শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার, উজ্জয়িনী আবারও তার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গরিমা এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। বাবা মহাকালের ঐতিহ্যপূর্ণ শোভাযাত্রা এবার আরও বেশি জাঁকজমক ও শ্রদ্ধার সাথে অনুষ্ঠিত হলো। লক্ষ লক্ষ ভক্তের উপস্থিতি এবং পুরো শহরে ভক্তির পরিবেশ এই আয়োজনকে আরও বিশেষ করে তুলেছিল।
ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়
শোভাযাত্রার সময় উজ্জয়িনীর রাস্তাগুলোতে এমন এক আস্থার ঢেউ উঠেছিল যে পুরো শহর ভক্তিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। অনুমান করা হচ্ছে, এই পবিত্র অনুষ্ঠানে প্রায় ৫ লক্ষ ভক্ত অংশ নিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে আড়াই লক্ষেরও বেশি বাবা মহাকালের দর্শন করেছেন। এবারের শোভাযাত্রাটি বিশেষ ছিল কারণ প্রথমবারের মতো এর সরাসরি সম্প্রচার জনসম্পর্ক বিভাগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে করা হয়েছিল। এর ফলে দেশ-বিদেশের ভক্তরাও এই দিব্য অভিজ্ঞতার অংশ হতে পেরেছিলেন। পুরো পথে মন্ত্র পাঠ, ভজন-কীর্তন এবং ধ্বনিগুলি পরিবেশকে ভক্তিরসে রাঙিয়ে তুলেছিল।
মুখ্যমন্ত্রী দুবাই থেকে বাবা মহাকালকে প্রণাম জানালেন
মুখ্যমন্ত্রী ড. মোহন যাদব এবার দুবাই সফরে থাকার কারণে শোভাযাত্রায় সরাসরি অংশ নিতে পারেননি, তবে তিনি সেখান থেকেই রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাবা মহাকালকে প্রণাম জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যাদব সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন যে এই আয়োজন শুধু শ্রদ্ধার প্রতীক নয়, বরং উজ্জয়িনীর সাংস্কৃতিক পরিচয়কেও আরও শক্তিশালী করে। তিনি বিশ্বাস করেন যে এই ঐতিহ্য আগামী বছরগুলোতে আরও বেশি জাঁকজমকের সঙ্গে অব্যাহত থাকবে।
মন্ত্রীদের আস্থা প্রকাশ
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান যে বাবা মহাকালের শোভাযাত্রায় এবার 'ক্ষুদ্র মধ্যপ্রদেশ'-এর ঝলক দেখা গেছে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই শোভাযাত্রায় জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলি, যেমন মন্ডলা, দিন্দোরি, বালাঘাট, ধর, ঝাবুয়া এবং छिंदওয়াড়ার ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যার ফলে রাজ্যের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যও শোভাযাত্রার মাধ্যমে সামনে আনা যাবে।
তিনি আরও ঘোষণা করেছেন যে এখন থেকে প্রতি শ্রাবণ সোমবার রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা বাবা মহাকালের শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন এবং রাজ্যের সুখ-সমৃদ্ধির জন্য আশীর্বাদ গ্রহণ করবেন। এবারের শোভাযাত্রায় পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল, জলসম্পদ মন্ত্রী তুলসিরাম সিলাওয়াত এবং কৌশল বিকাশ ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) গৌতম তেটওয়াল সহ আরও অনেক মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
উজ্জয়িনীর ধর্মীয় পরিচয়ের আরও বিস্তার ঘটবে
বাবা মহাকালের এই শোভাযাত্রা কেবল একটি ধর্মীয় যাত্রা নয়, বরং উজ্জয়িনীর ঐতিহ্য, আস্থা ও সাংস্কৃতিক গরিমার প্রতীক। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই আয়োজন উজ্জয়িনীর পরিচিতিকে বিশ্বব্যাপী নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং এটি ধর্মীয় পর্যটনকেও উৎসাহিত করবে।
এই শোভাযাত্রা প্রতি বছর শ্রাবণ সোমবার অনুষ্ঠিত হয়, যখন বাবা মহাকাল তাঁর ভক্তদের খোঁজখবর নিতে নগর ভ্রমণে বের হন। এবারের শোভাযাত্রা শুধু ভক্তদের জন্য একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা ছিল না, বরং মধ্যপ্রদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং সরকারের অংশগ্রহণে এটি একটি ঐতিহাসিক আয়োজনে পরিণত হয়েছে।