নেপালে সহিংসতার জেরে ভারত-নেপাল সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা, গালগলিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট সিল

নেপালে সহিংসতার জেরে ভারত-নেপাল সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা, গালগলিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট সিল

নেপালে সহিংসতা ও আন্দোলনের কারণে ভারত-নেপাল সীমান্ত উচ্চ সতর্কতায়। গালগলিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট সিল, ভারতীয় নাগরিকদের নেপাল ভ্রমণ স্থগিত করার আবেদন। সীমান্ত চৌকিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত।

ভারত-নেপাল সীমান্ত: নেপালে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে ভারত-নেপাল সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কিশনগঞ্জ জেলা সংলগ্ন সীমান্ত চৌকিগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে এবং গালগলিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট সিল করে দেওয়া হয়েছে। কোনো অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে ভারতীয় নাগরিকদের নেপাল ভ্রমণ স্থগিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নেপালে ক্রমাগত সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ছে, যার ফলে সীমান্ত অঞ্চলে ভারতীয় প্রশাসন সতর্ক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

গালগলিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট সিল করা হয়েছে

নিরাপত্তার কারণে গালগলিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট সম্পূর্ণরূপে সিল করে দেওয়া হয়েছে। এখন এই পয়েন্টের মাধ্যমে কোনো ভারতীয় নাগরিক নেপাল যেতে পারবে না, যতক্ষণ না কর্তৃপক্ষ অন্য কোনো নির্দেশ জারি করে। সীমান্ত চৌকিগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং প্রতিটি কার্যকলাপের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে যে এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া হয়েছে। নেপালে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সমস্ত সীমান্ত চলাচল সীমিত করা হবে।

সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে

গত কয়েক দিনে নেপালে পরিস্থিতির অবনতির কারণে ভারতীয় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কিশনগঞ্জ জেলার সীমান্ত চৌকিগুলিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) টহল বাড়িয়েছে এবং প্রতিটি চলাচল পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে যে সীমান্ত অঞ্চল সম্পূর্ণ নিরাপদ, তবে নেপালের সহিংসতার প্রভাব যাতে সীমান্ত অতিক্রম না করে তার জন্য সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। প্রশাসন আরও স্পষ্ট করেছে যে কোনো পরিস্থিতিই নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না।

বিদেশ মন্ত্রকের পরামর্শ

ভারত সরকার নেপালে চলমান সহিংসতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটি পরামর্শ জারি করেছে। ভারতীয় নাগরিকদের আপাতত নেপাল ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে।

যারা ইতিমধ্যেই নেপালে রয়েছেন, তাদের বাড়ি থেকে বের না হওয়ার, স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশাবলী অনুসরণ করার এবং ভারতীয় দূতাবাস, কাঠমান্ডুর নিরাপত্তা পরামর্শ মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, বিদেশ মন্ত্রক নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিস্তারিত তথ্যও শেয়ার করেছে যাতে নাগরিকরা নিরাপদে থাকেন।

সীমান্ত বন্ধের ফলে স্থানীয় বাজারগুলির উপর প্রভাব

নেপালে সহিংসতা এবং সীমান্ত বন্ধের কারণে ভারতীয় সীমান্তের নিকটবর্তী বাজারগুলিতেও প্রভাব পড়েছে। কিশনগঞ্জ জেলার সীমান্ত বাজার যেমন গালগলিয়া, ঠাকুরগঞ্জ, কদোগাঁও, পৌআখালি, কদ্দুভিত্ত এবং দিঘলব্যাঙ্কে নেপালী নাগরিকদের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

এর ফলে স্থানীয় বাজারগুলির প্রাণবন্ততা কমে গেছে এবং ছোট দোকানদারদের ব্যবসা প্রভাবিত হয়েছে। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং নাগরিকরা কোনো বড় ক্ষতির সম্মুখীন না হন।

নাগরিক ও যাত্রীদের জন্য প্রশাসনের আবেদন

এসএসবি এবং স্থানীয় প্রশাসন ভারতীয় নাগরিকদের ধৈর্য ধরে থাকার আবেদন জানিয়েছে। তারা বলেছে যে নেপালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নেপাল ভ্রমণ এড়িয়ে চলাই নিরাপদ হবে। কর্মকর্তারা আরও বলেছেন যে সীমান্ত অঞ্চল সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে পরিস্থিতির উপর কঠোর নজর রাখা হচ্ছে। নাগরিকদের কোনো গুজবে বিশ্বাস না করে শুধুমাত্র সরকারি তথ্যের উপর নির্ভর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নেপালে সহিংসতার কারণ

নেপালে পরিস্থিতি তখন খারাপ হয় যখন বিভিন্ন গোষ্ঠী সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিধিনিষেধ এবং দুর্নীতির অভিযোগের কারণে তরুণ বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারী এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং অনেক জায়গায় আগুন লাগা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেছে। এর ফলে নাগরিকদের চলাচল কমে গেছে এবং স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে।

Leave a comment