চম্বল নদীর জল বৃদ্ধি: মোরেইনায় বন্যা পরিস্থিতি, গ্রামগুলি জলমগ্ন

চম্বল নদীর জল বৃদ্ধি: মোরেইনায় বন্যা পরিস্থিতি, গ্রামগুলি জলমগ্ন

চম্বল নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় মোরেইনা জেলায় তা বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নদীর জলস্তর আরও ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৪২.৬০ মিটারে পৌঁছেছে, যার ফলে সবलगড়, মোরেইনা, আম্বাহ এবং পোরসা তহসিলের অনেক গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। নিচু এলাকাগুলোতে জল ঘরবাড়িতে ঢুকে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, এবং গ্রামবাসীরা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে বাধ্য হয়েছে।

উদ্ধার অভিযানে গতি

পরিস্থিতি গুরুতর দেখে প্রশাসন ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ ত্বরান্বিত করেছে। এসডিআরএফের দলগুলো আধ ডজনের বেশি গর্ভবতী মহিলাকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে গেছে, এবং এক ডজনের বেশি গ্রাম থেকে লোকজনকে উদ্ধার করে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই নিরাপদ আশ্রয় শিবিরগুলোতে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশাসন গ্রামবাসীদের নদীর ধারে যেতে নিষেধ করেছে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছে।

পুরোনো সেতুর ৭ ফুট উপর দিয়ে বইছে জল

রাজস্থান সীমান্ত এলাকায় ভারী বৃষ্টির কারণে চম্বল নদীর জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। মোরেইনার রাজঘাট এলাকায় নদীর জল পুরনো সেতুর প্রায় ৫ থেকে ৭ ফুট উপর দিয়ে বইছে, যার ফলে আশেপাশের গ্রামগুলোতে ভয় ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও কিছু গ্রামবাসীকে বন্যার জলে বাচ্চাদের সাথে খেলতে এবং গবাদি পশুদের স্নান করাতে দেখা গেছে, অন্যদিকে কিছু যুবককে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের চেষ্টায় তীব্র স্রোতে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দেখা গেছে। এই পরিস্থিতি প্রশাসনের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কোটা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে

আবহাওয়া দপ্তর ও প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলায় এই বর্ষা মরসুমের ৬০ দিনে গড়ে ৭০৮ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। বৃহস্পতিবার দুপুর ২:৩০ মিনিটে রাজস্থানের কোটা ব্যারেজের তিনটি গেট খুলে প্রায় ৩৫,০০০ কিউসেক জল চম্বল নদীতে ছাড়া হয়েছে। এর প্রভাব আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেখা যেতে পারে। এর ফলে মहुआ থানা এলাকার গড়িয়া রায়পুর, খুর্দ রায়পুর, খো বীজলা এবং নাগরা থানা এলাকার ভূপ কা পুরা, সাহস কা পুরা ও কাছিপুরা গ্রামগুলোতে চম্বলের জল ছড়িয়ে পড়েছে। মাঠ ও ঘরবাড়িতে জল ঢোকায় ফসল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে, যার ফলে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

ঘরোয়া সামগ্রীর ক্ষতি

যে গ্রামগুলোতে জল ঘর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, সেখানে ঘরোয়া জিনিসপত্রেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন ওই এলাকার লোকজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে, যেখানে থাকা, খাওয়া ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে, মেঘের মধ্যে হালকা রোদ ওঠায় আর্দ্রতা বেড়েছে, যার ফলে মানুষজন গরম ও আর্দ্রতায় ভুগছেন। প্রশাসন পরিস্থিতির উপর लगातार নজর রাখছে এবং যেকোনো জরুরি অবস্থা মোকাবেলার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রয়েছে।

Leave a comment