ভাওরী দেবী হত্যা মামলার একটি প্রসঙ্গে, যোধপুর হাইকোর্ট স্বাস্থ্য বিভাগকে অবমাননার নোটিশ জারি করেছে। মৃত্যু শংসাপত্র প্রদান এবং পেনশন আটকে রাখার বিষয়ে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জবাব তলব করা হয়েছে। এই মামলায় পরিবারের দাবি এখনও অমীমাংসিত রয়েছে।
যোধপুর: রাজস্থানের যোধপুরে ভাওরী দেবী হত্যা মামলার একটি প্রসঙ্গ এখন আদালতের নজরে এসেছে। যোধপুর হাইকোর্ট এই মামলায় স্বাস্থ্য বিভাগকে অবমাননার নোটিশ জারি করেছে। নোটিশ জারির কারণ হিসাবে ভাওরী দেবীর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র-কন্যাদের পেনশন না দেওয়া এবং মৃত্যু শংসাপত্র তৈরীতে অবহেলা করাকে উল্লেখ করা হয়েছে। আদালত এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জবাব তলব করেছে এবং প্রয়োজনীয় নথি পেশ করার নির্দেশও দিয়েছে।
ভাওরী দেবী মামলায় পেনশন সংক্রান্ত বিরোধ হাইকোর্টে
ভাওরী দেবী হত্যা মামলার ভুক্তভোগী পরিবারের পুত্র সাহিল পেমাওয়াত এবং দুই কন্যা এই বিষয়টি হাইকোর্টে উত্থাপন করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য বিভাগ পেনশন প্রদানে ক্রমাগত বিলম্ব করছে এবং মৃত কর্মীর মৃত্যু শংসাপত্রের অজুহাত দেখিয়ে অর্থ প্রদান এড়িয়ে যাচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, তৎকালীন যোধপুরের সিএমএইচও (CMHO) ভাওরী দেবীকে মৃত ঘোষণা করে তাঁর কর্মজীবনের ইতি টানেন এবং ১৬ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে এই বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেন। এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে বিভাগ তাঁর পুত্র সাহিলকে সহানুভূতি কোটায় চাকরিতে নিযুক্ত করে। কিন্তু এখন পেনশন প্রদানের প্রক্রিয়ায় বিভাগ মৃত্যু শংসাপত্রের উল্লেখ করে বিষয়টি অমীমাংসিত রেখেছে।
হাইকোর্টের পদক্ষেপ
ভাওরী দেবীর পরিবারের পক্ষ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে একটি অবমাননার আবেদন দাখিল করা হয়। এর শুনানি ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। শুনানির সময় হাইকোর্ট স্পষ্ট করে যে কোনো অজুহাতেই বিচারধীন আদেশের অবহেলা সহ্য করা হবে না।
হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের—সিএমএইচও (CMHO) ড. সুরেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, স্বাস্থ্য সচিব গায়ত্রী রাঠোর, পরিচালক (অ-গেজেটেড) স্বাস্থ্য দপ্তর, রাকেশ কুমার শর্মা, পেনশন বিভাগ এবং এলআইসি-কে (LIC) নোটিশ জারি করে জবাব তলব করেছে। এছাড়াও আদালত বলেছে যে বিভাগ সংশ্লিষ্ট সমস্ত নথি আদালতে জমা দেবে।
পেনশন না পাওয়ার কারণ
ভাওরী দেবীর পরিবার জানিয়েছে যে বিভাগ ক্রমাগত পেনশন প্রদানের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিচ্ছে। মৃত্যু শংসাপত্রের অজুহাত দেখিয়ে তাঁদের আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সাহিল পেমাওয়াত জানিয়েছেন যে বিভাগের এই বিলম্বের কারণে পরিবারকে আর্থিক কষ্টের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি কর্মচারীদের পেনশন প্রদানে এই ধরনের বিলম্ব প্রায়শই প্রশাসনিক অবহেলা এবং নথিপত্রের প্রতি উদাসীনতার কারণে ঘটে থাকে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়ে পড়ে যাতে ভুক্তভোগী পরিবার তাঁদের আইনগত অধিকার লাভ করতে পারেন।
হাইকোর্টের বার্তা
যোধপুর হাইকোর্ট স্পষ্ট করেছে যে কোনও সরকারি বিভাগ কর্তৃক আদালতের আদেশের অবহেলা গ্রহণযোগ্য নয়। আদালত বলেছে যে বিভাগকে আদেশ অনুযায়ী পেনশন প্রদান করা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও আদালত প্রয়োজনীয় নথি সময়মতো পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে।
বিশেষভাবে এই মামলাটি প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা এবং সরকারি আদেশ পালনের গুরুত্ব তুলে ধরে। হাইকোর্টের এই পদক্ষেপ এই বার্তা দেয় যে আদালত তার আদেশের অবহেলা সহ্য করবে না এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।