এই মুহূর্তে বর্ষা প্রায় সারা দেশ জুড়ে বিস্তার লাভ করেছে এবং বৃষ্টির প্রভাব প্রতিটি অঞ্চলে অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে দিল্লি-এনসিআর-এ বর্ষার একটি শক্তিশালী আগমন রেকর্ড করা হয়েছে, ১লা জুলাই থেকে।
আবহাওয়া: এই বছর বর্ষা দেশজুড়ে তার প্রভাব বিস্তার করেছে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (IMD) অনুসারে, আগামী সাত দিনে দেশের বেশিরভাগ অংশে ভালো বৃষ্টিপাত হবে। দিল্লি-এনসিআর সহ উত্তর ভারত, মধ্য ভারত, উত্তর-পূর্ব রাজ্য এবং দক্ষিণ উপদ্বীপীয় অঞ্চলগুলিতে বর্ষা দ্রুত গতিতে সক্রিয় থাকবে। আবহাওয়া দপ্তর বিভিন্ন রাজ্যের জন্য হলুদ এবং কমলা সতর্কতা জারি করেছে, যাতে মানুষ সময় মতো সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে।
দিল্লি এবং এনসিআর-এ সোমবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া শুরু হয়েছে। আবহাওয়া ৫ই জুলাই পর্যন্ত আর্দ্র থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, মেঘলা আকাশ থাকবে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, দিল্লিতে ১লা ও ২রা জুলাই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে, তবে ৩রা থেকে ৫ই জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সাথে বজ্রঝড় ও বিজলী চমকানোর সম্ভাবনা রয়েছে। দিল্লির দিনের তাপমাত্রা ৩২-৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এবং রাতের তাপমাত্রা ২৫-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।
একইভাবে, এনসিআর-এর নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম এবং ফরিদাবাদেও মেঘলা অবস্থা বিরাজ করবে। বিদ্যুতের ঝলকানির সম্ভাবনা বিবেচনা করে, আবহাওয়া দপ্তর জনগণকে খোলা মাঠে বা গাছের নিচে না দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে।
মধ্য ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা
মধ্য ভারতের রাজ্যগুলি যেমন মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, বিদর্ভ এবং ঝাড়খণ্ডেও বর্ষা সক্রিয় থাকবে। এই রাজ্যগুলিতে আগামী ৭ দিনে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, পূর্ব মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে ১লা, ৩রা এবং ৪ঠা জুলাই তীব্র বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে যে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা আর্দ্র বাতাসের কারণে ওড়িশা, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডেও ১লা থেকে ৪ঠা জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইবে।
উত্তর ভারতেও বৃষ্টি হবে
হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং পূর্ব রাজস্থানের জন্য ৬ই জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হরিয়ানা ও চণ্ডীগড়েও ৫ই ও ৬ই জুলাই ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর ১লা জুলাই উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে, কারণ এখানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশেও বজ্রপাত ও দমকা হাওয়ার সাথে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতেও ভারী বৃষ্টি
আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতেও আগামী ৭ দিন প্রতিকূল আবহাওয়া পরিস্থিতি থাকবে। ২রা ও ৩রা জুলাই আসাম ও মেঘালয় সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, ৬ই জুলাই মেঘালয় এবং আশেপাশের রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আইএমডি উত্তর-পূর্বের পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধস এবং নদীর জলস্তর বৃদ্ধির সতর্কতাও জারি করেছে।
দক্ষিণ ভারতেও ভারী বৃষ্টিপাত
দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যগুলিতেও বর্ষা গতি ধরেছে। উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কেরালা, কর্ণাটক এবং লাক্ষাদ্বীপে আগামী ৭ দিনে বেশ কয়েকটি স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ২রা থেকে ৪ঠা জুলাই কেরল এবং মাহেতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে ৬ই জুলাই পর্যন্ত কর্ণাটকের উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তর অনুসারে, দক্ষিণ উপদ্বীপীয় ভারতে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিবেচনা করে কৃষক ও মৎস্যজীবীদের তাদের চাষাবাদ ও সমুদ্রযাত্রার পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন যে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর উভয় দিক থেকেই আসা আর্দ্র বাতাস বর্ষার গতিকে ত্বরান্বিত করেছে। ফলে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে মেঘ একই সাথে সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যার কারণে আগামী ৫-৭ দিন বৃষ্টির চক্র বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।