আমেরিকা-চীন বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির খবরে সোমবার অপরিশোধিত তেলের দামে उछাল দেখা গেছে। ব্রেন্ট ক্রুড প্রতি ব্যারেল ৬৬ ডলারের উপরে এবং WTI প্রায় ৬২ ডলারে পৌঁছেছে। দুই দেশের মধ্যে চুক্তির প্রত্যাশা বৈশ্বিক জ্বালানি চাহিদা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে শক্তিশালী করেছে।
Crude Oil: সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে উল্লম্ফন দেখা গেছে, যখন আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতির খবর সামনে আসে। ব্রেন্ট ক্রুড প্রতি ব্যারেল ৬৬ ডলারের উপরে এবং WTI ৬২ ডলারের কাছাকাছি লেনদেন হচ্ছিল। দুই দেশের নেতাদের মধ্যে দ্রুত বৈঠক এবং মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারির বিবৃতি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্বস্তির আশা বাড়িয়েছে। এছাড়াও, আমেরিকার দ্বারা রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ভারত-চীন কর্তৃক আমদানি কমানোর ফলেও বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে।
বাণিজ্য চুক্তির খবরে তেল বাজারে উচ্ছ্বাস
গত কয়েক দিন ধরে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে আলোচনা তীব্র হয়েছে। উভয় দেশের সিনিয়র প্রতিনিধিরা বেশ কয়েকটি বিতর্কিত বিষয়ে একমত হয়েছেন। এই ইতিবাচক ইঙ্গিত তেল বাজারকে শক্তিশালী করেছে। সোমবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ৬৬ ডলারের উপরে পৌঁছেছে, যেখানে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অর্থাৎ WTI ক্রুড প্রায় ৬২ ডলার প্রতি ব্যারেল দরে লেনদেন হতে দেখা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন যে, এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো বিনিয়োগকারীরা এখন বিশ্বব্যাপী চাহিদা নিয়ে আগের মতো উদ্বিগ্ন নন। আমেরিকা ও চীনের অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি ভোক্তা। যদি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হয়, তাহলে বাণিজ্য ও শিল্প কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে তেলের ব্যবহার বাড়ার আশা করা হচ্ছে।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে
বাণিজ্য আলোচনায় ইতিবাচক মনোভাবের পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে ফিরে এসেছে। তেল, স্টক মার্কেট এবং শিল্প ধাতুগুলিতে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে মন্দার ভয়ে যে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিকল্পগুলির দিকে ঝুঁকছিলেন, তারা এখন আবার ঝুঁকিপূর্ণ বাজারগুলিতে ফিরতে শুরু করেছেন।
এশিয়ান বাজারগুলিতেও এই খবরের প্রভাব স্পষ্ট দেখা গেছে। জাপান, চীন এবং ভারতের মতো দেশগুলির শেয়ার বাজারে উল্লম্ফন নথিভুক্ত করা হয়েছে। একই সময়ে, ডলার সূচকে সামান্য পতন ঘটেছে কারণ বিনিয়োগকারীরা আমেরিকান মুদ্রা থেকে অর্থ সরিয়ে কমোডিটি এবং ইক্যুইটি বাজারগুলির দিকে ঝুঁকেছে।
ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের বৈঠকের দিকে নজর

উভয় দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শি জিনপিংয়ের বৈঠক এই সপ্তাহে নির্ধারিত হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুই নেতা একসঙ্গে বসে আলোচনা করবেন। এর আগে তাদের প্রতিনিধিরা বেশ কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছেন।
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের উপর আরোপিত ১০০ শতাংশ শুল্ক "টেবিল থেকে সরিয়ে" দিয়েছে। অর্থাৎ, এখন এই শুল্কগুলি পুনর্বিবেচনা করা হবে। এই খবরটি বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য স্বস্তির মতো এসেছে।
রাশিয়ার উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব
তেলের দাম বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হলো আমেরিকার দ্বারা রাশিয়ার দুটি বড় তেল কোম্পানি Rosneft PJSC এবং Lukoil PJSC-এর উপর আরোপিত নতুন নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ সীমিত করা এবং তার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে কঠিন করে তোলা।
যদিও এই নিষেধাজ্ঞাগুলির কারণে তাৎক্ষণিক কোনো সরবরাহ সংকট দেখা যায়নি, তবে বাজারে এই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে ভবিষ্যতে রাশিয়ান তেলের প্রাপ্যতা হ্রাস পেতে পারে। এই আশঙ্কাই তেলের দামকে উর্ধ্বমুখী করেছে।
ভারত ও চীন রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি কমিয়েছে
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত ও চীনের মতো বড় তেল ক্রেতা দেশগুলি রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি কমিয়েছে। ভারতের অনেক রিফাইনার্স জানিয়েছে যে তারা আগামী মাসগুলিতে রাশিয়া থেকে আসা কার্গো প্রায় শূন্যতে নামিয়ে আনতে পারে। অন্যদিকে, চীনও কিছু ডেলিভারি স্থগিত করেছে।
এই পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিকল্প তেল উৎসের চাহিদার উপর। এখন এশিয়ান দেশগুলির নজর পশ্চিম এশিয়া, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার সরবরাহকারীদের দিকে। এর ফলে সেই অঞ্চলগুলির তেল উৎপাদনকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
 
                                                                        
                                                                             
                                                











