FD Mistakes: ভারতে কোটি কোটি মানুষ তাঁদের সঞ্চয়ের বড় অংশ ফিক্সড ডিপোজিটে (FD) রাখেন কারণ একে তাঁরা নিরাপদ বিনিয়োগ বিকল্প মনে করেন। কিন্তু ওয়েলথ ম্যানেজার খুশি মিস্ত্রির মতে, বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) ও করের বোঝার ফলে FD-র প্রকৃত রিটার্ন অনেকটাই নেমে যায়। তিনি সম্প্রতি এক লিঙ্কডইন পোস্টে সতর্ক করেছেন, FD আসলে “গোপন সম্পদ ক্ষয়ের ফাঁদ”, যেখানে বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তার মায়ায় ধীরে ধীরে দরিদ্র হয়ে পড়ছেন।

FD কেন হয়ে উঠছে ‘সম্পদের ফাঁদ’?
খুশি মিস্ত্রির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যক্তি FD থেকে ৭% সুদ পান আর মুদ্রাস্ফীতি থাকে ৬%, তাহলে কার্যকর রিটার্ন হয় মাত্র ১%। তাছাড়া, যদি তিনি ৩০% কর শ্রেণিতে পড়েন, কর কেটে রিটার্ন দাঁড়ায় ৪.৯%-এ।অর্থাৎ, আপনার টাকার প্রকৃত মূল্য বৃদ্ধি নয়, বরং স্থির বা নিম্নমুখী হচ্ছে—যা দীর্ঘমেয়াদে আপনাকে আর্থিকভাবে দুর্বল করতে পারে।
FD বনাম অন্যান্য বিনিয়োগ: পার্থক্য চোখে পড়ার মতো
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক—২০১০ সালে কেউ যদি ১০ লক্ষ টাকা FD-তে রাখতেন, আজ তা হতো প্রায় ২০ লক্ষ। কিন্তু একই সময়ে সোনায় বিনিয়োগ করলে সেই অর্থ দাঁড়াত ৪০ লক্ষে, নিফটিতে ৫০ লক্ষ বা তারও বেশি, আর রিয়েল এস্টেটে ৩০–৫০ লক্ষ টাকায়।অর্থনীতিবিদদের মতে, এ থেকেই স্পষ্ট—FD সম্পূর্ণ নিরাপদ হলেও, এর লাভজনকতা তুলনামূলকভাবে কম।

FD-এর সীমাবদ্ধতা: বিমা ও তারল্য সমস্যাও বড় ফাঁদ
FD-এর আরেকটি বড় সমস্যা হলো সীমিত বিমা সুরক্ষা। DICGC প্রতি ব্যাঙ্কে প্রতি আমানতকারীর জন্য মাত্র ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্তই সুরক্ষা দেয়।অন্যদিকে, মেয়াদপূর্তির আগে টাকা তুলতে গেলে জরিমানা দিতে হয়, যা FD-কে আরও অনমনীয় করে তোলে। ফলে, প্রয়োজনে দ্রুত নগদ টানার সুযোগও সীমিত হয়ে যায়।

কখন করবেন FD, কখন নয়: বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
বিশেষজ্ঞদের মতে, FD একেবারে খারাপ নয়, তবে এটি অতিরিক্ত ব্যবহার করা ঠিক নয়। স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্য, জরুরি তহবিল বা সিনিয়র সিটিজেনদের মূলধন রক্ষার জন্য এটি উপযুক্ত। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ গঠনের জন্য শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড বা SIP-এর মতো বিকল্প বিনিয়োগের দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

অনেকে ফিক্সড ডিপোজিটকে নিরাপদ বিনিয়োগ মনে করেন। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি ও করের চাপে এর প্রকৃত রিটার্ন অনেক সময়ই কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বুঝে বিনিয়োগ না করলে FD ধীরে ধীরে সম্পদ বাড়ানোর বদলে গোপনে ক্ষয়ও ঘটাতে পারে।













