সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য: উদ্বেগ প্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য: উদ্বেগ প্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের

সুপ্রিম কোর্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের (হেইট স্পিচ) বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আদালত বলেছে যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা জরুরি, তবে এর অপব্যবহার করা উচিত নয়।

নয়াদিল্লি: সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষমূলক মন্তব্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আদালত বলেছে যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে না। আদালত কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে যে, এই ধরনের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, তবে বাকস্বাধীনতাকে যেন দমন করা না হয়।

সুপ্রিম কোর্টের গভীর উদ্বেগ

সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সোমবার একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। আদালত বলেছে যে, আজকাল মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে যা কিছু বলা হচ্ছে এবং প্রচার করা হচ্ছে, তা গণতন্ত্র এবং সমাজের উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক।

বিচারপতি বি ভি নাগারত্না এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ ফ্রান্সিস বিশ্বনাথনের বেঞ্চ একটি মামলার শুনানির সময় এই মন্তব্য করেন। মামলাটি সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলীর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল, যা ওয়াজাহাত নামক এক ব্যক্তি দায়ের করেছিলেন।

বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের উপর নিয়ন্ত্রণ জরুরি

আদালত স্পষ্টভাবে বলেছে যে, বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের উপর নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এই ধরনের বক্তব্য সমাজে কেবল বিষ ছড়ানোর কাজ করে এবং এর ফলে কেবল মানুষের চিন্তাভাবনার উপর প্রভাব পড়ে না, বরং সামাজিক সম্প্রীতিও হুমকির মুখে পড়ে।

বেঞ্চ বলেছে যে, বাকস্বাধীনতা প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার, তবে এর অর্থ এই নয় যে এটি ঘৃণা ছড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হবে।

'সেন্সরশিপ নয়, তবে সংযম প্রয়োজন'

সুপ্রিম কোর্ট সেন্সরশিপ আরোপের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছে যে, এই পথ সঠিক নয়। আদালত বলেছে যে, এমন কোনো ব্যবস্থা বাকস্বাধীনতার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এর পরিবর্তে, প্রত্যেক নাগরিককে আত্মসংযম পালন করতে হবে এবং বুঝতে হবে যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বও জড়িত থাকে।

আদালত বলেছে, "মানুষকে বুঝতে হবে যে, বাকস্বাধীনতা একটি মূল্যবান অধিকার এবং এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।" আদালত আরও বলেছে যে, এই দায়িত্ব কেবল সরকারের নয়, সাধারণ নাগরিকদেরও যে তারা ঘৃণা সৃষ্টিকারী বিষয়গুলিকে প্রচার করবে না।

রাজ্যের ভূমিকা সীমিত হওয়া উচিত

আদালত আরও বলেছে যে, যদি রাজ্যকে বারবার হস্তক্ষেপ করতে হয়, তবে এই পরিস্থিতি ভালো নয়। এর ফলে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর পরোক্ষভাবে হুমকি সৃষ্টি হতে পারে। তাই, এটা জরুরি যে, মানুষ নিজে সচেতন হোক এবং কোনো আপত্তিকর বিষয়বস্তুকে না তো শেয়ার করবে, আর না তার সমর্থন করবে।

কেন্দ্র এবং রাজ্যকে নির্দেশ

আদালত এই পুরো বিষয়ে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলিকে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থাগুলিকে এই ধরনের কার্যকলাপের উপর নজর রাখতে হবে এবং সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

Leave a comment