বৎস বারস ২০২৫ সালের ২০শে আগস্ট পালিত হবে। এই দিনে মহিলারা গোমাতা ও বাছুরের পূজা করে তাদের পুত্রের দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি এবং পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন। পূজায় বাজরা, অঙ্কুরিত শস্য এবং মোষের দুধ ব্যবহার করা হয়। এই উৎসব জন্মাষ্টমীর চার দিন পর ভাদ্র মাসের দ্বাদশীতে অনুষ্ঠিত হয়।
নয়া দিল্লী: বৎস বারস ব্রত ২০২৫ সালের ২০শে আগস্ট পালিত হবে। এই উৎসব জন্মাষ্টমীর চার দিন পর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ দ্বাদশীতে পড়ে। এই দিনে মহিলারা গোমাতা ও বাছুরের বিধিবদ্ধ পূজা করেন, নিজের পুত্রের মঙ্গল কামনা করেন এবং ঘরে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। পূজায় বাজরা, অঙ্কুরিত শস্য এবং মোষের দুধ ব্যবহার করা হয় এবং ব্রত-সংক্রান্ত বিশেষ কাহিনী শোনা হয়।
পূজার শুভ মুহূর্ত
জ্যোতিষাচার্য ডঃ অনীশ ব্যাসের মতে, ভাদ্র মাসের দ্বাদশী তিথি ১৯শে আগস্ট, ২০২৫ মঙ্গলবার দুপুর ৩:৩২ মিনিট থেকে শুরু হয়ে ২০শে আগস্ট, ২০২৫ বুধবার দুপুর ১:৫৮ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। সেই জন্য বৎস বারসের ব্রত ২০শে আগস্টেই করা হবে।
পূজার প্রস্তুতি ও সামগ্রী
বৎস বারস পূজায় বিশেষ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে মোষের দুধ ও দই, ভেজানো ছোলা ও মটর, বাজরার সোগরা এবং অঙ্কুরিত শস্য। এই দিনে গম এবং ছুরি দিয়ে কাটা সবজি খাওয়া নিষেধ। পূজা স্থলে মাটি ও গোবর দিয়ে তৈরি ছোট পুকুর সাজিয়ে তাতে কাঁচা দুধ ঢেলে কুমকুম ও মৌলি দিয়ে সাজানো হয়।
গোমাতা ও বাছুরের বিধিবদ্ধ পূজা
সকালে সূর্যোদয়ের আগে স্নান করার পর মহিলারা গোমাতা ও বাছুরের পূজা করেন। পূজার সময় ধূপ-দীপ জ্বালানো হয় এবং পূজার কাহিনী শোনানো হয়। গরু ও বাছুরের মূর্তি অথবা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমার উপর দুধ, দই ও অন্যান্য প্রসাদ নিবেদন করা হয়।
বৎস বারসের কাহিনী
ভবিষ্যবক্তা ডঃ অনীশ ব্যাসের মতে, বহুকাল আগে এক গ্রামে এক সাহুকার তার সাত পুত্র ও নাতিদের সঙ্গে বাস করত। সে গ্রামে একটি পুকুর খনন করায়, কিন্তু বারো বছর ধরেও সেটি জলে ভরেনি। পণ্ডিতরা বললেন যে, এর জল তখনই ভরবে যখন তার বড় ছেলে বা নাতি বলি দেবে।
সাহুকার তার পুত্রবধূকে তার বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় এবং বড় নাতির বলি দেয়। সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয় এবং পুকুরটি জলে ভরে যায়। সেই দিনই বৎস বারস ছিল এবং পরিবারটি পুকুরের পূজা করে। ভুল করে একটি বাছুর রান্না হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু সেটি অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসে। সেই থেকে এই দিনে বাছুর ও গোমাতার পূজার রীতি শুরু হয়।
বায়না-প্রসাদ এর প্রস্তুতি
বৎস বারসে তিলক বের করা ও বায়না করার প্রথাও আছে। একটি পাত্রে ভেজানো ছোলা, মটর ও বাজরা রেখে তার উপরে টাকা রাখা হয়। রোঁলী ও চাল দিয়ে ছিটিয়ে পূজার পর হাত বুলিয়ে শাশুড়িকে দেওয়া হয়। ব্রতী মহিলা বাজরার ঠাণ্ডা রুটি, মোষের দুধ ও বেসনের প্রসাদ গ্রহণ করেন।
বৎস বারসের উদযাপন সেই বছরগুলিতে করা হয় যখন পুত্র সন্তান জন্ম নেয় অথবা ছেলের বিয়ে হয়। পূজায় বাজরার সোগরা ও ভেজানো মটর দিয়ে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সোয়া সেরের সামগ্রী থালায় রেখে হাত বুলিয়ে শাশুড়িকে দেওয়া হয়।