মরণফাঁদ যশোর রোড ছাত্রীবোঝাই টোটো উল্টে বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ুয়ারা রাস্তার দুঃস্থ অবস্থা ফের বিপদের কারণ

মরণফাঁদ যশোর রোড ছাত্রীবোঝাই টোটো উল্টে বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ুয়ারা রাস্তার দুঃস্থ অবস্থা ফের বিপদের কারণ

উত্তর ২৪ পরগনার প্রাণকেন্দ্র বারাসতের শেঠ পুকুর থেকে চাঁপাডালি— এই যশোর রোডের দৈন্যদশা বহুদিনের। খানাখন্দে ভরা এই জাতীয় সড়ক এখন কার্যত মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ। সোমবার সেই দুর্দশার এক বাস্তব ছবি ধরা পড়ল— ছাত্রীরা ভর্তি একটি টোটো উল্টে গেল রাস্তায়, বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেল একগুচ্ছ প্রাণ।

জলমগ্ন গর্তে চাকা ঢুকে নিয়ন্ত্রণ হারায় গাড়ি

ওইদিন বারাসত গার্লস স্কুলের একাধিক ছাত্রী স্কুল শেষে টোটোয় করে ফিরছিল বাড়ি। টোটোটি যখন শেঠ পুকুর এলাকা অতিক্রম করছিল, সেই সময় রাস্তার মাঝখানে থাকা একটি গভীর জলমগ্ন গর্তে সামনের চাকা ঢুকে যায়। মুহূর্তে ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তার উপর উল্টে পড়ে টোটোটি। পিছনেই থাকা একটি গাড়ির যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন। তবে ঈশ্বরের কৃপায় কোনও ছাত্রীর প্রাণহানি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।

ভাইরাল ভিডিও দেখে ফুঁসছে বারাসতবাসী

এই ঘটনার ভিডিয়ো মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই দৃশ্য দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বারাসতের নাগরিকরা। তাঁদের প্রশ্ন— "আর কত প্রাণ গেলে রাস্তাটা মেরামত হবে?" দীর্ঘদিন ধরে এই জাতীয় সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব নিয়ে স্থানীয়রা অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। তাঁদের মতে, যশোর রোড শুধুমাত্র একটা রাস্তা নয়, এটি উত্তর শহরতলির গুরুত্বপূর্ণ লাইফলাইন।

বর্ষায় ভোগান্তির শেষ নেই, নিকাশির অভাবেই বিপত্তি

জানা গিয়েছে, বর্ষার জল জমে থাকার ফলেই গর্ত আরও গভীর হয়ে পড়ছে। রাস্তার উপরের পিচ উঠে গিয়েছে বহু জায়গায়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় জল দ্রুত বেরোতে পারছে না। ফলে প্রতিদিন রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কাজ শুরু হবে এবং সমস্যার সমাধান করা হবে।

ক্ষোভের আঁচ দাউ দাউ করে জ্বলছে, চাই স্থায়ী পরিকাঠামোগত সমাধান

বর্ষা নামলেই বিপদের সাঁতরে যাতায়াত—এই দুর্বিষহ বাস্তবেই দিন কাটাচ্ছেন বারাসত-ব্যারাকপুর রোডের বাসিন্দারা। তাই আর চুপ নয়, এবার রাস্তায় নেমেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁরা। জলমগ্ন যশোর রোডের বেহাল দশা ঘিরে অবরোধ-বিক্ষোভে উত্তাল এলাকা। তাঁদের স্পষ্ট দাবি—সময়ক্ষেপ নয়, চাই দ্রুত রাস্তার পূর্ণ সংস্কার ও কার্যকর নিকাশি ব্যবস্থা। কারণ, বৃষ্টির জল জমলেই যেখানে রিকশা টানাও অসম্ভব, সেখানে ছাত্রছাত্রী, কর্মজীবী মানুষ কিংবা রোগী পরিবহণ কতটা বিপজ্জনক, তা আর নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে না।

Leave a comment