২০% ইথানল মিশ্রণ নিয়ে তোলপাড়, জনস্বার্থ মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট

২০% ইথানল মিশ্রণ নিয়ে তোলপাড়, জনস্বার্থ মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট

কেন্দ্রের ইথানল মিশ্রিত পেট্রোল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ঘিরে উঠল নতুন আইনি ঝড়। E20 পেট্রোল চালুর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী অক্ষয় মালহোত্রা। আদালত জানিয়েছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানি হবে। তিন বিচারপতির বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি বি.আর. গাভাই থাকছেন।

কেন্দ্রের পরিকল্পনা নিয়ে আপত্তির সুর

আইনজীবীর অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ সাধারণ মোটরচালক হঠাৎ করেই সমস্যার মুখে পড়েছেন। তাঁদের গাড়ি এই নতুন ধরনের পেট্রোল চালানোর জন্য প্রস্তুত নয়। অথচ পাম্পে গিয়ে বিকল্প ছাড়া তাঁদের বাধ্য হয়ে E20 নিতে হচ্ছে। ফলে অস্বস্তি ছড়িয়েছে সারাদেশে।

পাম্পে ইথানল-মুক্ত পেট্রোলের দাবি

আবেদনে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, প্রত্যেকটি পেট্রোল পাম্পে যেন ইথানল-মুক্ত বা E0 পেট্রোলও মজুত রাখা হয়। যাতে পুরনো বা সংবেদনশীল গাড়ির মালিকেরা নিরাপদ জ্বালানি ব্যবহার করতে পারেন। এ বিষয়ে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে আদালতের কাছে।

গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা

বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ বলছেন, সব গাড়ি এমনভাবে তৈরি নয় যে তারা ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রিত পেট্রোল সহজে ব্যবহার করতে পারবে। এতে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশে ক্ষয়, জং ধরার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে মাইলেজ কমে যাওয়ারও অভিযোগ উঠছে। ফলে সাধারণ চালকদের মধ্যে বাড়ছে দুশ্চিন্তা।

কেন চালু হল E20 পেট্রোল?

সরকারি সূত্রের দাবি, বিদেশ থেকে আমদানি করা তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতেই এই পদক্ষেপ। একই সঙ্গে গ্রিনহাউস গ্যাস কমানো এবং দেশীয় কৃষিজ উৎপাদিত আখ ও ভুট্টার ব্যবহার বাড়ানো এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। তাই পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কৃষকদের উপকার হবে বলেই কেন্দ্র আশাবাদী।

আদালতের রায়ে নজর দেশজুড়ে

এখন প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্ট কী নির্দেশ দেয়। যদি আদালত সরকারকে ইথানল-মুক্ত পেট্রোল সরবরাহে বাধ্য করে, তবে গাড়িচালকদের স্বস্তি মিলবে। কিন্তু যদি কেবলমাত্র কেন্দ্রের পরিকল্পনাকেই সমর্থন করা হয়, তবে সাধারণ চালকদের সমস্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জনগণের উদ্বেগ বাড়ছে প্রতিদিন

এদিকে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত। কেউ বলছেন, নতুন প্রজন্মের গাড়িতে হয়তো সমস্যা হবে না, আবার কেউ আশঙ্কা করছেন পুরনো বাইক ও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অনেকেই পাম্পে গিয়ে কর্মীদের প্রশ্ন করছেন—‘E0 পেট্রোল আছে কি?’ অথচ বেশিরভাগ জায়গাতেই মিলছে না সেই বিকল্প জ্বালানি।

পরিবেশ বনাম যন্ত্রপাতি—দ্বন্দ্ব তীব্র

পরিবেশ রক্ষার যুক্তি সামনে এনে সরকার E20 চালু করেছে। কিন্তু গাড়ির যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকেই ভুগতে হবে। আদালত কি এই দুই দিকের মধ্যে ভারসাম্য আনতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

১ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে সব দৃষ্টি

সবশেষে নজর থাকছে ১ সেপ্টেম্বরের শুনানির দিকে। জনস্বার্থ মামলার রায় নির্ভর করবে দেশের কোটি কোটি গাড়িচালকের ভবিষ্যৎ যাত্রার ওপর। আপাতত অনিশ্চয়তার মধ্যে গাড়ি চালাচ্ছেন সকলে।

Leave a comment