কোলন ক্যানসার বাড়ছে দ্রুত
বিশ্বজুড়ে কোলন বা বৃহৎ অন্ত্রের ক্যানসার মারাত্মক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। একসময় কেবল বয়স্কদের মধ্যে দেখা যেত এই রোগ, এখন তরুণরাও এর শিকার হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থূলতা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও অ্যালকোহল এর অন্যতম কারণ।কোলন ক্যানসার তরুণদের মধ্যেও দ্রুত ছড়াচ্ছে, কারণ খারাপ খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল।
মৃত্যুর দ্বিতীয় বড় কারণ
আমেরিকার মতো দেশে কোলন ক্যানসার এখন মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। তবে আশার খবর, সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে—কিছু নির্দিষ্ট সবজি প্রতিদিন খেলে এই ঝুঁকি ২০% পর্যন্ত কমানো যায়।গবেষণা বলছে, নির্দিষ্ট সবজি খেলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি এক-পঞ্চমাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
ব্রোকলি, বাঁধাকপি ও কেলের জাদু
যাঁরা প্রতিদিন ৪০-৬০ গ্রাম ব্রোকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি বা কেল খান, তাঁদের কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ২০-২৬% কমতে দেখা গেছে। কারণ এই সবজিতে থাকে সালফোরাফেন নামক উপাদান, যা শরীর পরিষ্কার রাখতে ও ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামতে সাহায্য করে।ক্রুসিফেরাস সবজি যেমন ব্রোকলি ও বাঁধাকপি কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকরী।
গবেষণার বার্তা
BMC গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে—৬০ গ্রামের বেশি খেলে বাড়তি কোনও উপকার পাওয়া যায় না। তাই ভারসাম্য রেখে খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।অতিরিক্ত নয়, পরিমিত সবজি খাওয়াই ক্যানসার প্রতিরোধের চাবিকাঠি।
ক্রুসিফেরাস সবজির শক্তি
ব্রোকলি, ফুলকপি, কেল বা ব্রাসেলস স্প্রাউট—সবক’টিই ভরপুর ফাইবার, ভিটামিন সি ও ফ্ল্যাভোনয়েডে। বিশেষ করে সালফোরাফেন, যা সবজি কাটলে বা চিবোলে তৈরি হয়, ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে কাজ করে।সালফোরাফেন নামক উপাদান ক্যানসারের কোষের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে।
ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক অস্ত্র
সালফোরাফেন শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে, প্রদাহ কমায় ও ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত করে। এই কারণেই ক্রুসিফেরাস সবজি ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকরী ঢাল।ডিটক্স ও প্রদাহ কমিয়ে ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে সালফোরাফেন।
প্ল্যান্ট-বেসড খাদ্যের গুরুত্ব
উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৪৬% এবং রেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি ৭৩% পর্যন্ত কমানো যায়। ওটস বা ব্রাউন রাইসের মতো গোটা শস্যও ঝুঁকি ১৭% পর্যন্ত কমাতে সক্ষম।প্ল্যান্ট-বেসড খাদ্য ও গোটা শস্য ক্যানসার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
জীবনযাত্রার পরিবর্তনই সমাধান
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল ও ডাল খাওয়া, লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম ও মেডিক্যাল চেকআপ—এই অভ্যাসগুলো কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম ও চেকআপ কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে অপরিহার্য।