‘আই ফ্লোটার্স’: চোখের সামনে হঠাৎ কালো দাগ, সূক্ষ্ম লাইন বা মাকড়সার জালের মতো কিছু ভেসে বেড়াতে দেখা গেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জ্যোতির্বিদ্যা নয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘আই ফ্লোটার্স’। এটি সাধারণত চোখের ভেতরের জেলি জাতীয় পদার্থ পাতলা হয়ে যাওয়ার ফল। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি হঠাৎ সংখ্যায় বেড়ে যায় বা আলো ঝলকানির সঙ্গে দেখা দেয়, তবে রেটিনার ক্ষতি বা ডায়াবেটিস–হাইপারটেনশনের মতো সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
আই ফ্লোটার্স আসলে কী?
চিকিৎসকদের মতে, প্রত্যেক মানুষের চোখের ভেতর জেলির মতো তরল পদার্থ থাকে। বয়স বাড়লে সেই জেলি পাতলা হতে শুরু করে এবং কোথাও কোথাও জমাট বেঁধে যায়। এই জমাট বাঁধা অংশগুলোর ছায়া রেটিনায় পড়ে, তখনই চোখে কালো বিন্দু, লাইন বা জালের মতো ভাসতে দেখা যায়। একে বলা হয় আই ফ্লোটার্স। সাধারণত এটি ক্ষতিকর নয় এবং অনেক সময় নিজে থেকেই মিলিয়েও যায়।
কখন সতর্ক হওয়া দরকার?
বিশেষজ্ঞদের মতে, আই ফ্লোটার্স সব সময়েই নিরীহ নয়। যদি হঠাৎ করে সংখ্যায় বেড়ে যায় বা চোখে আলোর ঝলকানি দেখা দেয়, তবে তা রেটিনার ক্ষতির ইঙ্গিত হতে পারে। রেটিনা চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ এবং একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা আর মেরামত হয় না। তাই এই লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বয়স ও জীবনযাপনের প্রভাব
চোখের বয়সজনিত পরিবর্তন ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের মতো রোগ থেকেও ফ্লোটার্সের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ল্যাপটপ–মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকা, পর্যাপ্ত জল না খাওয়া বা অনিয়মিত জীবনযাপনও চোখের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করে। তাই জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা বজায় রাখা জরুরি।
কীভাবে প্রতিকার সম্ভব?
সাধারণত আই ফ্লোটার্সের জন্য আলাদা চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। তবে অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চোখের পরীক্ষা করানো জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে স্বল্প চিকিৎসাতেই রেটিনার ক্ষতি রোধ করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফ্লোটার্স নিরীহ হলেও সচেতন না হলে তা গুরুতর সমস্যায় রূপ নিতে পারে।
চোখের সামনে কালো বিন্দু, মাকড়সার জাল বা লাইন ভেসে ওঠাকে বলা হয় ‘আই ফ্লোটার্স’। সাধারণত এটি বয়সজনিত স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও, হঠাৎ বেড়ে গেলে বা আলো ঝলকানি দেখা দিলে তা গুরুতর চক্ষুরোগের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সতর্ক থেকে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়াই একমাত্র উপায়।