এসএসসি ফেজ ১৩: ত্রুটিপূর্ণ পরীক্ষা নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, #SSCmismanagement ট্রেন্ডিং

এসএসসি ফেজ ১৩: ত্রুটিপূর্ণ পরীক্ষা নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, #SSCmismanagement ট্রেন্ডিং

এসএসসি ফেজ ১৩ পরীক্ষায় প্রযুক্তিগত সমস্যা, কেন্দ্রের দূরত্ব এবং পেপার বাতিল নিয়ে সারাদেশের ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসেছে। #SSCmismanagement সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং।

SSC Phase 13 Protest: স্টাফ সিলেকশন কমিশন (SSC)-এর ফেজ ১৩ পরীক্ষা নিয়ে দেশজুড়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় #SSCmismanagement হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ক্রমাগত প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। পাটনা থেকে দিল্লি পর্যন্ত ছাত্ররা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে এবং একটি সুষ্ঠু নিয়োগ প্রক্রিয়ার দাবি জানাচ্ছে।

এসএসসি ফেজ ১৩ পরীক্ষা কী?

SSC Selection Post Phase 13 হল একটি কেন্দ্রীয় সরকারের ডিরেক্ট নিয়োগ পরীক্ষা। এর মাধ্যমে ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক, বিভাগ এবং সংস্থায় গ্রুপ C এবং গ্রুপ D পদে প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষা মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতক স্তরের যোগ্যতার ভিত্তিতে হয় এবং এতে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, ক্লার্ক, টেকনিক্যাল অপারেটর, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের মতো পদ অন্তর্ভুক্ত থাকে। পরীক্ষায় ১০০টি মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকে যার জন্য প্রার্থীদের ৬০ মিনিট সময় দেওয়া হয়।

পরীক্ষায় কী কী ত্রুটি হয়েছে?

২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত SSC Phase 13 পরীক্ষায় বেশ কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা গেছে। অনেক পরীক্ষা কেন্দ্রে কম্পিউটার সিস্টেম হ্যাং হয়ে যায়, যার ফলে পরীক্ষার্থীদের সময় এবং মানসিক শক্তি দুটোই নষ্ট হয়েছে। কিছু জায়গায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই সিস্টেম ফেল করে, আবার কিছু কেন্দ্রে পরীক্ষা মাঝপথে বাতিল করা হয়।

ছাত্রদের অভিযোগ, তাদের পরীক্ষার কেন্দ্র এত দূরে দেওয়া হয়েছে যে এক-দুদিন আগে যাত্রা করতে হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর জানতে পারা যায় যে পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

কোথায় কোথায় পরীক্ষা বাতিল হয়েছে?

গাজিয়াবাদ, হুবলি, লখনউ, ভোপাল সহ অনেক শহর থেকে অভিযোগ এসেছে। দিল্লির পবন গঙ্গা এডুকেশনাল সেন্টার ২-এ ২৪ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। হুবলিতেও ২৪ জুলাই সকালের শিফটের পরীক্ষা প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বাতিল করতে হয়। এরপর এসএসসি ঘোষণা করে যে এই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা ২৮ জুলাই থেকে আবার নেওয়া হবে।

পরীক্ষার্থীরা কী বলেছেন?

দিল্লিতে বিক্ষোভ করা ছাত্র রমন বলেন, "ইনভিজিলেটররা পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন, যেখানে ছাত্রদের মোবাইল আনা নিষিদ্ধ।" তিনি আরও বলেন যে এই পরীক্ষা লেভেল ৬ এবং লেভেল ৭-এর পদের জন্য হয়, যা গ্রেড বি স্তরের। এমন পরিস্থিতিতে এই ধরনের গাফিলতি মেনে নেওয়া যায় না।

অন্য এক ছাত্র শেখর জানান, পরীক্ষার সময় তার মাউস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল, যার কারণে তিনি ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারেননি। তিনি বলেন যে এটি তার জীবনের পরীক্ষা এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে তার কেরিয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে তার পছন্দের শহরগুলিকে উপেক্ষা করে তাকে দেরাদুনের মতো দূরবর্তী কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন

ছাত্ররা আরও জানিয়েছে যে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। অনেক জায়গায় স্টাফদের আচরণ যথাযথ ছিল না এবং কিছু শিক্ষক পরীক্ষার সময় ফোনে কথা বলছিলেন। এই সমস্ত বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের পরীক্ষা পদ্ধতির উপর গুরুতর প্রশ্ন তোলে।

শিক্ষকরাও প্রতিবাদ জানিয়েছেন

দিল্লির যন্তর-মন্তরে কিছু শিক্ষকও এই বিক্ষোভে ছাত্রদের সমর্থন করে বিক্ষোভ করেছেন। যদিও পুলিশ তাদের আটক করেছে। তা সত্ত্বেও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়টি আরও জোরালো হয় এবং #SSCmismanagement টপ ট্রেন্ডে চলে আসে।

সরকার ও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

ছাত্রদের অভিযোগ, এসএসসি এবং সরকার উভয়ই ছাত্রদের অভিযোগকে উপেক্ষা করছে। নতুন সেন্ট্রালাইজড সিস্টেম চালু করা হয়েছে, কিন্তু এর বাস্তবায়নে অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। আগে টিসিএস-এর মতো বড় কোম্পানি পরীক্ষা নিত, কিন্তু এখন সিস্টেম পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রযুক্তিগত সমস্যাও বেড়েছে।

ছাত্রদের দাবি কী?

ছাত্রদের প্রধান দাবি হল, এসএসসি ফেজ ১৩-এর পরীক্ষা যেন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে নেওয়া হয়। যে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ত্রুটি হয়েছে, তার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রদের পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যেন এমন কোনো প্রযুক্তিগত গাফিলতি না হয়, তার নিশ্চয়তা দেওয়া হোক।

Leave a comment