বিহারের ভোটার তালিকা থেকে কয়েক লক্ষ নাম বাদ দেওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ১০ই জুলাই শুনানি করবে। আরজেডিসহ একাধিক আবেদনকারী নির্বাচন কমিশনের প্রক্রিয়ার উপর প্রশ্ন তুলেছেন।
Bihar Voter List: বিহারে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision) চলাকালীন কয়েক লক্ষ ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিংভি, গোপাল শঙ্করনারায়ণন এবং অন্যান্যরা এই প্রক্রিয়ার উপর প্রশ্ন তুলেছেন। আদালত এই বিষয়ে ১০ই জুলাই শুনানি করবে।
মামলাটি কী
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বিহারে পরিচালিত বিশেষ নিবিড় সংশোধন অভিযানের অধীনে ভোটার তালিকায় বৃহৎ পরিমাণে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চারটি পৃথক আবেদন দাখিল করা হয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে আরজেডি নেতা মনোজ ঝা, সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব এবং মহুয়া মৈত্র-র মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রক্রিয়াটি অসম, জটিল এবং দরিদ্র ও বঞ্চিত শ্রেণির বিরুদ্ধে।
আবেদনকারীদের বক্তব্য কী
বিশিষ্ট আইনজীবীদের যুক্তি হল, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে, বিশেষ করে মহিলা এবং দরিদ্র শ্রেণী থেকে আসা মানুষদের। তাঁদের মতে, কোনো নাগরিক যদি নথিপত্রের সাথে ফর্ম পূরণ না করেন, তবে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হবে, তিনি যদি দুই দশক ধরে ভোট দিয়ে আসছেন তবুও।
কপিল সিব্বল আদালতে বলেন, "এটা যতটা সহজ দেখাচ্ছে, ততটা সহজ নয়।" অন্যদিকে, অভিষেক মনু সিংভি যুক্তি দেন, "৮ কোটি ভোটার রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৪ কোটির পুনর্গঠন করতে হবে। যা কার্যত অসম্ভব।"
আধার এবং ভোটার কার্ডও গৃহীত হচ্ছে না
আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণন জানিয়েছেন, অনেক স্থানে আধার কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ডের মতো নথিও গ্রহণ করা হচ্ছে না। এর ফলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। সিংভি আরও বলেন, ২৫শে জুলাই পর্যন্ত নথি জমা দেওয়ার সময়সীমা এত কঠোর যে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমস্যা হতে পারে।
আদালতের প্রাথমিক মন্তব্য
শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ধুলিয়া বলেন, যেহেতু এখনও বিহার বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি, তাই নথি জমা দেওয়ার সময়সীমার উপর বেশি জোর দেওয়া এখন উপযুক্ত নয়। যদিও আদালত আবেদনগুলি শুনতে রাজি হয়েছে এবং ১০ই জুলাই বিস্তারিত শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের উপর প্রশ্ন
নির্বাচন কমিশনের এই প্রক্রিয়ার উপর গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। আবেদনকারীদের দাবি, এই প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার পরিপন্থী এবং নাগরিকদের পর্যাপ্ত তথ্য ছাড়াই নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চল এবং অশিক্ষিত শ্রেণির মানুষ এর সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নন।