বর্ষায় জ্বর-সর্দিতে কাবু ঘরোয়া চায়ের কাপে মিলবে আরাম ও আরোগ্য!

বর্ষায় জ্বর-সর্দিতে কাবু ঘরোয়া চায়ের কাপে মিলবে আরাম ও আরোগ্য!

মধু ও দারুচিনির চা: গলাব্যথার প্রাকৃতিক ওষুধ

বর্ষায় হঠাৎ ঠান্ডা লাগা, গলা ধরে যাওয়া বা খুসখুসে কাশিতে কাবু? এক কাপ দারুচিনির চা হতে পারে আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। গরম জলে দারুচিনির কাঠি বা গুঁড়ো ভালো করে ফুটিয়ে তাতে অল্প চা পাতা মিশিয়ে নিন। গরম থাকতে থাকতে মিশিয়ে দিন এক চামচ মধু। এই পানীয় কেবল গলার আরামই দেয় না, বরং শরীরে জমে থাকা কোলেস্টেরল ও রক্তে চিনির মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পান করলে দারুণ উপকার পাবেন।

মাচা টি: শরীরচর্চার সঙ্গেও ভাইরাল প্রতিরোধে সমান কার্যকর

ওজন ঝরানোর দৌড়ে যারা রয়েছেন, তাঁদের অনেকের কাছেই মাচা চা পরিচিত নাম। কিন্তু জানেন কি, এই সবুজ গুঁড়ো চা শুধু ফিটনেস নয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও দুর্দান্ত? এতে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষকে সজীব রাখে, পাশাপাশি ভাইরাল সংক্রমণের সঙ্গে লড়ার শক্তিও দেয়। দিনে একবার মাচা চা খেলে শরীরে জড়তা কমে, এবং সর্দি-কাশি থেকেও কিছুটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

গ্রিন টি: সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে সবুজ ঢাল

শরীর ঠান্ডা লাগার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই অনুভব করেন মাথা ভার, হাঁচি কাশি আর দুর্বলতা। এ অবস্থায় গ্রিন টি খাওয়া দারুণ উপকারী। গ্রিন টি-তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সর্দি-কাশির সময় শরীরে জমে থাকা ইনফ্লেমেশন কমাতে সাহায্য করে। চাইলে গ্রিন টি-তে আদার টুকরো ফুটিয়ে নিতে পারেন—এই মিশ্রণ আরও কার্যকর। দিনে দু’বার এই পানীয় পানের অভ্যাস রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

ক্যামোমাইল টি: ঘুমোতে না পারার কষ্টে স্বস্তির পরশ

বর্ষাকালে নাক বন্ধ, গলা শুকনো, কাশির দমকে রাতে ঘুমই হয় না ঠিক করে। আর সারাদিন তারই ক্লান্তি টেনে নিয়ে যায় কাজের এনার্জি। ক্যামোমাইল চা এমনই এক পানীয়, যা আপনাকে শান্ত ঘুম এনে দিতে পারে। শুধু ঘুমই নয়, এর প্রাকৃতিক গুণাগুণ গলাব্যথা, কাশি এমনকি মৃদু জ্বরেও আরাম দেয়। এই চা খেলে স্নায়ু শান্ত হয়, ফলে মুডও ভালো থাকে। সন্ধে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই চা পান করলে উপকার মিলবেই।

আদা-তুলসির চা: ঘরে তৈরি অ্যান্টিভাইরাল পানীয়

যখন বাতাসে ভাইরাসের দাপট, তখন প্রয়োজন ঘরোয়া প্রতিরোধ। এক কাপ আদা-তুলসির চা সেই দায়িত্ব নেয় নিঃসন্দেহে। এক কাপ জলে কয়েকটি তুলসি পাতা আর এক টুকরো আদা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। চাইলে সামান্য লবঙ্গ, চা পাতা ও মধুও মেশাতে পারেন। এই চা শুধু ঠান্ডা-কাশি নয়, বরং ফ্লু জাতীয় সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরকে লড়ার শক্তি দেয়। দিনে একবার হলেও এই চায়ে চুমুক দিন, বর্ষাকালটা বেশ ভালো কাটবে।বর্ষার রোম্যান্টিকতা যতই থাক, তার সঙ্গে শরীরের লড়াইটাও ততটাই সত্যি। সর্দি-কাশি-জ্বর যেন মরশুমের অপরিহার্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে। ওষুধের আগে যদি একটু প্রকৃতির পথ ধরা যায়, তা হলে সুস্থতার রাস্তা আরও সহজ হতে পারে। তাই এ বার বর্ষায় চায়ের কাপ শুধু স্বাদ নয়, হয়ে উঠুক সুস্থতার আধারও।

Leave a comment