ভারতে রাজনীতিবিদদের অবসর পরিকল্পনা সবসময় আলোচনার বিষয় থাকে। সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর অবসর জীবনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, এবং এবার উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন।
নয়াদিল্লি: দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় তাঁর অবসর নিয়ে প্রথমবার স্পষ্টভাবে কথা বলেছেন। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (JNU) একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি স্পষ্টভাবে বলেন যে, ঈশ্বরের কৃপা থাকলে তিনি আগস্ট 2027 সালে তাঁর পদ থেকে অবসর গ্রহণ করবেন। তাঁর এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
জগদীপ ধনখড় কেন অবসরের কথা বললেন?
JNU-তে দেওয়া তাঁর হালকা মেজাজের বক্তব্যে উপরাষ্ট্রপতি বলেন: ঈশ্বরের কৃপা থাকলে, আমি সঠিক সময়ে, আগস্ট 2027-এ অবসর নেব। উল্লেখযোগ্য যে ধনখড় 11 আগস্ট 2022 তারিখে ভারতের 14তম উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন এবং তাঁর পাঁচ বছরের মেয়াদ 10 আগস্ট 2027 তারিখে শেষ হবে। এইভাবে, তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি তাঁর সাংবিধানিক মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পদ থেকে অবসর নেবেন।
রাজনীতিতে উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়ের যাত্রা
জগদীপ ধনখড় একজন খ্যাতনামা আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তিনি রাজস্থান থেকে রাজনীতি শুরু করেন এবং পরে কেন্দ্রে মন্ত্রীও ছিলেন। 2019 সালে, তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল নিযুক্ত করা হয়, যেখানে তাঁর মেয়াদ অনেক বিতর্ক এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। 2022 সালে যখন এনডিএ (ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স) তাঁকে উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য প্রার্থী ঘোষণা করে, তখন এটি দেশজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। তিনি সেই নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে পরাজিত করে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
ভারতে রাজনীতিবিদদের অবসর নিয়ে সবসময় একটা অস্পষ্টতা রয়েছে। বেশিরভাগ নেতাই দীর্ঘকাল ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে, যখন কোনো শীর্ষ সাংবিধানিক পদে আসীন নেতা স্বয়ং অবসরের একটি সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করেন, তখন এটি কেবল রাজনৈতিক স্বচ্ছতার ইঙ্গিত দেয় না, বরং তরুণদের জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্তও তৈরি করে।
অমিত শাহও তাঁর অবসর পরিকল্পনার কথা জানালেন
বুধবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একটি অনুষ্ঠানে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: আমার চাষ করতে ভালো লাগে, আমি অবসরের পরে প্রাকৃতিক চাষ করব। এছাড়াও, আমি বেদ ও উপনিষদ অধ্যয়ন করতে চাই। অমিত শাহের এই মন্তব্যটিও আলোচনায় ছিল, কারণ খুব কম নেতাই প্রকাশ্যে তাঁদের রাজনৈতিক জীবনের পরের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
অমিত শাহ এবং জগদীপ ধনখড় - উভয়ের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে শীর্ষস্থানীয় নেতারা রাজনীতির পরে ভারতীয় জ্ঞান ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক জীবনযাত্রার দিকে ফিরে যেতে ইচ্ছুক। অমিত শাহ প্রাকৃতিক চাষকে একটি “বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা” হিসাবে উল্লেখ করে বলেছিলেন যে এটি কৃষকদের অনেক সুবিধা দেয়।