বেপরোয়া টোটোতে রেলগেট ভাঙচুর
হাসনাবাদ স্টেশনের কাছে শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখায় ঘটল এক চাঞ্চল্যকর দুর্ঘটনা। শুক্রবার বিকেলে ব্যস্ত সময়ে দ্রুতগতির একটি টোটো আচমকাই রেলগেটে ধাক্কা মারে। মুহূর্তে গেট ভেঙে চুরমার হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যানবাহন আটকে গিয়ে তীব্র ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। ঘটনার জেরে এলাকায় ছড়ায় উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা।
ট্রেন ঢোকার মুখেই ভয়াবহ ধাক্কা
ঘটনার সময় শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে আসা হাসনাবাদগামী একটি ট্রেন স্টেশনে ঢোকার অপেক্ষায় ছিল। নিয়ম মেনে রেলগেট নামানো হচ্ছিল, সেই সময় আচমকাই দ্রুতগতিতে ছুটে আসে একটি টোটো। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি সরাসরি গেটে ধাক্কা মারে। প্রচণ্ড আঘাতে রেলগেট ভেঙে মাঝরাস্তায় লুটিয়ে পড়ে যায়। সামনের দিকের ট্রেন যাত্রা হত হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়।
মুহূর্তে অচল পরিবেশ, চরম যানজট
ভাঙা রেলগেটের কারণে মুহূর্তের মধ্যেই রাস্তা জুড়ে তৈরি হয় অচলাবস্থা। বাস, বাইক, সাইকেল সবকিছু দাঁড়িয়ে পড়ে। অফিস থেকে ফেরা ও স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েন। ঘরমুখো যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশ ও প্রশাসনকে।
আতঙ্ক ছড়াল যাত্রীদের মধ্যে
রেলগেট ভাঙার শব্দে মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। গেট নামার সময় এভাবে দুর্ঘটনা ঘটায় অনেক যাত্রীর মধ্যে প্রবল ভয় তৈরি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সামান্য এদিক-ওদিক হলেই বড়সড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। সৌভাগ্যবশত কোনও প্রাণহানি হয়নি। তবে আতঙ্ক এখনও কাটেনি স্থানীয়দের মন থেকে।
দ্রুত নামল রেলকর্মী ও আরপিএফ
ঘটনার খবর পেয়ে রেলকর্মী ও আরপিএফ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। সঙ্গে সঙ্গেই ওই অংশে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ম্যানুয়ালি গেট সরিয়ে সাময়িকভাবে রাস্তা খোলা হয়। ফলে ধীরে ধীরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। পাশাপাশি গেট মেরামতির কাজ শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ।
ক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্থানীয়রা
ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা টোটোচালকের বেপরোয়া দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে সরব হন। তাঁদের অভিযোগ, রেলগেটের সামনে বারবার নিয়ম ভেঙে টোটো-সহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। প্রশাসন ও রেলের নজরদারি না থাকায় এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। অনেকে দাবি করেন, বারবার সতর্ক করার পরও টোটোচালকেরা বেপরোয়া আচরণ চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রাণঘাতী বিপদের আশঙ্কা
রেলকর্মীরা ভাঙা গেট সরিয়ে মেরামতির কাজ শুরু করার পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। তবে আতঙ্ক কাটছে না সাধারণ মানুষের মন থেকে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে নিয়ম ভাঙতে থাকলে কোনও দিন বড়সড় দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে। অনেকেই বলেন, “আজ অল্পের জন্যই বড় বিপদ থেকে বেঁচে গেলাম।”
কড়া নজরদারির দাবি
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা রেল ও প্রশাসনের কাছে কড়া নজরদারির দাবি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, টোটোর সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে যারা বেপরোয়া গতিতে চালায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। রেলগেটের নিরাপত্তা বাড়াতে না পারলে যেকোনও দিন ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।