৫০-এর পর যে ৫টি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি

৫০-এর পর যে ৫টি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি

50 বছর বয়সের পর শরীরে মেটাবলিজম এবং ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হতে শুরু করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং কিডনি সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই ডাক্তাররা ব্লাড প্রেসার, ব্লাড সুগার, লিপিড প্রোফাইল, প্রোস্টেট-স্পেসিফিক টেস্ট এবং লিভার-কিডনি ফাংশন টেস্ট করার পরামর্শ দেন, যাতে রোগের সময় মতো সনাক্তকরণ করা যায়।

50-এর পর প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা: বয়স 50 পেরোতেই শরীরে দ্রুত অনেক পরিবর্তন দেখা যায় এবং গুরুতর রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, এই বয়সে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো খুবই জরুরি। বিশেষ করে পাঁচটি পরীক্ষা - ব্লাড প্রেসার, ব্লাড সুগার, লিপিড প্রোফাইল, প্রোস্টেট-স্পেসিফিক টেস্ট এবং লিভার-কিডনি ফাংশন টেস্ট - সবারই করানো উচিত। এই পরীক্ষাগুলো শুধু বর্তমান স্বাস্থ্য পরিস্থিতিই জানায় না, ভবিষ্যতে হতে পারে এমন রোগও আগে থেকে সনাক্ত করে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই 50 বছর পার করার পর এই পরীক্ষাগুলো এড়িয়ে যাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।

রক্তচাপ পরীক্ষা জরুরি

উচ্চ রক্তচাপকে প্রায়শই নীরব ঘাতক বলা হয় কারণ এটি কোনো লক্ষণ ছাড়াই শরীরের ক্ষতি করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনির সমস্যার কারণ হতে পারে। 50 বছর বয়সের পর প্রতি 2-3 মাসে রক্তচাপ পরীক্ষা করা জরুরি। এতে সময় মতো বিপদ সনাক্ত করা যায় এবং চিকিৎসা সহজ হয়।

রক্তে শর্করার পরীক্ষা করান

ডায়াবেটিস বর্তমানে সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করছে, তবে পঞ্চাশের পর এর ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। রক্তে শর্করা বাড়লে চোখ, লিভার, নার্ভাস সিস্টেম এবং হৃদপিণ্ডের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ে। যদি সময় মতো ডায়াবেটিস শনাক্ত করা না যায়, তবে এর প্রভাব সারাজীবন ভোগ করতে হতে পারে। তাই এই বয়সে নিয়মিত ব্লাড সুগার পরীক্ষা করানো খুবই জরুরি।

লিপিড প্রোফাইল টেস্ট থেকে হৃদরোগের তথ্য পাওয়া যায়

50-এর পর হৃদরোগ দ্রুত বাড়তে শুরু করে। উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। লিপিড প্রোফাইল টেস্টের মাধ্যমে রক্তে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডসের তথ্য পাওয়া যায়। কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও বছরে অন্তত একবার এই পরীক্ষা করানো উচিত, যাতে প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ শনাক্ত করা যায়।

পুরুষদের জন্য প্রোস্টেট-স্পেসিফিক টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ

50 বছর বয়সের পর পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই রোগ ধীরে ধীরে বাড়ে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণও দেখা যায় না। প্রোস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট অর্থাৎ PSA টেস্টের মাধ্যমে এই রোগ সময় মতো সনাক্ত করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে এর চিকিৎসা সহজে করা যায়।

লিভার এবং কিডনি ফাংশন টেস্ট

শরীর থেকে টক্সিন বের করার কাজটি লিভার এবং কিডনি করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই অঙ্গগুলোর কার্যক্ষমতা দুর্বল হতে শুরু করে। যদি সময় মতো পরীক্ষা করা না হয়, তবে লিভার সিরোসিস, ফ্যাটি লিভার, কিডনি ফেইলিউরের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। 50 বছর পার করার পর লিভার ফাংশন টেস্ট এবং কিডনি ফাংশন টেস্ট করানো খুবই জরুরি, যাতে এই অঙ্গগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়।

বয়স বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা

পঞ্চাশের পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। হরমোনের পরিবর্তন এবং মেটাবলিজমের অভাবে রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এই কারণেই ডাক্তাররা নিয়মিত পরীক্ষার পরামর্শ দেন। ব্লাড প্রেসার, ব্লাড সুগার এবং কোলেস্টেরল সংক্রান্ত পরীক্ষাগুলো তো সবারই করানো উচিত, তবে এর পাশাপাশি প্রোস্টেট, লিভার এবং কিডনির পরীক্ষাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a comment