অমিত শাহ আজ নতুন জাতীয় সমবায় নীতি ২০২৫ উন্মোচন করেছেন। এর উদ্দেশ্য হল সমবায় সংস্থাগুলিকে আধুনিকীকরণ, উদ্ভাবনের সাথে যুক্ত করা এবং গ্রামীণ ভারতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো।
Cooperative Policy: ভারতের সমবায় ক্ষেত্রের জন্য ২০২৫ সালের ২৪শে জুলাই একটি ঐতিহাসিক দিন, যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ "জাতীয় সমবায় নীতি ২০২৫" এর আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন। এই নীতি সমবায় সংস্থাগুলিকে ভবিষ্যতের জন্য সক্ষম করে তোলার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এই নীতির উদ্দেশ্য হল দেশে সমবায় আন্দোলনকে নতুন প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং যুবশক্তির সাথে যুক্ত করে গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে সমৃদ্ধি নিয়ে আসা।
নীতির লক্ষ্য: অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ভবিষ্যৎমুখী সমবায় কাঠামো
সমবায় মন্ত্রক জানিয়েছে, নতুন সমবায় নীতি ২০২৫-এর প্রধান উদ্দেশ্য হল সমবায় ক্ষেত্রকে পুনরুজ্জীবিত এবং আধুনিকীকরণ করা। এই নীতি একটি রোডম্যাপ হিসাবে কাজ করবে যা সমবায়ের মাধ্যমে তৃণমূল স্তরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমৃদ্ধি আনতে সহায়তা করবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, "এই নীতি প্রধানমন্ত্রী মোদীজির নেতৃত্বে সমবায় আন্দোলনকে উদ্ভাবন, আধুনিক প্রযুক্তি এবং যুবশক্তির সাথে যুক্ত করে একটি সক্ষম এবং ভবিষ্যৎমুখী সমবায় ভারতের ভিত্তি স্থাপন করবে।"
পুরানো নীতির জায়গা নেবে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির নীতি
ভারতে প্রথম জাতীয় সমবায় নীতি ২০০২ সালে আনা হয়েছিল। সেই নীতির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সমবায় সংস্থাগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের আরও ভাল ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকাঠামো তৈরি করা। কিন্তু গত দুই দশকে বিশ্বায়ন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনগুলি সমবায় ক্ষেত্রের ভূমিকাকে নতুন রূপ দিয়েছে।
এই পরিবর্তনগুলি বিবেচনা করে, সমবায় মন্ত্রক একটি সমসাময়িক এবং শক্তিশালী নীতি তৈরি করেছে যা আজকের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং প্রযুক্তিগত প্রেক্ষাপটে সমবায়কে প্রতিযোগিতামূলক এবং ফলাফলমুখী করতে পারে।
উন্নত ভারত ২০৪৭-এর লক্ষ্যে সমবায়ের অবদান
মন্ত্রকের মতে, নতুন সমবায় নীতি ২০২৫-এর উদ্দেশ্য হল "উন্নত ভারত ২০৪৭" এর লক্ষ্য অর্জনে সমবায় ক্ষেত্রের অংশগ্রহণকে সুদৃঢ় করা। এই নীতি সমবায় সংস্থাগুলিকে এমন একটি কাঠামো দেওয়ার চেষ্টা করে, যার মাধ্যমে তারা গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে, মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং কৃষি, দুগ্ধ উৎপাদন, আর্থিক পরিষেবা, বাজার সংযোগ এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি-র মতো ক্ষেত্রগুলিতে ব্যাপক অবদান রাখতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: নতুন সমবায় নীতির বৈশিষ্ট্য
- প্রযুক্তিগত একত্রীকরণ: নতুন নীতিতে সমবায় সংস্থাগুলিকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে স্বচ্ছতা, দক্ষ পরিচালনা এবং সদস্য অংশগ্রহণ বাড়বে।
- যুব অংশগ্রহণ: নীতির উদ্দেশ্য হল যুব সমাজকে সমবায় আন্দোলনের সাথে যুক্ত করা যাতে তারা এই ক্ষেত্রে উদ্ভাবন এবং নেতৃত্ব আনতে পারে।
- অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন: মহিলা এবং পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
- সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (PPP): নীতিতে সমবায় সংস্থাগুলির জন্য বেসরকারি ও সরকারি ক্ষেত্রের সাথে অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করা হয়েছে যাতে পুঁজি ও দক্ষতার আদান-প্রদান হতে পারে।
- প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বিকাশ: সদস্য ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করা হবে।
নীতি নির্মাণে ব্যাপক পরামর্শ এবং অংশগ্রহণ
জাতীয় সমবায় নীতি ২০২৫-এর নির্মাণে রাজ্য, জাতীয় ও রাজ্য স্তরের সমবায় সংস্থা, শিক্ষাবিদ, নীতি নির্ধারক এবং বিশেষজ্ঞদের থেকে ব্যাপক পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। এর খসড়া সমস্ত সংশ্লিষ্ট পক্ষের অংশগ্রহণ এবং ফিডব্যাকের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ভারতে সমবায় সংস্থাগুলি কৃষি, দুগ্ধ উৎপাদন, গ্রামীণ ব্যাঙ্কিং, ভোক্তা বিতরণ এবং আবাসন-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতে দীর্ঘকাল ধরে কাজ করছে। ভারতের বৃহত্তম ডেয়ারি ব্র্যান্ড अमूल, একটি সমবায় সংস্থা।