গত আট বছরে হিমাচল প্রদেশে ১৪৮টি মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, ২৯৪ বার বন্যা এবং ৫০০০-এর বেশি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুতর সতর্কবার্তা বলেছেন।
Himachal Disaster Report: হিমাচল প্রদেশে বিগত আট বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত রাজ্যে ১৪৮টি মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও, ২৯৪ বার আকস্মিক বন্যা বিপর্যয় ঘটিয়েছে এবং ৫০০০-এর বেশি ভূমিধসের ঘটনা সামনে এসেছে। কুল্লু, লাহৌল-স্পিতি, কিন্নৌর এবং মান্ডি জেলা দুর্যোগের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল বলে মনে করা হচ্ছে।
পেশ করা হল দুর্যোগের রিপোর্ট
রাজ্যের বিশেষ সচিব (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা) ডিসি রানা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে গঠিত বহু-ক্ষেত্রীয় কেন্দ্রীয় দলের (MSCT) সামনে এই তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আকস্মিক বন্যা, মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং ভূমিধসের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে। হিমবাহ সংকুচিত হচ্ছে এবং তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে, যার কারণে এই দুর্যোগগুলির পুনরাবৃত্তি বাড়ছে। দলটি এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে জমা দেবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক
রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব রাজস্ব কে কে পান্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে MSCT-এর দল অংশ নেয়। এই দলে ছিলেন কর্নেল কে পি সিং (দলনেতা), কেন্দ্রীয় ভবন গবেষণা ইনস্টিটিউট (রুরকি)-এর ডঃ এস কে নেগি, মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ভূ-বিজ্ঞানী অধ্যাপক অরুণ কুমার, ভারতীয় ক্রান্তীয় আবহাওয়া বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট (পুনে)-এর রিসার্চ সায়েন্টিস্ট ডঃ সুস্মিতা জোসেফ এবং আইআইটি ইন্দোরের অধ্যাপক ডঃ নীলিমা সত্যম। এছাড়াও, প্রতিরক্ষা ভূ-তথ্য বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ডঃ নীরজ এবং ভারতীয় ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অতুল ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকের পর দলটি মান্ডি জেলার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
পুনর্বাসন মানদণ্ডে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা
অতিরিক্ত মুখ্য সচিব কে কে পান্ত বলেন, হিমাচলের ভৌগোলিক পরিস্থিতি অন্যান্য রাজ্যের থেকে আলাদা। তাই পুনর্বাসন কাজের জন্য বিদ্যমান মানদণ্ডে পরিবর্তন জরুরি। তিনি কেন্দ্রীয় জল কমিশন এবং ভারতীয় ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে রাজ্যে দুর্যোগের কারণগুলির বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন করার উপর জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি, প্রদেশের সংবেদনশীল অঞ্চলগুলিকে চিহ্নিত করে অগ্রিম সতর্কতা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা জানিয়েছেন।
আধুনিক প্রযুক্তি এবং ডেটা সংগ্রহের উপর জোর
পান্ত প্রস্তাব দিয়েছেন যে, সঠিক ডেটা সংগ্রহের জন্য নিবিড় সেন্সর লাগানোর পরিকল্পনা করা উচিত। এছাড়াও, প্রদেশে বন্যা পূর্বাভাস ইউনিট স্থাপন, হাইড্রোলজিক্যাল নিরীক্ষণ বাড়ানো এবং হিমবাহ হ্রদের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়নও সময়ের দাবি। এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে দুর্যোগে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।