মহারাষ্ট্রে বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতার বিরুদ্ধে বড়সড় জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। মুম্বাইয়ের সায়ন থানায় দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী, ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা (বিজেওয়াইএম)-এর নেতা অমিত সোলুঙ্কে বিজেপি বিধান পরিষদ সদস্য (এমএলসি) প্রসাদ লাডের অফিসিয়াল লেটারহেড এবং জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে একটি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৩.৬০ কোটি টাকা মঞ্জুর করিয়েছেন।
এই জাল চিঠিটি বিড় জেলার পরিকল্পনা বিভাগে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে একটি সড়ক প্রকল্পের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ অনুমোদনের দাবি করা হয়েছিল। পুলিশি তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে যে এই চিঠিটি সম্পূর্ণ জাল ছিল এবং প্রসাদ লাড এই বিষয়ে জানতে পারেন যখন তার সহকারী মুম্বাই জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক সন্দীপ ভাখরের কাছ থেকে এই সন্দেহজনক চিঠির বিষয়ে খবর পান।
রত্নাগিরি থেকে পাঠানো হয়েছিল জাল চিঠি
খবর অনুযায়ী, এই জাল চিঠি রত্নাগিরি জেলা পরিকল্পনা অফিস থেকে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে ২৭ জুন ২০২৫ তারিখে প্রসাদ লাডের নোডাল জেলার দায়িত্ব রত্নাগিরি থেকে সরিয়ে মুম্বাই করা হয়েছিল। এতে বিষয়টি আরও সন্দেহজনক হয়ে ওঠে। তদন্তে জানা গেছে যে এই চিঠি বিড় জেলায় প্রশান্ত লান্ডে নামক এক ব্যক্তি জমা দিয়েছিলেন, যিনি এটি নিলেশ ওয়াঘমোডের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। ওয়াঘমোডেকে এই চিঠি দিয়েছিলেন শচীন বাঁকর।
পুলিশ এই তিনজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে, তবে তদন্তে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে এই তিনজন ব্যক্তিও সম্ভবত অমিত সোলুঙ্কে দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। সোলুঙ্কে তাদের বরাত পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং সম্ভবত তাদের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিলেন।
অমিত সোলুঙ্কের অন্তর্বর্তী জামিন
প্রধান অভিযুক্ত অমিত সোলুঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিই এই পুরো জালিয়াতি করেছেন, জাল নথি তৈরি করেছেন এবং নিজের পরিচয় গোপন করে পরিকল্পনাটি অনুমোদনের চেষ্টা করেছিলেন। তবে, দায়রা আদালত সোলুঙ্কেকে অন্তর্বর্তীকালীন স্বস্তি দিয়ে আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে। আদালত জানিয়েছে, তার কোনও অপরাধমূলক রেকর্ড নেই এবং তিনি জলগাঁও জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
আদালত আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সোলুঙ্কেকে পুলিশ তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে এবং নির্ধারিত শর্তাবলী অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এরই মধ্যে সায়ন থানার পুলিশ পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং পূর্বে অভিযুক্তদের ভূমিকাও পুনরায় খতিয়ে দেখছে।
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে
এই জালিয়াতি মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একদিকে যেখানে বিজেপি নেতার নাম সামনে আসা শাসক দলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে তদন্তকারী সংস্থাগুলির কঠোরতা পুরো বিষয়টির গুরুত্ব স্পষ্ট করে। পুলিশ এখন এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে যে এই জালিয়াতির পেছনে কোনও বড় চক্র আছে কিনা।