বিহার বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে আরায় বাবা-ছেলের হত্যায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বেলঘাট গ্রামের কাছে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, যদিও নির্বাচনী রেষারেষির সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে।
আরা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে অপরাধীদের সাহস ক্রমশ বাড়ছে। পাটনার মোকামায় দুলারচাঁদ যাদবের হত্যার একদিন পর এবার ভোজপুর জেলার আরায় জোড়া খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মুফাসসিল থানা এলাকার বেলঘাট গ্রামের কাছে শুক্রবার সকালে বাবা-ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে; দু'জনকেই গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে এবং এফএসএল দলও প্রমাণ সংগ্রহে ব্যস্ত।
ভোজপুরে বাবা-ছেলের হত্যায় তোলপাড়
ঘটনাটি ভোজপুর জেলার মুফাসসিল থানা এলাকার বেলঘাট গ্রামের কাছে ঘটেছে। নিহতদের পরিচয় উদবন্তনগর থানা এলাকার কাসাপ গ্রামের বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী প্রমোদ কুমার এবং তাঁর ১৮ বছর বয়সী পুত্র প্রিয়াংশু কুমার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে। বাবা-ছেলে গত এক মাস ধরে গ্রামে মিষ্টির দোকান চালাচ্ছিলেন এবং এটিই ছিল পরিবারের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দু'জনে একটি বাগদানের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির জন্য বাজার করতে বেরিয়েছিলেন, কিন্তু সারারাত আর ফিরে আসেননি।
সকালে গ্রামবাসীরা রাস্তার ধারে দুজনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ তদন্ত করে নিশ্চিত হয় যে দু'জনকেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি খালি কার্তুজও উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক গ্রামবাসী জড়ো হয়েছেন।
বাগদান অনুষ্ঠানের আগে জোড়া খুন
নিহত প্রমোদের বড় ছেলে হিমাংশু কুমারের শুক্রবার বাগদান হওয়ার কথা ছিল। বাগদান অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছিল এবং এই কেনাকাটার জন্যই প্রমোদ তাঁর ছেলে প্রিয়াংশুকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। হিমাংশু জানিয়েছেন যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা প্রায় সাতটা নাগাদ বাবার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল, তারপর তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। সকালে মৃতদেহ পাওয়ার খবর আসার পর পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।
গ্রামে শোকের আবহ। সবাই এই ঘটনায় স্তম্ভিত যে একজন শান্ত স্বভাবের ব্যক্তি এবং তাঁর ছেলেকে এত নির্মমভাবে কেন হত্যা করা হলো। পরিবারের সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ডকে কোনো ব্যক্তিগত রেষারেষির ফল হিসেবে মানতে চাইছেন না, যদিও পুলিশ সব দিক থেকে তদন্ত চালাচ্ছে।
নির্বাচনী আবহে অপরাধীদের বাড়বাড়ন্ত
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আবহাওয়া বিরাজ করছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর প্রশাসনের কড়া নজর রয়েছে। তা সত্ত্বেও, এই ধরনের ঘটনা আইন-শৃঙ্খলার উপর প্রশ্ন তুলছে। মাত্র একদিন আগে মোকামায় দুলারচাঁদ যাদবের হত্যার ফলে জেলায় উত্তেজনা ছিল, এখন আরার এই জোড়া খুন প্রশাসনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুলিশ সুপার অভিষেক বর্মা বলেছেন যে এই ঘটনাকে নির্বাচনী রেষারেষির সঙ্গে যুক্ত করে দেখা হচ্ছে না। এফএসএল দল ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করছে এবং প্রযুক্তিগত তদন্তের ভিত্তিতে অপরাধীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
অপরাধীদের সন্ধানে পুলিশ
মুফাসসিল থানা পুলিশ জানিয়েছে যে হত্যার পেছনের কারণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি। অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের বেশ কয়েকটি দল গঠন করা হয়েছে, যারা প্রযুক্তিগত প্রমাণ এবং কল ডিটেলের ভিত্তিতে তদন্ত করছে।
পুলিশ দাবি করেছে যে শীঘ্রই অপরাধীদের ধরে ফেলা হবে। অন্যদিকে, পরিবার ন্যায়বিচারের আবেদন জানাচ্ছে। বাগদানের দিনে বাবা ও ভাইয়ের মৃতদেহ পাওয়ায় পুরো গ্রাম শোকে আচ্ছন্ন।













