ওয়াকফ আইন নিয়ে তেজস্বীর মন্তব্যে বিজেপির তীব্র প্রতিক্রিয়া

ওয়াকফ আইন নিয়ে তেজস্বীর মন্তব্যে বিজেপির তীব্র প্রতিক্রিয়া

তেজস্বী যাদবের ওয়াকফ আইন নিয়ে মন্তব্যের পর বিজেপি-র কড়া প্রতিক্রিয়া। গৌরব ভাটিয়া তেজস্বীকে ‘মৌলানা’ বলে অভিহিত করে বলেন, শরিয়া-র কথা যারা বলছেন, তারা পাকিস্তানে চলে যান।

বিহার সংবাদ: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক বাগ্‌যুদ্ধ তুঙ্গে উঠেছে। রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর নেতা তেজস্বী যাদব ওয়াকফ সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে পাটনায় এক সমাবেশে যে মন্তব্য করেছেন, তার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বিজেপি তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে দেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করার অভিযোগ এনেছে এবং তাঁকে ‘মৌলানা’ বলে কটাক্ষ করেছে।

আসলে ঘটনাটি কী

তেজস্বী যাদব পাটনার গান্ধী ময়দানে ‘ওয়াকফ বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও’ নামে আয়োজিত এক সমাবেশে কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা করে এটিকে সংবিধান বিরোধী বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যদি বিহারে বিরোধী জোটের সরকার গঠিত হয়, তবে এই আইন রাজ্যে কার্যকর হতে দেওয়া হবে না এবং এটিকে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হবে। এই মন্তব্যের পরেই বিজেপির তরফে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসে।

গৌরব ভাটিয়ার প্রতিক্রিয়া

বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তেজস্বী যাদবকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, এই দেশ সংবিধান দ্বারা পরিচালিত হয়, শরিয়া দ্বারা নয়। গৌরব ভাটিয়া বলেন, “মৌলানা তেজস্বী যাদব সংবিধান বোঝেন না। তিনি শরিয়া আইন প্রয়োগ করতে চান। তাঁর উদ্দেশ্য হল দেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানো। কিন্তু ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র এবং তাই থাকবে।”

‘শরিয়া-র সমর্থকরা পাকিস্তানে যান’ – বিজেপি

গৌরব ভাটিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমর্থন করে বলেন, “বিহারে নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই আসবেন, কিন্তু যারা শরিয়ার কথা বলেন, তাঁদের পাকিস্তান চলে যাওয়া উচিত। তেজস্বী যাদব যে মঞ্চে ছিলেন, সেখানে প্রকাশ্যে শরিয়া আইনের পক্ষে কথা বলা হচ্ছিল। এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।”

তেজস্বীকে ‘নবম শ্রেণি ফেল’ বললেন

বিজেপি মুখপাত্র তেজস্বী যাদবের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “নবম শ্রেণি ফেল প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী ভারতের সংসদ কর্তৃক পাস হওয়া আইনকে ডাস্টবিনে ফেলার কথা বলছেন। এটা পরিষ্কারভাবে প্রমাণ করে যে তেজস্বী যাদব সংবিধানকে সম্মান করেন না। তাঁর চিন্তাভাবনায় গণতন্ত্রের পরিবর্তে ধর্মীয় আইনের প্রতিফলন দেখা যায়।”

লাलू-তেজস্বীর বিরুদ্ধে ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’র অভিযোগ

ভাটিয়া লালু প্রসাদ যাদব এবং তেজস্বী যাদব উভয়ের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করে বলেন যে আরজেডি-র রাজনীতি সবসময় হিন্দু-মুসলমানের নামে ভোট বিভাজনের চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, “আমাদের জন্য বাবা সাহেব আম্বেদকর এবং তাঁর সংবিধান পূজনীয়, কিন্তু আরজেডি-র রাজনীতি ধর্মভিত্তিক বিভাজনের ওপর নির্ভরশীল। তাঁরা মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন।”

তেজস্বী যাদব কী বলেছিলেন

তেজস্বী যাদব রবিবার পাটনার গান্ধী ময়দানে আয়োজিত এক সমাবেশে বলেছিলেন যে, যদি বিহারে মহাজোটের সরকার গঠিত হয়, তবে কেন্দ্রীয় সরকারের আনা ওয়াকফ আইন রাজ্যে কার্যকর করা হবে না। তিনি আরও বলেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার মুসলমানদের সম্পত্তি দখল করতে চাইছে এবং সংবিধানকে দুর্বল করছে।

Leave a comment