বিহার-নেপাল সীমান্তে পুলিশ ও এসএসবি-র যৌথ অভিযানে ২১৮ গ্রাম ব্রাউন সুগার এবং ১.৯০ লক্ষ টাকা সহ এক পাচারকারী গ্রেফতার হয়েছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চলছে।
কিষাণগঞ্জ: বিহার-নেপাল সীমান্তে পুলিশ এবং এসএসবি (সশস্ত্র সীমান্ত বল)-এর যৌথ অভিযানে মাদক পাচারের এক বড় নেটওয়ার্ক ধরা পড়েছে। কিষাণগঞ্জ জেলার গালগালিয়া থানা এলাকায় এই অভিযানে ২১৮ গ্রাম ব্রাউন সুগার, ১.৯০ লক্ষ টাকা নগদ এবং নেপালী মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানের সময় শিব সহানি নামে এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাকে এই অবৈধ কারবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত বলে জানা গেছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে বিশেষ দল
কিষাণগঞ্জ পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায় যে গালগালিয়া থানার দরভঙ্গিয়া টোলা এলাকার একটি আস্তানা থেকে ব্রাউন সুগারের কেনা-বেচা হচ্ছে। এই খবর পাওয়ার সাথে সাথেই এসডিপিও মঙ্গলেশ কুমার সিং-এর নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়।
এই দল এসএসবি ৪১তম বাহিনীর সাথে যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই এলাকায় তল্লাশি চালায়। এই তল্লাশির সময় শিব সহানিকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার জেরা শুরু করা হয়।
তল্লাশিতে ২১৮ গ্রাম ব্রাউন সুগার বাজেয়াপ্ত
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে ধৃত যুবকের সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে ২১৮ গ্রাম ব্রাউন সুগার, ১.৯০ লক্ষ টাকা নগদ, কিছু নেপালী মুদ্রা এবং একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রাউন সুগার উদ্ধারের ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে এটি একটি বড় পাচার নেটওয়ার্ক হতে পারে। পুলিশ এখন এই বিষয়টি তদন্ত করছে যে শিব সহানি কোথা থেকে এই মাদক সংগ্রহ করত এবং কাদের কাছে সরবরাহ করত।
ভারত-নেপাল সীমান্ত হয়ে উঠছে পাচারের আখড়া
কিষাণগঞ্জ এবং তার আশেপাশের এলাকাগুলি নেপাল সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় পাচারকারীদের নজরে থাকে। এখানে মদ, ড্রাগস এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্যের পাচার প্রায়শই ধরা পড়ে।
সম্প্রতি, মোতিহারী জেলার মহুয়াওয়া থানা এলাকা থেকে পুলিশ ৪.৬ কেজি চরস উদ্ধার করেছিল এবং দুজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিল। অন্যদিকে, ভাগলপুর জেলার বাবরগঞ্জ থানা পুলিশ ২.৬৭ গ্রাম ব্রাউন সুগার সহ দীপক কুমার নামে এক যুবককে ধরেছিল।
ধৃত শিব সহানির অপরাধমূলক রেকর্ড
পুলিশ জানিয়েছে যে ধৃত অভিযুক্ত শিব সহানি এর আগেও ব্রাউন সুগারের ব্যবসায় জড়িত ছিল। এখন তার পুরানো রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তার পরিচিতি ও সংযোগগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলি মনে করছে যে এটি কেবল একা ব্যক্তির কাজ নয়, বরং একটি সংগঠিত চক্রের সক্রিয়তার অংশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় আরও অনেক নাম সামনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি
ধারাবাহিক পাচার ঘটনাগুলি সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। স্থানীয়রা বলছেন যে তরুণ প্রজন্মকে নেশার অভ্যাসের হাত থেকে বাঁচাতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।
পুলিশ এবং এসএসবি জানিয়েছে যে সীমান্ত এলাকায় এই ধরনের অবৈধ ব্যবসার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য ধারাবাহিক অভিযান চালানো হবে এবং যেকোনো তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।