গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ২০,০০০ সেনা পাঠাচ্ছে পাকিস্তান: আমেরিকার অনুরোধে ঐতিহাসিক নীতি পরিবর্তন

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ২০,০০০ সেনা পাঠাচ্ছে পাকিস্তান: আমেরিকার অনুরোধে ঐতিহাসিক নীতি পরিবর্তন

পাকিস্তান গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমেরিকা কমপক্ষে ২০,০০০ সৈন্য পাঠানোর অনুরোধ করেছে। এই সৈন্যরা হামাস যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে আনবে এবং তাদের অস্ত্রাগার নিষ্ক্রিয় করবে।

বিশ্ব সংবাদ: পাকিস্তান এখন একটি চমকপ্রদ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তান গাজা উপত্যকায় তার সৈন্য মোতায়েন করার কথা ভাবছে। আমেরিকান প্রশাসন পাকিস্তানকে কমপক্ষে ২০,০০০ সৈন্য পাঠানোর অনুরোধ করেছে। এই সৈন্যদের হামাস যোদ্ধাদের অস্ত্র কেড়ে নেওয়া এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। এই সেই পাকিস্তান যা দশক ধরে হামাসকে সমর্থন করেছে এবং যার অনেক নেতার সাথে গভীর সম্পর্ক ছিল, কিন্তু এখন আমেরিকা ও ইসরায়েলের চাপে পাকিস্তান হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত বলে জানা যাচ্ছে।

মিশর সফরের সময় তৈরি করা পরিকল্পনা

সিএনএন এবং নিউজ১৮ এর প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্তের রূপরেখা এই মাসের শুরুতে মিশরে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকের সময় নির্ধারিত হয়েছিল। জানা গেছে যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনীর মিশরে সিআইএ এবং মোসাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে পাকিস্তানি সৈন্যরা গাজায় হামাসের অস্ত্রাগার নিষ্ক্রিয় করবে এবং এর যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে আনবে।

পাকিস্তানের পরিবর্তিত নীতি কেন আলোচনার বিষয়

পাকিস্তানের এই নীতি হঠাৎ করে পরিবর্তন হতে দেখা যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগেই পাকিস্তানে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি নিয়ে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছিল, যাতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত ইসরায়েলকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না এবং ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

তাহলে এমন কী ঘটল যে পাকিস্তান এখন আমেরিকা ও ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত হল? প্রতিবেদন অনুসারে, এটিকে ‘মানবিক পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন’-এর নামে উপস্থাপন করা হচ্ছে, কিন্তু গোয়েন্দা সূত্র বলছে যে আসল উদ্দেশ্য হল গাজায় একটি নিয়ন্ত্রিত পাকিস্তানি সামরিক উপস্থিতি স্থাপন করা।

হামাসকে দুর্বল করতে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

সূত্র অনুসারে, পাকিস্তানের দায়িত্ব কেবল একটি বাফার ফোর্স হওয়া নয়। তাকে হামাসের সক্রিয় অঞ্চলগুলিতে দুর্বল করতে হবে এবং আমেরিকা-ইসরায়েলের নির্দেশ অনুসারে তার প্রভাব শেষ করতে হবে। এই মিশনে পাকিস্তানের সাথে ইন্দোনেশিয়া এবং আজারবাইজানকেও সীমিত শান্তি-প্রতিষ্ঠার ভূমিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

গাজায় "বাফার ফোর্স" হিসেবে পাকিস্তানি সেনা

প্রতিবেদন অনুসারে, গাজায় পাকিস্তানি সেনারা ইসরায়েল এবং অন্যান্য উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি বাফার ফোর্সের ভূমিকা পালন করবে। তাদের কাজ হবে নিরাপত্তা প্রদান করা, গাজার পুনর্গঠনে সাহায্য করা এবং প্রশাসনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করা। এই পদক্ষেপটি পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি এবং গাজার স্থিতিশীলতা উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

আমেরিকা এবং ইসরায়েল এই সহযোগিতার বিনিময়ে পাকিস্তানকে একটি বড় অর্থনৈতিক প্যাকেজের প্রস্তাব দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাংকের ঋণে ছাড়, উপসাগরীয় দেশগুলির মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা এবং পরিশোধে শিথিলতা। গোয়েন্দা সূত্র দাবি করছে যে পাকিস্তান কূটনৈতিক সুবিধাও পাবে, যা 'নীরবে পুরস্কৃত' করা হবে। 

Leave a comment