চোখে একটানা ব্যথা: কারণ, লক্ষণ ও কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?

চোখে একটানা ব্যথা: কারণ, লক্ষণ ও কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?

চোখে একটানা ব্যথাকে অবহেলা করা উচিত নয়। এটি ড্রাই আই, কনজাংটিভাইটিস, সাইনাস ইনফেকশন, গ্লুকোমা বা ইউভাইটিসের মতো সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে কাজ করা, ঘুমের অভাব এবং চোখের উপর চাপ দেওয়াও ব্যথা বাড়াতে পারে। সময়মতো পরীক্ষা এবং সতর্কতা জরুরি।

চোখে একটানা ব্যথা: অনেক লোকের চোখে একটানা ব্যথা, জ্বালাপোড়া, শুষ্কতা বা আলোতে অস্বস্তি (চোখে বিঁধে যাওয়া) এর মতো সমস্যা হয়, যা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। ডঃ এ. কে. গ্রোভারের মতে, এটি ড্রাই আই সিন্ড্রোম, কনজাংটিভাইটিস, সাইনাস ইনফেকশন, গ্লুকোমা বা ইউভাইটিসের মতো রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে কাজ করা, ঘুমের অভাব বা রক্তচাপের অস্বাভাবিকতাও এর কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে চোখকে বিশ্রাম দিন, স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কম রাখুন, পর্যাপ্ত ঘুমোন এবং যেকোনো লালচে ভাব বা গুরুতর লক্ষণে অবিলম্বে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।

চোখে ব্যথার সাধারণ কারণ

অনেক সময় চোখে হালকা ব্যথা দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিন ব্যবহার, ঘুমের অভাব বা চোখের উপর বেশি চাপ দেওয়ার কারণেও হতে পারে। একটানা মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভি স্ক্রিন দেখার ফলে চোখে ক্লান্তি এবং ভারি ভাব অনুভূত হয়। শুষ্ক চোখও ব্যথা ও জ্বালাপোড়ার একটি সাধারণ কারণ হতে পারে।

তবে, যদি ব্যথা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয় এবং দৈনন্দিন কার্যকলাপে প্রভাব ফেলে, তবে এটি কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। ডঃ এ. কে. গ্রোভারের মতে, চোখে একটানা ব্যথা কখনও কখনও মাথা বা কপাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।

অন্যান্য লক্ষণ যা গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত দেয়

চোখে একটানা ব্যথার সাথে অন্যান্য অনেক লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে চোখে জ্বালাপোড়া, শুষ্কতা, জল পড়া, আলোতে অস্বস্তি বা ঝাপসা দেখা। কিছু লোকের মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব বা চোখের চারপাশে চাপের অভিজ্ঞতাও হতে পারে।

যদি চোখে ব্যথার সাথে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল মনে হয়, চোখ লাল এবং ফোলা দেখায়, অথবা আলোতে সমস্যা হয়, তবে এটি সংক্রমণ বা কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে। এই লক্ষণগুলি উপেক্ষা করা চোখের দৃষ্টিশক্তির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

চোখে ব্যথা কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে

ডঃ এ. কে. গ্রোভারের মতে, চোখে একটানা ব্যথা বেশ কয়েকটি রোগ বা স্বাস্থ্য অবস্থার সাথে যুক্ত হতে পারে।

  • ড্রাই আই সিন্ড্রোম: চোখে আর্দ্রতার অভাবের কারণে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হয়।
  • কনজাংটিভাইটিস: চোখের সংক্রমণ ব্যথা ও লালচে ভাবের প্রধান কারণ হতে পারে।
  • সাইনাস ইনফেকশন: সাইনাসে সংক্রমণ হলে চোখের চারপাশে চাপ বাড়ে এবং ব্যথা অনুভূত হয়।
  • গ্লুকোমা এবং ইউভাইটিস: এই গুরুতর রোগগুলি চোখের গভীরে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে এবং দৃষ্টিশক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে।
  • স্ক্রিন টাইম এবং ঘুমের অভাব: একটানা স্ক্রিন দেখা এবং ঘুমের অভাব চোখের ক্লান্তি ও ব্যথা বাড়াতে পারে।
  • রক্তচাপের অস্বাভাবিকতা: উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপও চোখে ব্যথার কারণ হতে পারে।

চোখের যত্নে কী করবেন

চোখে একটানা ব্যথা কমাতে এবং চোখকে সুস্থ রাখতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

  • প্রতিদিন চোখকে বিশ্রাম দিন এবং স্ক্রিন থেকে মাঝে মাঝে বিরতি নিন।
  • মোবাইল ও ল্যাপটপের উজ্জ্বলতা কম রাখুন।
  • চোখের পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যবিধির যত্ন নিন।
  • শুষ্কতা অনুভূত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আই ড্রপ ব্যবহার করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুমোন এবং শরীরে জলের পরিমাণ বজায় রাখুন।
  • চোখে জ্বালাপোড়া বা লালচে ভাব হলে অবিলম্বে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করুন।
  • রোদে বাইরে বেরোনোর ​​সময় সানগ্লাস পরুন।

চোখে একটানা ব্যথা সাধারণ ক্লান্তি বা স্ক্রিন টাইমের কারণে হতে পারে, তবে এটি বেশ কয়েকটি গুরুতর রোগের লক্ষণও হতে পারে। ডঃ এ. কে. গ্রোভারের মতে, যদি ব্যথা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয় বা অন্যান্য লক্ষণের সাথে দেখা যায়, তবে এটিকে অবহেলা করা উচিত নয়। চোখের যত্ন, নিয়মিত বিশ্রাম এবং সময়মতো পরীক্ষার মাধ্যমে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। চোখের সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।

Leave a comment