উত্তর প্রদেশকে গ্রিন এনার্জি হাব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে রাজ্য সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল জাপান সফরে গেছে, যেখানে প্রতিনিধিরা গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন এবং শক্তি উদ্ভাবন নিয়ে বেশ কয়েকজন জাপানি শিল্পোদ্যোগীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সময়ে রাজ্যে সবুজ শক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রতিনিধিদল জানিয়েছে যে, সরকার রাজ্যকে শক্তি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করে তুলতে বদ্ধপরিকর এবং গ্রিন হাইড্রোজেন ও নবীকরণযোগ্য শক্তিকে এর প্রধান ভিত্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে। এর অধীনে পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে। জাপানি কোম্পানিগুলো উত্তর প্রদেশে গ্রিন হাইড্রোজেনের জন্য ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স’ স্থাপন করতে সম্মত হয়েছে, যা রাজ্যকে গ্রিন এনার্জি ক্ষেত্রে নতুন পরিচিতি দিতে পারে।
হাইড্রোজেন কার থেকে সৌরশক্তি পর্যন্ত আলোচনা
জাপান সফরের সময় প্রতিনিধিদল টয়োটার হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল কার ‘মিরাই’ পরিদর্শন করেছে, যা হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের সংমিশ্রণে শক্তি উৎপন্ন করে এবং নিঃসরণ হিসেবে শুধুমাত্র জল নির্গত করে। এই প্রযুক্তিকে উত্তর প্রদেশের শূন্য নিঃসরণ পরিবহন নীতির জন্য একটি আদর্শ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। গাড়িটির কার্যকারিতা এবং এর সুবিধাগুলো দেখে রাজ্যে এটি প্রয়োগ করার সম্ভাবনা নিয়েও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি গ্রিন হাইড্রোজেনের উৎপাদন এবং স্থিতিশীল শক্তি উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইউপিএনইডিএ-র অধিকর্তা বলেছেন যে, উত্তর প্রদেশে সৌর শক্তি, জলবিদ্যুৎ এবং বায়োমাসের মতো বিকল্প শক্তি উৎসগুলোর আরও ভালোভাবে ব্যবহার করে পরিচ্ছন্ন শক্তি উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে।
জাপানি প্ল্যান্টস-এর পরিদর্শন
প্রতিনিধিদল জাপানের ইয়ামানশি প্রদেশে বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক গ্রিন এনার্জি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে নেসার্ড (NESRAD) গ্রিন হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট, পাওয়ার-টু-গ্যাস প্রযুক্তি সম্পন্ন সান্টোরি হাকুশু ডিস্টিলারি এবং হাইড্রোজেন রিসার্চ সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠান ছিল। এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বমানের আধুনিক প্রযুক্তিগুলো বোঝা এবং সেগুলোকে উত্তর প্রদেশে প্রয়োগ করার সম্ভাবনা খুঁজে বের করা।
এই গবেষণামূলক ভ্রমণগুলো থেকে উত্তর প্রদেশ বিশ্বমানের পরিচ্ছন্ন শক্তি প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারার সুযোগ পেয়েছে, যা রাজ্যে সবুজ শক্তি ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী এবং আধুনিক পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হবে।
সবুজ শক্তির জন্য বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্বের প্রস্তুতি
প্রতিনিধিদল জাপানি শিল্পপতিদের সঙ্গে উত্তর প্রদেশে ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স’ স্থাপনের প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করেছে, যা সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন এবং স্থিতিশীল শক্তি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে আরও গতি দেবে। এই কেন্দ্র রাজ্যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে।
ইউপিএনইডিএ-র অধিকর্তা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, সরকার বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা আরও গভীর করতে আগ্রহী। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে উত্তর প্রদেশকে পরিচ্ছন্ন এবং স্থিতিশীল শক্তির ক্ষেত্রে অগ্রণী করে তোলার পথে বড় অবদান রাখবে।