স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের মতে, সূর্যালোক থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন ডি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও হাড় মজবুত রাখার জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন ডি ঘাটতি: এটি বর্তমানে ভারতীয় শহরাঞ্চলে একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক জীবনযাত্রায় ঘরে বসে কাজ, সূর্যের আলো না পাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস—এই ঘাটতির মূল কারণ। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ, প্রতিদিন সকালে ৮টা থেকে ১০টা বা বিকেলে ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে ১৫–৩০ মিনিট রোদে থাকলে শরীরে ভিটামিন ডি স্বাভাবিকভাবে তৈরি হবে।
সূর্যালোক: ভিটামিন ডি-র প্রাকৃতিক উৎস
সূর্যের আলো ভিটামিন ডি তৈরির সবচেয়ে বড় উৎস। ভারতের মতো উষ্ণ দেশে সারাবছর রোদ পাওয়া যায়, তবুও অনেকে এই ভিটামিনের ঘাটতিতে ভোগেন। এর প্রধান কারণ হল, দিনের বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকা এবং শরীরে সরাসরি সূর্যের আলো না লাগা।চিকিৎসকদের মতে, ভোরের বা বিকেলের হালকা রোদে বসা সবচেয়ে উপকারী। এই সময় সূর্যের আলোতে থাকা আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি শরীরের ত্বকে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করতে সাহায্য করে।
কখন এবং কতক্ষণ রোদে থাকা উচিত
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, সকালে ৮টা থেকে ১০টা বা বিকেলে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সময় রোদে থাকার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। ১৫ থেকে ৩০ মিনিট রোদে থাকা যথেষ্ট। সানস্ক্রিন ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ এটি সূর্যের আলোর প্রভাবকে কমিয়ে দেয়।গাঢ় ত্বকের মানুষদের ক্ষেত্রে সময় কিছুটা বাড়তে পারে, কারণ তাদের ত্বক সূর্যের আলো শোষণে বেশি সময় নেয়।
ভিটামিন ডি শরীরে কীভাবে কাজ করে
ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের শোষণ নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে হাড় শক্ত ও মজবুত থাকে। এছাড়া এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ভূমিকা রাখে।ভিটামিন ডি-র অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যায়, পেশিতে ব্যথা ও ক্লান্তি দেখা দেয়, এমনকি অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকিও বাড়ে।
খাবার থেকেও পাওয়া যায় ভিটামিন ডি
রোদে থাকার পাশাপাশি কিছু খাবার থেকেও ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব। খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত—স্যালমন বা টুনা মাছ, ডিমের কুসুম, ফোর্টিফায়েড দুধ এবং মাশরুম। এসব খাবার নিয়মিত খেলে শরীরের ভিটামিন ডি-র ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ হয়।
জীবনযাপনে ছোট পরিবর্তন, বড় উপকার
দীর্ঘ সময় ঘরে না থেকে সকালের রোদে হাঁটতে যাওয়া, অফিসে জানালার পাশে বসা, সপ্তাহে অন্তত তিন দিন খোলা আকাশের নিচে কিছু সময় কাটানো—এই অভ্যাসগুলো শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদনে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি ঘাটতি পূরণে সূর্যের আলোই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। চিকিৎসকের মতে, প্রতিদিন সকালে বা বিকেলে ১৫–৩০ মিনিট রোদে থাকা যথেষ্ট। মুখ ও হাতের মতো খোলা অংশে সরাসরি সূর্যের আলো পড়লে শরীরে স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরি হয়, যা হাড় ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।