক ইতিবাচক সংকেত আসছে, ততক্ষণ বাজারে এ ধরনের মন্দা এবং সতর্কতা দেখা যেতে পারে।