শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আয়ুর্বেদিক উপায়: তুলসী ও সিতোপলাদি চূর্ণের উপকারিতা

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আয়ুর্বেদিক উপায়: তুলসী ও সিতোপলাদি চূর্ণের উপকারিতা

পরিবর্তিত আবহাওয়ায় শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখতে আয়ুর্বেদিক প্রতিকার সহায়ক। এইমস আয়ুর্বেদের ডাঃ প্রদীপ কুমার প্রজাপতির মতে, তুলসীর কাढ़ा এবং সিতোপলাদি চূর্ণ শিশুদের গলা, ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। হালকা উষ্ণ কাढ़ा দিনে ১-২ বার দেওয়া উপকারী এবং এটি বারবার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

আয়ুর্বেদিক কাढ़ा: এইমস আয়ুর্বেদের ডিরেক্টর ডাঃ প্রদীপ কুমার প্রজাপতি জানিয়েছেন যে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তুলসীর কাढ़ा এবং সিতোপলাদি চূর্ণ অত্যন্ত কার্যকর। তুলসীর কাढ़ा সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা এবং গলার অস্বস্তিতে উপশম দেয়, যখন সিতোপলাদি চূর্ণ কফ পাতলা করে ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রকে শক্তিশালী করে তোলে। এটি হালকা উষ্ণ করে দিনে ১-২ বার দেওয়া নিরাপদ এবং নিয়মিত সেবনে শিশুরা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হয়।

তুলসীর কাढ़ा: শিশুদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর

তুলসীর কাढ़ा শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবচেয়ে কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। তুলসী পাতা ফুটিয়ে তৈরি করা এই কাढ़ा শরীরকে ঠাণ্ডা এবং ভাইরাল সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এটি গলার অস্বস্তি এবং কাশি থেকেও মুক্তি দেয়। শিশুদের জন্য এই কাढ़ा স্বাদে হালকা এবং পান করতে সহজ।

সিতোপলাদি চূর্ণের সংমিশ্রণ

ডাঃ প্রদীপ কুমার প্রজাপতির মতে, তুলসীর কাঢ়ায় যদি সিতোপলাদি চূর্ণ মেশানো হয়, তবে এটি আরও বেশি উপকারী হয়। সিতোপলাদি চূর্ণে মিছরি, বংশলোচন, পিপুল, এলাচ এবং দারচিনি-এর মতো উপাদান থাকে। এই সমস্ত উপাদান শিশুদের ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। মিছরি গলাকে ঠান্ডা রাখে এবং জ্বালা কমায়। বংশলোচন কফ পাতলা করতে সাহায্য করে। পিপুল ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সহায়ক। এলাচ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং দারচিনিতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী রয়েছে।

এই সংমিশ্রণের মাধ্যমে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তারা বারবার হওয়া ভাইরাল সংক্রমণ এবং শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকে। এই কাढ़ा হালকা অ্যালার্জি, সাইনাস এবং হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলিতেও উপশম প্রদান করে।

কাढ़ा সেবনের পদ্ধতি

ডাঃ প্রদীপ কুমার প্রজাপতি জানান যে তুলসীর কাढ़ा এবং সিতোপলাদি চূর্ণ দিনে ১ থেকে ২ বার হালকা উষ্ণ করে দেওয়া যেতে পারে। ছোট শিশুদের চামচের সাহায্যে এটি পান করানো যেতে পারে। নিয়মিত সেবনে শিশুদের শরীর ভেতর থেকে শক্তিশালী হয় এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

তুলসী এবং সিতোপলাদি চূর্ণের আরও সুবিধা

শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নয়, এই কাढ़ा শিশুদের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাতেও সাহায্য করে। তুলসীর কাढ़ा কাশি, গলা ব্যথা এবং সর্দি-কাশিতে উপশম দেয়। সিতোপলাদি চূর্ণ ফুসফুস এবং শ্বাসযন্ত্রের নালী পরিষ্কার করে। এটি হালকা অ্যালার্জি এবং শ্বাসকষ্টে উপকারী।

ডাঃ প্রদীপ এও বলেছেন যে শিশুদের ক্রমাগত রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য এই ভেষজ কাढ़ा একটি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ উপায় হিসাবে বিবেচিত হয়। এর কার্যকারিতা আয়ুর্বেদিক গুণাবলীর কারণে দীর্ঘস্থায়ী হয়।

পরিবর্তিত আবহাওয়ায় শিশুদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা

পরিবর্তিত আবহাওয়ায় শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ঠাণ্ডা বাতাস এবং ভাইরাল সংক্রমণ তাদের শরীরে দ্রুত প্রভাব ফেলে। এমন সময়ে তুলসীর কাढ़ा এবং সিতোপলাদি চূর্ণের মতো ভেষজ প্রতিকার শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে তোলে। শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে এবং তারা সুস্থ থাকে।

এই কাড়ার নিয়মিত সেবন শিশুদের শ্বাসতন্ত্র এবং ফুসফুসকেও শক্তিশালী করে। গলা ব্যথা, কাশি এবং সর্দি-কাশির মতো সমস্যা থেকে উপশম পাওয়া যায়। শিশুদের দৈনন্দিন রুটিন প্রভাবিত হয় না এবং তারা তাদের পড়াশোনা ও খেলাধুলায় সক্রিয় থাকতে পারে।

Leave a comment