ট্রাম্পের 'জিনিয়াস অ্যাক্ট': ডলারের আধিপত্য রক্ষায় ব্রিকসকে কড়া হুমকি

ট্রাম্পের 'জিনিয়াস অ্যাক্ট': ডলারের আধিপত্য রক্ষায় ব্রিকসকে কড়া হুমকি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে 'গাইডিং অ্যান্ড এস্ট্যাবলিশিং ন্যাশনাল ইনোভেশন ফর ইউএস স্টেবলকয়েন্স অ্যাক্ট' অর্থাৎ 'জিনিয়াস অ্যাক্ট' (GENIUS Act)-এ স্বাক্ষর করে এটিকে আইনের মর্যাদা দিয়েছেন।

ওয়াশিংটন: আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ব্রিকস দেশগুলিকে (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) কড়া ভাষায় সতর্ক করে বলেছেন যে তারা যেন আমেরিকান ডলারের বিশ্বব্যাপী আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানানোর স্বপ্ন না দেখে। ট্রাম্প শুক্রবার ‘গাইডিং অ্যান্ড এস্ট্যাবলিশিং ন্যাশনাল ইনোভেশন ফর ইউএস স্টেবলকয়েন্স অ্যাক্ট’ (GENIUS Act)-এ স্বাক্ষর করে এটিকে আইনে পরিণত করেছেন। তিনি এটিকে ডিজিটাল মুদ্রার জগতে আমেরিকাকে বিশ্ব নেতৃত্ব দেওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ট্রাম্প মজার ছলে বলেন, ‘এই আইনের নাম জিনিয়াস (GENIUS) রাখা হয়েছে, কারণ আমি জিনিয়াস। এই আইনটি সত্যিই অসাধারণ।’ যদিও এর পেছনে তার উদ্দেশ্য স্পষ্ট - ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সিস্টেমে আমেরিকার অগ্রগতি বজায় রাখা এবং ডলারের বিশ্বব্যাপী রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করা।

ব্রিকসকে সরাসরি হুমকি: ডলারের সঙ্গে বিবাদে জড়ালে শীঘ্রই শেষ হবে জোট

GENIUS অ্যাক্টে স্বাক্ষর করার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস দেশগুলোর ওপর তীব্র কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘ব্রিকস নামের ছোট একটি গোষ্ঠী আছে, যা এখন দ্রুত দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এই দেশগুলো আমেরিকান ডলারের বিশ্ব শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি যে ব্রিকসের যে কোনও দেশের ওপর আমরা ১০% আমদানি শুল্ক (ট্যারিফ) লাগাব।’

ট্রাম্প দাবি করেন যে তার এই সতর্কবার্তার পর ব্রিকসের বৈঠকে পরের দিন কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘যদি ব্রিকস আবারও ডলারের শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করে, তবে তাদের জোট খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে।’ ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, ‘যদি আমেরিকা তার ডলারের বিশ্বব্যাপী রিজার্ভ কারেন্সির অবস্থান হারায়, তবে এটি কোনও বিশ্বযুদ্ধে হারার মতোই হবে। আমরা এমনটা কখনও হতে দেব না।’

GENIUS Act কী এবং এর উদ্দেশ্য?

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে GENIUS Act-এর মূল উদ্দেশ্য হল আমেরিকান ডলার ভিত্তিক স্টেবলকয়েন্স (Stablecoins)-এর জন্য একটি সুস্পষ্ট এবং সরল নিয়ন্ত্রক কাঠামো তৈরি করা। ট্রাম্প এই আইনটিকে ‘ইন্টারনেটের পর আর্থিক প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বড় বিপ্লব’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই আইনের মাধ্যমে আমেরিকা ডিজিটাল মুদ্রা এবং ক্রিপ্টোর জগতে সুপারপাওয়ার হয়ে উঠবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে আমেরিকা বিশ্বের ক্রিপ্টো ক্যাপিটাল হবে এবং আজ আমরা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করে দেখালাম।’ ট্রাম্প আরও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে আমেরিকাতে কখনও সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (CBDC)-কে অনুমতি দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘CBDC থেকে সাধারণ নাগরিকদের গোপনীয়তার ওপর হুমকি তৈরি হয়, তাই আমেরিকা এর অংশ হবে না।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রিপ্টোকারেন্সি সংশ্লিষ্ট কমিউনিটির প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনাদের বছরের পর বছর ধরে উপহাস করা হয়েছে, কিন্তু আপনারা হার মানেননি। এই আইনটি আপনাদের পরিশ্রম এবং জেদের জয়।’ ট্রাম্পের মতে আমেরিকা এখন ডিজিটাল ডলারের সাথে বিশ্বকে দেখাবে যে আর্থিক উদ্ভাবনে তার ভূমিকা সবসময় শীর্ষস্থানে থাকবে।

Leave a comment