প্রয়াগরাজের গঙ্গা তটে অবস্থিত ওঁকার গণেশ মন্দিরকে সৃষ্টির প্রথম গণেশ মন্দির হিসেবে মনে করা হয়। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী প্রজাপতি দৈত্যদের থেকে রক্ষা করার জন্য এটি স্বয়ং স্থাপন করেছিলেন। এখান থেকেই গণেশ আরাধনা এবং ওঁকারের প্রথম ঘোষণা হয়েছিল। বর্তমানে ভক্তরা বন্যার মধ্যে জল পেরিয়েও পূজা করছেন।
First Ganesh Temple: গণেশ চতুর্থীর পবিত্র উপলক্ষ্যে সঙ্গম নগরী প্রয়াগরাজের ওঁকার গণেশ মন্দিরে ভক্তদের ভিড় বাড়ছে। এই মন্দিরটি সৃষ্টির প্রথম গণেশ মন্দির হিসেবে বিবেচিত হয়, যা প্রজাপতি দৈত্যদের কুদৃষ্টি থেকে সৃষ্টিকে রক্ষা করার জন্য স্বয়ং স্থাপন করেছিলেন। এখান থেকেই গণেশ আরাধনা এবং ওঁকারের প্রথম ঘোষণা হয়েছিল। আকবরের অর্থমন্ত্রী টোডরমল এর সংস্কার করেছিলেন। বর্তমানে গঙ্গার বন্যা সত্ত্বেও ভক্তরা জলে নেমে আদি গণেশের পূজা করছেন।
আদি গণেশের পৌরাণিক তাৎপর্য
মন্দিরের পুরোহিত অরুণ আগরওয়াল জানান যে এখান থেকেই প্রথম গণেশ আরাধনার শুরু হয়েছিল। এখান থেকে ওঁকারের প্রথম ঘোষণা হয়েছিল, তাই এই মন্দিরকে ওঁকার গণেশ মন্দিরও বলা হয়। প্রজাপতি সৃষ্টিকে দৈত্যদের কুদৃষ্টি থেকে বাঁচানোর জন্য গণপতিকে বিঘ্নরাজ রূপে স্বয়ং নিজের হাতে স্থাপন করেছিলেন। এই কারণে তাঁর নাম আদি গণেশ। এই মন্দির ভারতীয় ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।
আকবরের মন্ত্রী টোডরমলের অবদান
ইতিহাসে উল্লেখ আছে যে আকবরের অর্থমন্ত্রী টোডরমল স্বয়ং গণপতির ভক্ত ছিলেন। তিনি গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এই গণেশ মন্দিরের সংস্কার করিয়েছিলেন এবং ভগবান গণেশের আদি রূপকে নতুন রূপ দিয়েছিলেন। এর প্রমাণ আজও মন্দিরে বিদ্যমান। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এখানে গণপতিকে অলঙ্কার দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়।
বন্যা সত্ত্বেও ভক্তদের শ্রদ্ধা
এই মুহূর্তে প্রয়াগরাজ বন্যার কবলে এবং গঙ্গা নদীর স্রোত আদি গণেশ মন্দিরে প্রবেশ করেছে। মন্দিরের অর্ধেক অংশ জলমগ্ন হয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও ভক্তরা উৎসাহ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে গঙ্গার জলে নেমে ভগবান গণেশের পূজা করছেন। এই দৃশ্য ভক্তদের অটল শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের পরিচয় দেয়।
আদি গণেশ মন্দির কেবল একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে গণেশ আরাধনার শুরু এবং ওঁকারের ঘোষণা হয়েছিল। এই মন্দির স্থাপনের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র সৃষ্টিকে দৈত্যদের হাত থেকে বাঁচানো নয়, বরং মানুষের মধ্যে ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়াও।
উৎসবের মেজাজ ও ভক্তদের অংশগ্রহণ
গণেশ চতুর্থীর উপলক্ষে মন্দির চত্বরে ভক্তদের প্রচুর ভিড় থাকে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভগবান গণেশের দর্শন ও পূজায় অংশ নেন। মন্দিরে প্রতিদিনের শৃঙ্গার ও ভজন-কীর্তন ভক্তদের আধ্যাত্মিক সুখ প্রদান করে। এছাড়াও ভক্তরা গঙ্গা জলে স্নান করে পবিত্রতা অনুভব করেন।
মন্দিরের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য
আদি গণেশ মন্দিরের গঠন এবং ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি ও প্রমাণ বিদ্যমান। এই মন্দির ধর্মীয় বিশ্বাসের পাশাপাশি পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার স্থাপত্য, প্রত্নতাত্ত্বিক অবশেষ এবং পূজার ঐতিহ্য আজও ভক্তদের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
গঙ্গা নদীর তীরে মন্দিরটির অবস্থান হওয়ার কারণে এটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। গঙ্গা জলে স্নান ও পূজা করার মাধ্যমে ভক্তদের মন ও শরীর উভয়ই পবিত্র হয়। বন্যা সত্ত্বেও ভক্তদের উৎসাহ কম হয়নি এবং তারা জলমগ্ন মন্দিরে ভগবান গণেশের আরাধনায় মগ্ন আছেন।