কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে জেল সংক্রান্ত আইন নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো গুরুতর মামলায় যদি জামিন না পাওয়া যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট নেতাকে পদ ছাড়তে হবে। ৩০ দিনের জন্য জামিনের ব্যবস্থা এবং উচ্চ বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধান গণতন্ত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য করা হয়েছে।
নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের জন্য প্রস্তাবিত জেল আইন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। শাহ স্পষ্ট করেছেন যে, কোনো প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর মামলা রুজু হলে, তাঁরা ৩০ দিনের জন্য জামিন পেতে পারেন। তিনি আরও বলেন, যদি মামলাটি মিথ্যা বা জাল হয়, তাহলে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট অবিলম্বে এর cognizance নেবে। তিনি জানান, আদালত থেকে জামিন না পাওয়ার পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে।
অমিত শাহ বলেন, এই আইন শুধুমাত্র বিরোধী বা ক্ষমতাসীন দলের জন্য নয়, সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। এর উদ্দেশ্য হল গণতন্ত্রের মর্যাদা বজায় রাখা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা।
প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে গেলে পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে
অমিত শাহ জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব পেশ করেছেন, তাতে প্রধানমন্ত্রীর পদও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনী অনুসারে, যদি প্রধানমন্ত্রী জেলে যান, তাহলে তাঁকে তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। শাহ এটিকে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতার প্রতীক বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন যে, সরকার সকলের জন্য সমান নিয়ম लागू করতে চায়, তা সে শাসক দল হোক বা বিরোধী দল।
শাহ বিরোধীদের আক্রমণ করে বলেন, কোনো বিল বা সাংবিধানিক সংশোধনী সংসদে পেশ না করা গণতন্ত্রের জন্য উপযুক্ত নয়। তিনি স্পষ্ট করেন যে, সংসদ হল বিতর্ক ও আলোচনার স্থান, হট্টগোল বা শোরগোল করার জায়গা নয়। তিনি অতীতের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তিনিও বিরোধিতা করেছেন, কিন্তু বিল পেশ না করার মতো মানসিকতা দেখাননি।
নেতাদের জন্য ৩০ দিনের জামিনের মেয়াদ
অমিত শাহ ৩০ দিনের জামিনের মেয়াদের ওপর জোর দিয়ে বলেন যে, এটি বিচার বিভাগকে জামিনের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দেবে। তিনি বলেন, এই বিধান কোনো নেতাকে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে পদ থেকে সরানোর উপায় নয়, বরং বিচার প্রক্রিয়াকে সম্মান জানিয়ে গণতন্ত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার একটি প্রচেষ্টা।
শাহ উদাহরণ দিয়ে বলেন, স্বাধীনতার পর অনেক নেতাকে জেলে যাওয়ার কারণে ইস্তফা দিতে হয়েছে। তিনি आम आदमी পার্টির নেতা সত্যেন্দ্র জৈনের কথাও উল্লেখ করেন, যাঁর ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন পর্যন্ত জামিন পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, নতুন আইনে প্রক্রিয়া স্পষ্ট এবং দ্রুত হবে, যার ফলে কাউকে যেন অহেতুক সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়।
মিথ্যা-ছোট অভিযোগে কোনো পদক্ষেপ নয়
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ-ও স্পষ্ট করেছেন যে, ছোটখাটো বা মিথ্যা অভিযোগে কোনো মন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীকে পদ ছাড়ার প্রয়োজন হবে না। আইন শুধুমাত্র সেই মামলাগুলোতে প্রযোজ্য হবে, যেখানে ৫ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। শাহ বলেন যে, ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে আগে থেকেই বিধান রয়েছে যে, যদি কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধিকে দুই বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে তাঁর সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, "কোনো মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী কি জেল থেকে সরকার চালাতে পারেন? এটি গণতন্ত্রের মর্যাদা ও কার্যকারিতার জন্য গুরুতর প্রশ্ন।" তিনি আরও যোগ করেন যে, এই আইনের উদ্দেশ্য হল গুরুতর অপরাধমূলক মামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ক্ষমতার অপব্যবহার করা থেকে আটকানো এবং গণতন্ত্রের মর্যাদা বজায় রাখা।