চন্দ্রশেখর আজাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, ন্যায়বিচারের আর্জি

চন্দ্রশেখর আজাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, ন্যায়বিচারের আর্জি

উত্তর প্রদেশের নগীনা লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ এবং আজাদ সমাজ পার্টি (কাँশিরাম)-এর প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ আবারও বিতর্কে জড়িয়েছেন। পিএইচডি স্কলার ড. রোহিনী ঘাভরি তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন।

নয়াদিল্লি: আজাদ সমাজ পার্টি (কাঁশিরাম)-এর জাতীয় সভাপতি এবং নগীনা থেকে সাংসদ চন্দ্রশেখর আজাদ আবারও বিতর্কে জড়িয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পিএইচডি স্কলার ড. রোহিনী ঘাভরি গুরুতর অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি চিঠি লিখে ন্যায়বিচার চেয়েছেন। রোহিনী চিঠিতে অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ভাষায় লিখেছেন, “আমি ভারতের মেয়ে হিসেবে সর্বদা দেশের সম্মান বাড়ানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু এখন আমার আত্মসম্মানের লড়াই।”

ড. রোহিনী ঘাভরি তাঁর চিঠিতে বলেছেন যে তিনি এর আগে জাতীয় মহিলা কমিশন এবং দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে তাঁর অভিযোগ পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁর মতে, এই ঘটনা তাঁর জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে এবং সমাজের কিছু মানুষ একজন নারীকে অপমান করতে ব্যস্ত, অথচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

'দোষীকে কেন শাস্তি দেওয়া হয় না?'

প্রধানমন্ত্রী মোদীকে লেখা চিঠিতে রোহিনী প্রশ্ন তুলেছেন যে সমাজে দোষী পুরুষের জন্য কোনও শব্দ বা শাস্তি নেই কেন, অথচ একজন নারীকে রক্ষিতা, বেশ্যা-র মতো অপমানজনক শব্দ ব্যবহার করা হয়। তিনি লিখেছেন: আমি দীর্ঘদিন ধরে ভয়, হতাশা এবং অবসাদে ছিলাম, কিন্তু এখন এত সাহস জুটিয়েছি যে ন্যায়বিচার এবং আত্মসম্মানের জন্য লড়াই করতে পারি। এটা শুধু আমার নয়, কোটি কোটি নারীর লড়াই। রোহিনী চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন যাতে তাঁকে ন্যায়বিচার দেওয়া হয়, যাতে অন্যান্য মহিলারাও তাঁদের অধিকারের জন্য রুখে দাঁড়াতে সাহস পান।

ড. রোহিনী ঘাভরি চন্দ্রশেখর আজাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন যে চন্দ্রশেখর তাঁর সঙ্গে তাঁর সম্মতি ছাড়াই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং যখন তিনি এর প্রতিবাদ করেন, তখন তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, রোহিনীর অভিযোগ, ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁকে মানসিক দিক থেকেও নির্যাতন করা হয়েছে।

এই গুরুতর অভিযোগের কারণে রোহিনী দিল্লি পুলিশ, জাতীয় মহিলা কমিশন এবং অন্যান্য আইনি সংস্থায় অভিযোগ দায়ের করেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।

রাজনীতিতে চাঞ্চল্য

এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চন্দ্রশেখর আজাদের নাম উত্তর প্রদেশে একজন শক্তিশালী দলিত নেতা হিসাবে পরিচিত এবং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি ক্রমাগত সক্রিয় রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও হুমকির অভিযোগ নিঃসন্দেহে তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তিতে গভীর আঘাত হানতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই মামলার নিরপেক্ষ তদন্ত হয়, তবে এটি দেশে নারীদের কণ্ঠকে শক্তিশালী করার একটি উদাহরণ হতে পারে। একই সঙ্গে, এটি প্রশ্ন তোলে যে মহিলা কমিশন এবং পুলিশের মতো সংস্থাগুলি এত সংবেদনশীল বিষয়ে এত ধীরগতিতে কেন কাজ করে।

ভুক্তভোগীর আবেগপূর্ণ বার্তা

চিঠিতে রোহিনী ঘাভরি লিখেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের দেশের আইন প্রত্যেক মেয়েকে ন্যায়বিচার দিতে পারে। দয়া করে আমাকে ন্যায়বিচার দিন, যাতে আমার মতো আরও অনেক মেয়ের আস্থা তৈরি হয়।” তাঁর এই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার পরেই বিভিন্ন মহিলা অধিকার সংগঠন সমর্থন জানাতে শুরু করেছে।

Leave a comment