প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীকে আরও একটি বড় উপহার হিসেবে চারটি নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা করলেন। এই ট্রেনগুলি বেনারস-খাজুরাহো, লখনউ-সাহারানপুর, ফিরোজপুর-দিল্লি এবং এর্নাকুলাম-বেঙ্গালুরু রুটে চলবে।
বারাণসী: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার তাঁর সংসদীয় এলাকা বারাণসী থেকে চারটি নতুন বন্দে ভারত ট্রেনকে সবুজ পতাকা দেখিয়ে দেশকে আরও একটি বড় উপহার দিলেন। বেনারস রেলওয়ে স্টেশন থেকে আয়োজিত এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে স্টেশন "হর-হর মহাদেব" ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বেনারস-খাজুরাহো, লখনউ-সাহারানপুর, ফিরোজপুর-দিল্লি এবং এর্নাকুলাম-বেঙ্গালুরু রুটে চলাচলকারী চারটি অত্যাধুনিক বন্দে ভারত ট্রেনের উদ্বোধন করেন।
এই উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় নাগরিক, বিজেপি কর্মী এবং রেলওয়ে আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে স্টেশন চত্বর প্রদীপ ও ফুল দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদি সবুজ পতাকা দেখানোর সাথে সাথেই ট্রেনগুলি যাত্রা শুরু করে এবং যাত্রীরা “ভারত মাতা কি জয়” এবং “হর-হর মহাদেব” স্লোগানে পরিবেশকে উৎসবে পরিণত করে।
বন্দে ভারত: ভারতের আধুনিক রেল যুগের প্রতীক
বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে ভারতের “সেমি-হাই-স্পিড রেল নেটওয়ার্ক”-এর প্রতীক হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই ট্রেনগুলি সম্পূর্ণভাবে ভারতে ডিজাইন ও নির্মিত হয়েছে, যা “মেক ইন ইন্ডিয়া” অভিযানের একটি বড় অর্জন হিসাবে বিবেচিত হয়। নতুন ট্রেনগুলিতে যাত্রীদের জন্য অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, উন্নত আসন বিন্যাস, স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং দরজা, জিপিএস-ভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থা এবং উন্নত এসি প্রযুক্তির মতো সুবিধা রয়েছে।
রেল মন্ত্রকের মতে, নতুন বন্দে ভারত ট্রেন চালু হওয়ার ফলে এই চারটি রুটে ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে এবং যাত্রীরা দ্রুত, নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদির ভাষণ: “পরিকাঠামোই উন্নয়নের মেরুদণ্ড”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন,
'বিশ্বের যে দেশগুলি দ্রুত উন্নয়ন করেছে, তাদের পেছনে শক্তিশালী পরিকাঠামোই সবচেয়ে বড় কারণ ছিল। ভারতও এখন সেই দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বিমানবন্দর, এক্সপ্রেসওয়ে এবং বন্দে ভারত-এর মতো আধুনিক ট্রেনগুলি ভারতের উন্নয়নের গাথা রচনা করছে।'
তিনি আরও বলেন যে, আজ ভারতে যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, তা আত্মনির্ভরতার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। বন্দে ভারত ট্রেনগুলি কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতীক নয়, এগুলি আমাদের দেশের প্রকৌশলী এবং কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের ফল, তিনি বলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি এও উল্লেখ করেন যে, এখন বিদেশি পর্যটকরাও ভারতের রেলওয়ে সুবিধা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন এবং বন্দে ভারতের মতো ট্রেনগুলিকে “নতুন ভারতের পরিচয়” হিসাবে বিবেচনা করছেন।
উন্নয়নের গতিকে নতুন দিশা
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারতের অর্থনীতিকে গতি দিতে পরিবহন ও সংযোগ নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি বলেন যে “রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আধুনিকীকরণ” কেবল যাত্রীদের সুবিধাই বাড়াচ্ছে না, বরং স্থানীয় শিল্প এবং পর্যটনকেও উৎসাহিত করছে। এই নতুন ট্রেনগুলি চালু হওয়ার ফলে উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, দিল্লি, পাঞ্জাব, কর্ণাটক এবং কেরালার মধ্যে ভ্রমণের সময় কমবে। এর ফলে ধর্মীয়, বাণিজ্যিক এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পৌঁছানো আরও সহজ হবে।













