সংবিধানের প্রতি রাহুল গান্ধীর দ্বিমুখী আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত

সংবিধানের প্রতি রাহুল গান্ধীর দ্বিমুখী আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত

রাহুল গান্ধীকে সংবিধানের প্রতি দ্বিমুখী মনোভাবের জন্য আক্রমণ করলেন গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত এবং সংসদে গঠনমূলক আলোচনার আহ্বান জানালেন।

Gajendra Singh Shekhawat: সংসদের বাদল অধিবেশন যত এগিয়ে আসছে, দেশের রাজনীতি ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে বাকযুদ্ধ তীব্রতর হয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি রাহুল গান্ধীর সাম্প্রতিক সাংবিধানিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর কথা ও কাজের মধ্যেকার স্ববিরোধিতা তুলে ধরেন এবং তাঁকে ‘বিশ্বস্ততার দিকে নজর দিতে’ উপদেশ দেন।

সংবিধানের প্রতি সম্মান কেবল পকেটে নয়, আচরণেও থাকা উচিত

সম্প্রতি রাহুল গান্ধী সংসদে সংবিধানের একটি কপি পকেটে নিয়ে এসেছিলেন, যা কংগ্রেস প্রতীকীভাবে সংবিধান রক্ষার সংকল্পের সঙ্গে যুক্ত করেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেখাওয়াত এই বিষয়ে কটাক্ষ করে বলেন: 'সংবিধানের কপি পকেটে রাখা এবং একই সাথে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা—এই স্ববিরোধিতা স্পষ্ট। এতে রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।' শেখাওয়াতের মতে, শুধুমাত্র প্রতীকী পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সম্মান আচরণে প্রতিফলিত হওয়া উচিত।

জরুরি অবস্থার সময় কংগ্রেস সংবিধানের হত্যা করেছিল

গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত জরুরি অবস্থার ইতিহাস তুলে ধরে কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন: '১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধী ক্ষমতার লোভে দেশের সংবিধানকে পদদলিত করেছিলেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকারগুলো স্থগিত করা হয়েছিল।' তিনি আরও যোগ করেন যে, জরুরি অবস্থার সময় জয়প্রকাশ নারায়ণের মতো নেতাদের গ্রেফতার এবং প্রভাষ যোশীর মতো সাংবাদিকদের উদ্দীপক লেখা দেশে গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

রাহুল গান্ধীর রাজনীতি কেবল বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ

গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সাংবিধানিক বিষয়গুলো রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য ব্যবহারের অভিযোগও করেন। 'তিনি নিজেই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর অভিযোগ করেন, আবার তাদের বাঁচানোর কথাও বলেন। জনগণ সব দেখছে এবং বুঝছে যে এটা কেবল রাজনৈতিক লোক দেখানো।' শেখাওয়াতের মতে, রাহুল গান্ধীর মনোভাব সুবিধামতো সংবিধান ব্যবহারের মতো হয়ে গেছে, যা দীর্ঘমেয়াদে জনগণের আস্থা দুর্বল করে দেয়।

সংসদকে বিশৃঙ্খলা নয়, আলোচনার মঞ্চ করুন

সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশন নিয়ে শেখাওয়াত স্পষ্ট করে বলেন যে, এই অধিবেশন দেশের জন্য অনেক মৌলিক ও নীতি-নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ। 'সংসদ গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় মঞ্চ। এখানে জনগণের আওয়াজ শোনা উচিত, রাজনৈতিক গোলমাল নয়। আমি সকল সদস্যের কাছে আবেদন করছি, সংসদকে গঠনমূলক বিতর্কের কেন্দ্রে পরিণত করুন, বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগের স্থানে নয়।' তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, বিরোধী দল যদি সত্যিই জনগণের স্বার্থে কাজ করতে চায়, তবে তাদের উচিত বিষয়গুলোর উপর কঠিন প্রস্তাব ও যুক্তি নিয়ে আসা, শুধু স্লোগান ও হট্টগোল নয়।

কংগ্রেস বনাম বিজেপি: সংঘাত জারি

যেখানে বিজেপি সংসদে শান্তি ও আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছে, সেখানে কংগ্রেস ক্রমাগত কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করার অভিযোগ করছে। রাহুল গান্ধী সংসদ ও মিডিয়ার মঞ্চে বার বার বলছেন যে সংবিধান ও গণতন্ত্র বিপন্ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘সংবিধান বনাম আচরণ’-এর এই বিতর্ক আগামী দিনে আরও তীব্র হবে, বিশেষ করে যখন দেশ ধীরে ধীরে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে।

Leave a comment