মসজিদে অখিলেশ যাদবের বৈঠক নিয়ে বিতর্ক: বিজেপি-র 'নমাজবাদী' আক্রমণ, এসপি-র পাল্টা জবাব

মসজিদে অখিলেশ যাদবের বৈঠক নিয়ে বিতর্ক: বিজেপি-র 'নমাজবাদী' আক্রমণ, এসপি-র পাল্টা জবাব

নয়াদিল্লির মসজিদে অখিলেশ যাদবের কথিত বৈঠক নিয়ে বিজেপি তাঁকে ‘নমাজবাদী’ বলেছে। সপা অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ তুলেছে। অখিলেশ বলেছেন, "বিজেপি শুধু ভাগ করতে জানে।"

Akhilesh Masjid Meeting: উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি ফের ধর্ম ও বিশ্বাসের ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সমাজবাদী পার্টি (সপা) প্রধান অখিলেশ যাদবের নয়াদিল্লির একটি মসজিদে কথিত বৈঠক নিয়ে বিজেপি কড়া আপত্তি জানিয়েছে। এর জবাবে সপা-র পক্ষ থেকেও তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে।

বিজেপির অভিযোগ: সংবিধানের উপেক্ষা

উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক বুধবার অখিলেশ যাদবকে "নমাজবাদী" আখ্যা দিয়ে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধান ধর্মীয় স্থানগুলির রাজনৈতিক ব্যবহার অনুমোদন করে না। পাঠক এএনআই-কে বলেন, "সমাজবাদী পার্টি এবং তাদের নেতারা সর্বদা সংবিধান লঙ্ঘন করেন। তাদের সংবিধানে কোনও আস্থা নেই।"

পাঠকের অভিযোগ, অখিলেশ যাদব সংসদ মার্গ স্থিত মসজিদে একটি রাজনৈতিক বৈঠক করেছেন, যা সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী। তিনি বলেন, "ধর্মীয় স্থান রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।"

সপা-র জবাব: বিজেপি ইস্যু থেকে diversion করছে

বিজেপির এই অভিযোগের পাল্টা জবাবে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রাজীব রায় বলেন, বিজেপির উচিত প্রথমে তাদের নেতাদের ভাইরাল ভিডিওগুলির দিকে নজর দেওয়া। তিনি প্রশ্ন করেন, "এখন কি মসজিদ বা মন্দিরে যেতে আমাদের বিজেপির কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে? কে কোথায় যেতে পারবে, তা কি বিজেপি ঠিক করে দেবে?"

রাজীব রায় আরও বলেন যে বিজেপি তাদের নেতাদের সর্বজনীন স্থানে করা কার্যকলাপ নিয়ে কখনও প্রশ্ন তোলে না, তবে বিরোধী নেতাদের নিশানা করার কোনও সুযোগ ছাড়ে না।

অখিলেশ যাদবের সাফাই

সপা প্রধান অখিলেশ যাদব এই পুরো বিতর্ক নিয়ে নিজের বক্তব্য পেশ করে বলেন যে বিজেপি দেশে মানুষকে ভাগ করতে চায়। তিনি বলেন, "আস্থা যোগ করার কাজ করে। কিন্তু বিজেপি চায় না মানুষ এক হোক। আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি। বিজেপি কেবল ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।" সপা সর্বদা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং এই ধরনের অভিযোগ আসলে জনগণকে আসল সমস্যা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।

মসজিদকে ‘পার্টি অফিস’ বানানোর অভিযোগ

এই বিতর্কের মধ্যে বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার জাতীয় সভাপতি জামাল সিদ্দিকী সপা সাংসদ মহিবুল্লাহ নদভীর বিরুদ্ধে মসজিদকে পার্টি অফিসের মতো ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন। জানিয়ে রাখি, মহিবুল্লাহ নদভী সংসদ মার্গ স্থিত মসজিদের ইমামও।

জামাল সিদ্দিকী বলেন, "মসজিদকে রাজনৈতিক কাজকর্মের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা শুধু ভুল নয়, ধর্মীয় ভাবাবেগেরও অপমান।"

সপা সাংসদের बचाव

এই পুরো বিতর্ক নিয়ে সপা সাংসদ জিয়া উর রহমান বার্কও বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, "এরকম কোনও বৈঠক হয়নি। যদি বৈঠক করার দরকার হত, তাহলে সংসদ ভবন বা সাংসদদের আবাসে করতাম। মসজিদে রাজনৈতিক বৈঠকের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এটা অকারণে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।"

আইন ও সংবিধান কী বলে?

ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫ নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়, তবে একই সাথে এও আশা করে যে ধর্মীয় স্থানগুলি কেবল ধর্মীয় কাজের জন্য ব্যবহৃত হবে। সুপ্রিম কোর্টও বহুবার তার রায়ে স্পষ্ট করেছে যে মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার বা গির্জার মতো ধর্মীয় স্থানগুলি রাজনৈতিক প্রচার বা কৌশলের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a comment