২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে শেরঘাটি আসনের রাজনৈতিক লড়াই পুরো রাজ্যবাসীর নজর কেড়েছে। এই আসনটি গত দুটি নির্বাচনে জেডিইউ-এর দখলে ছিল, কিন্তু ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি এখানে জয়লাভ করে।
শেরঘাটি: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সমস্ত দল কোমর বেঁধে নেমেছে এবং জোর কদমে প্রচার চালাচ্ছে। প্রতিটি দলের আশা जनता তাদের সমর্থন করবে। ২০২০ সালের নির্বাচনে জাতীয় জনতা দলের (আরজেডি) মঞ্জু আগরওয়াল, জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) বিনোদ প্রসাদ যাদবকে ১৬,৬৯০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে শেরঘাটি আসনে জয়ী হয়েছিলেন।
এইবার বিহারের রাজনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। একদিকে, নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোরের নতুন দল জন সুরাজ ময়দানে নেমেছে, অন্যদিকে, আরজেডি থেকে বহিষ্কৃত তেজপ্রতাপ যাদবও নির্বাচনে তার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
শেরঘাটির রাজনৈতিক ইতিহাস
শেরঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রটি বিহারের ২৪৩টি নির্বাচনী কেন্দ্রের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন। গত তিনবারের নির্বাচনী ফলাফল এখানে বেশ আকর্ষণীয় ছিল।
২০২০ সালের নির্বাচন
- ২০২০ সালে আরজেডি প্রার্থী মঞ্জু আগরওয়াল, জেডিইউ-এর বিনোদ প্রসাদ যাদবকে ১৬,৬৯০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
- মঞ্জু আগরওয়াল (আরজেডি): ৬১,৮০৪ ভোট
- বিনোদ প্রসাদ যাদব (জেডিইউ): ৪৫,১১৪ ভোট
- মুকেশ কুমার যাদব (এলজেপি): ২৪,১০৭ ভোট
- NOTA: ৫,১৯৪ ভোট
এই জয় আরজেডিকে শেরঘাটিতে শক্তিশালী অবস্থান দিয়েছে এবং জেডিইউ-এর জন্য একটি শিক্ষা ছিল।
২০১৫ সালের নির্বাচন
- ২০১৫ সালে জেডিইউ-এর বিনোদ প্রসাদ যাদব, হাম (HAM)-এর মুকেশ কুমার যাদবকে ৪,৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন।
- বিনোদ প্রসাদ যাদব (জেডিইউ): ৪৪,৫৭৯ ভোট
- মুকেশ কুমার যাদব (হাম): ৩৯,৭৪৫ ভোট
- মঞ্জু আগরওয়াল (নির্দলীয়): ২৯,৬৭১ ভোট
এইভাবে, ২০১৫ সালে জেডিইউ-এর জয় এবং ২০২০ সালে আরজেডি-এর জয় প্রমাণ করে যে শেরঘাটির জনগণের অগ্রাধিকার সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে।
২০২৫ সালের নির্বাচন: নতুন সমীকরণ এবং রাজনৈতিক লড়াই
২০২৫ সালের নির্বাচনে শেরঘাটি আসনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরজেডি এই আসন ধরে রাখার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে জেডিইউ পুনরায় ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এইবার নির্বাচনে কিছু নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ সমীকরণ যুক্ত হয়েছে:
- নতুন দল জন সুরাজ-এর প্রবেশ: বিশিষ্ট নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোরের নতুন দল জন সুরাজ ময়দানে নেমেছে। এটি আসন এবং রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে।
- তেজপ্রতাপ যাদবের অংশগ্রহণ: আরজেডি থেকে বহিষ্কৃত তেজপ্রতাপ যাদবও শেরঘাটি বা তার আশেপাশের অঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় আছেন। তাঁর অংশগ্রহণে ভোট বিভাজন এবং জটিলতা বাড়তে পারে।
- জেডিইউ-এর ফিরে আসার চেষ্টা: জেডিইউ ২০১০ এবং ২০১৫ সালে টানা জয়লাভ করেছিল, কিন্তু ২০২০ সালে তাদের হার স্বীকার করতে হয়েছিল। এইবার দলটি পূর্ণ শক্তি দিয়ে নির্বাচনে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শেরঘাটি বিধানসভা আসন কেবল একটি নির্বাচনী ক্ষেত্র নয়, বরং বিহারের রাজনীতিতে কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। আরজেডি এবং জেডিইউ উভয় দলই এই আসনটিকে তাদের রাজনৈতিক শক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে।