হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ আসে না, বরং শরীর আগে থেকেই বেশ কিছু সতর্কতামূলক সংকেত দেয়, যেমন - বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, কাঁধ-পিঠে ব্যথা, মাথা ঘোরা এবং ঘাম হওয়া। এই লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা না করে সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শ নিলে বড় বিপদ এড়ানো যায় এবং হৃদপিণ্ডকে সুরক্ষিত রাখা যায়।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ: হৃদরোগ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এখন অল্প বয়সিরাও হার্ট অ্যাটাকের শিকার হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাকের আগে শরীর কিছু বিশেষ সংকেত দেয়, যেমন - বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা বা হঠাৎ মাথা ঘোরা এবং ঘাম হওয়া। ডাক্তারদের মতে, এই লক্ষণগুলি যদি সময়মতো শনাক্ত করে পরীক্ষা করানো হয় এবং জীবনযাত্রার উন্নতি করা হয়, তাহলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যেতে পারে।
বুকে ব্যথা বা চাপ
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা। এই ব্যথা সবসময় তীব্র হয় না, বরং অনেক সময় হালকা জ্বালা বা ভারি ভারি লাগার মতোও মনে হতে পারে। কিছু মানুষ এটিকে গ্যাস বা অ্যাসিডিটি ভেবে উপেক্ষা করেন। কিন্তু একটানা এমন অনুভব করা হৃদপিণ্ডের গুরুতর সমস্যার সংকেত হতে পারে।
শ্বাসকষ্ট
হার্ট অ্যাটাকের আগের আরেকটি বড় লক্ষণ হলো শ্বাসকষ্ট। যদি আপনার বিনা পরিশ্রমেও শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় হঠাৎ হাঁপিয়ে ওঠেন, তবে এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এটি হৃদপিণ্ডের উপর বাড়তে থাকা চাপের ইঙ্গিত হতে পারে।
অস্বাভাবিক ক্লান্তি
অনেকে সাধারণ ক্লান্তিকেই বেশি গুরুত্ব দেন না। কিন্তু যদি দৈনন্দিন সাধারণ কাজ করার সময়েও অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব করেন, তবে এটি হার্টের সমস্যার সংকেত হতে পারে। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণটি বেশি দেখা যায় এবং অনেক সময় এটিকে উপেক্ষা করা হয়।
শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা
হার্ট অ্যাটাকের আগে ব্যথা শুধু বুকে সীমাবদ্ধ থাকে না। এটি কাঁধ, পিঠ, বাহু বা চোয়াল পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। ব্যথা একটানা থাকার বদলে বারে বারে হয় এবং চলে যায়। অনেক সময় মানুষ এটিকে পেশীর ব্যথা ভেবে উপেক্ষা করেন, কিন্তু এটি হার্টের সমস্যার প্রাথমিক সংকেত হতে পারে।
মাথা ঘোরা, ঘাম এবং অস্বস্তি
হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকলে শরীর হঠাৎ করে মাথা ঘোরা, ঠান্ডা ঘাম বের হওয়া এবং অস্বস্তির মতো লক্ষণ দেখাতে পারে। এই লক্ষণগুলি প্রায়শই কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই দেখা দেয়। যদি হঠাৎ এমন মনে হয় তবে এটিকে উপেক্ষা করা বিপজ্জনক হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক কেন বাড়ছে
আজকের দ্রুত গতির জীবনে মানুষ তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি কম মনোযোগ দিচ্ছে। ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এবং তেলযুক্ত খাবারের অভ্যাস হৃদপিণ্ডকে দুর্বল করে তুলছে। এর সাথে মানসিক চাপ এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাব হৃদপিণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। রক্তচাপ এবং সুগারের ক্রমবর্ধমান সমস্যাগুলিও হৃদরোগকে আরও গুরুতর করে তুলছে।
সময়মতো শনাক্তকরণ জরুরি
ডাক্তারদের মতে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তখনই বাড়ে যখন মানুষ প্রাথমিক সংকেতগুলি বুঝতে পারে না। বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা, হঠাৎ মাথা ঘোরা বা ঘাম হওয়া – এই সব লক্ষণই হৃদপিণ্ডের সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে। যদি এগুলি সময়মতো শনাক্ত করা যায় এবং দ্রুত পরীক্ষা করানো হয়, তবে বিপদ এড়ানো যেতে পারে।
হৃদরোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি আজ একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি জরুরি যে মানুষ এই লক্ষণগুলিকে হালকাভাবে না নিক এবং সময়মতো সতর্ক হোক। শরীরের ছোট ছোট পরিবর্তন অনেক সময় বড় রোগের ইঙ্গিত দেয়। তাই এগুলি বোঝা এবং মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।