শেখ হাসিনার প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি: উত্তপ্ত বাংলাদেশের রাজনীতি

শেখ হাসিনার প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি: উত্তপ্ত বাংলাদেশের রাজনীতি

বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলে তার প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

Bangladesh Political Crisis: বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কট্টরপন্থী সংগঠন খেলাফত মজলিস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বড় বিতর্কিত মন্তব্য করেছে। খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য কথিত গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করেছেন এবং প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। ঢাকায় আয়োজিত একটি সমাবেশে জালাল উদ্দিন তীব্র উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন এবং বলেন যে, আওয়ামী লীগকে আর বাংলাদেশে শিকড় গাড়তে দেওয়া হবে না।

শেখ হাসিনার প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি

১৮ জুলাই ২০২৫, ঢাকা स्थित বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজের পর খেলাফত মজলিসের ঢাকা দক্ষিণ শাখা কর্তৃক একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। এই সময় জালাল উদ্দিন শেখ হাসিনা সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, হাসিনা সরকারের নিষ্ঠুরতা শিশুদেরও ছাড় দেয়নি। এখন জনগণ চূড়ান্ত পদক্ষেপ চায়। আওয়ামী লীগের দিন শেষ।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে তার দল প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ছিল এবং এখন সময় এসেছে এই কথিত 'স্বৈরাচারী শাসন' উৎখাত করার। জালাল উদ্দিন আরও দাবি করেন যে, বিএনপি, জামায়াত-এ-ইসলামী সহ সমস্ত বিরোধী শক্তি এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

গোপালগঞ্জ সহ কোনো এলাকাতেই আওয়ামী লীগকে রেহাই দেওয়া হবে না

মাওলানা জালাল উদ্দিন সমাবেশে বলেন, এখন থেকে আওয়ামী লীগকে গোপালগঞ্জ বা দেশের কোনো অংশেই শিকড় গাড়তে দেওয়া হবে না। তিনি স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করে বলেন যে, যদি সরকার বা প্রশাসনের কোনো ব্যক্তি তাদের এই অভিযান বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তাকেও রেহাই দেওয়া হবে না। এই ধরনের উস্কানিমূলক এবং উত্তেজক বক্তব্য বাংলাদেশের ইতিমধ্যেই সংবেদনশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

জালাল উদ্দিন তার বক্তব্যে শুধু সরকারের বিরুদ্ধেই নয়, বাংলাদেশে প্রস্তাবিত জাতিসংঘ (UN) অফিসের বিরুদ্ধেও তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ সহ্য করা হবে না। প্রয়োজন পড়লে আমরা জাতিসংঘ অফিসের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব।

তিনি ইউএন অফিসের মাধ্যমে বিদেশি হস্তক্ষেপকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে 'ষড়যন্ত্র' আখ্যা দেন এবং বলেন যে, বিদেশি শক্তি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।

বিরোধী দলগুলোকেও সতর্ক করা হয়েছে

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বিরোধী দল বিএনপি ও জামায়াত-এ-ইসলামীকেও সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, পারস্পরিক কলহ এবং ব্যক্তিগত অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মাধ্যমে যেন বর্তমান আন্দোলন দুর্বল না করা হয়। তিনি বলেন, যদি বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ না হয়, তবে ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো পুনরায় সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে। এখন সময় এসেছে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার।

বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আগে থেকেই মনে করছিল যে, দেশে কট্টরপন্থাকে উৎসাহিত করার পেছনে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। মাওলানা জালাল উদ্দিনের এই বক্তব্যের পর আবারও এই বিতর্ক শুরু হয়েছে যে, এই ধরনের সংগঠনগুলোকে মোহাম্মদ ইউনুস বা তার মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে কিনা?

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউনুসের নাম নিয়ে বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা গেছে, যদিও তিনি এই ধরনের কোনো ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু বিরোধী দল ও কট্টরপন্থী সংগঠনগুলোর ক্রমবর্ধমান কার্যকলাপের পেছনে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ

বাংলাদেশে নির্বাচন আসন্ন, এবং এই কারণে বিরোধী দলগুলো ও কট্টরপন্থী সংগঠনগুলো শেখ হাসিনা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। একদিকে সরকার দেশকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি করছে, অন্যদিকে বিরোধী দল ও কট্টরপন্থী সংগঠনগুলো সরকারকে স্বৈরাচারী ও গণতন্ত্রবিরোধী বলছে।

Leave a comment