ফিরোজাবাদের ১০০ বছরের রামলীলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করল সুপ্রিম কোর্ট

ফিরোজাবাদের ১০০ বছরের রামলীলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করল সুপ্রিম কোর্ট
সর্বশেষ আপডেট: 2 ঘণ্টা আগে

সুপ্রিম কোর্ট উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদ জেলার রামলীলা উৎসবের উপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আপাতত প্রত্যাহার করেছে। উৎসবটি গত ১০০ বছর ধরে চলে আসছে। আদালত শর্ত দিয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা হবে না।

নয়াদিল্লি। সুপ্রিম কোর্ট উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদ জেলার একটি বিদ্যালয়ে আয়োজিত রামলীলা উৎসবের উপর এলাহাবাদ হাইকোর্ট কর্তৃক আরোপিত স্থগিতাদেশ আপাতত প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া এবং বিচারপতি এন কোটেশ্বর সিংয়ের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেছে। আদালত এই শর্তে অনুমতি দিয়েছে যে, উৎসব চলাকালীন বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর কোনো সমস্যা হওয়া উচিত নয়।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে, এই রামলীলা উৎসব গত ১০০ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত হয়ে আসছে এবং এটিকে থামানো ঠিক হবে না।

এলাহাবাদ হাইকোর্টের আদেশের উপর সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ

সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছে যেখানে বলা হয়েছিল যে, স্কুলের মাঠে ধর্মীয় উৎসব আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হবে না। আদালত স্পষ্ট করেছে যে, এই উৎসব দীর্ঘদিন ধরে চলছে এবং এর আয়োজনে কোনো বাধা হওয়া উচিত নয়।

আদালত তার আদেশে বলেছে যে, রামলীলা উৎসব এই বছর ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এবং এটিকে বন্ধ করলে শিক্ষার্থী ও সম্প্রদায়ের অপ্রয়োজনীয় সমস্যা হবে। এর পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্ট ইউপি সরকারকে নোটিশ জারি করেছে এবং মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে।

সুপ্রিম কোর্টের শর্তাবলী

সুপ্রিম কোর্ট রামলীলার আয়োজনের অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি কিছু শর্তও রেখেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান শর্ত হলো, উৎসব চলাকালীন বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর কোনো অসুবিধা বা সমস্যা হওয়া উচিত নয়।

এছাড়াও, আদালত হাইকোর্টকে বলেছে যে, তারা আসন্ন শুনানিতে অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের (হিতधारकों) মতামতও শুনবে এবং ভবিষ্যতে এই উৎসবের জন্য অন্য কোনো স্থানের প্রস্তাব বিবেচনা করবে।

সুপ্রিম কোর্ট আবেদনকারীর সমালোচনা করেছে

বেঞ্চ আবেদনকারী প্রদীপ সিং রানার সমালোচনা করেছে যে, তিনি আগে অভিযোগ করেননি এবং উৎসব শুরু হওয়ার পরেই এই বিষয়টি আদালতে এনেছেন। আদালত বলেছে যে, রামলীলা ১০০ বছর ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে এবং আবেদনকারী এই তথ্যটি আগে কেন স্বীকার করেননি।

সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছে যে, আবেদনকারী শিক্ষার্থীও নন এবং তাদের অভিভাবকও নন, তবুও তারা উৎসব বন্ধ করার চেষ্টা কেন করেছেন। আদালত এই বিষয়ে কড়া মন্তব্য করে বলেছে যে, তাদের আগেই আদালতের দ্বারস্থ হওয়া উচিত ছিল।

রামলীলা উৎসব এবং এর ঐতিহাসিকতা

ফিরোজাবাদে রামলীলা উৎসব গত ১০০ বছর ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে এবং এটি স্থানীয় সম্প্রদায় ও শিক্ষার্থীদের জন্য সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করেছে যে, দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা এই উৎসব বন্ধ করা শুধু সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভুল হবে না বরং শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় সম্প্রদায়ের স্বার্থের পরিপন্থীও হবে।

ইউপি সরকারকে নোটিশ

সুপ্রিম কোর্ট ইউপি সরকারকে নোটিশ জারি করেছে যাতে আসন্ন শুনানিতে সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারে। একই সাথে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা ভবিষ্যতে অন্য কোনো স্থানের জন্য প্রস্তাব পেশ করবে, যাতে রামলীলা উৎসব সুষ্ঠুভাবে আয়োজিত হতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের কড়া মন্তব্য

সুপ্রিম কোর্ট আবেদনকারীর দেরিতে কড়া মন্তব্য করে বলেছে যে, এই বিষয়ে সময়মতো অভিযোগ না করা বোধগম্য নয়। যদি আগে অভিযোগ করা হতো, তবে হয়তো আরও দ্রুত সমাধান পাওয়া যেত। এছাড়াও আদালত হাইকোর্টের এই ধারণার উপরও মন্তব্য করেছে যে, ধর্মীয় উৎসব স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজন করা যায় না।

Leave a comment