ভারতীয় নৌবাহিনীকে বৃহস্পতিবার 'হিমগিরি' নামক একটি স্টিলথ ফ্রিগেট হস্তান্তর করা হয়েছে। জিআরএসই (GRSE) দ্বারা নির্মিত এই যুদ্ধজাহাজটি প্রোজেক্ট 17A-এর অংশ এবং এটি দেশের সমুদ্র সুরক্ষা ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
Himgiri Frigate: ভারতের সমুদ্র সুরক্ষা এবং শক্তিকে আরও জোরদার করে বৃহস্পতিবার ভারতীয় নৌবাহিনীকে আরও একটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ হস্তান্তর করা হয়েছে। 'হিমগিরি' নামের এই মাল্টি- রোল স্টিলথ ফ্রিগেটটি সম্পূর্ণরূপে ভারতে তৈরি হয়েছে এবং এটি কলকাতা-ভিত্তিক গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (GRSE) নির্মাণ করেছে। এই যুদ্ধজাহাজটি প্রোজেক্ট 17A-এর অধীনে নির্মিত সাতটি স্টিলথ যুদ্ধজাহাজের মধ্যে একটি।
কেন खास 'হিমগিরি'?
হিমগিরি একটি অত্যাধুনিক দেশীয় যুদ্ধজাহাজ, যা আধুনিকতম প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এটির দৈর্ঘ্য ১৪৯ মিটার এবং ওজন প্রায় ৬৬৭০ টন। এই মাল্টি- রোল ফ্রিগেটটি আকাশ, জল এবং ভূমি থেকে আসা বিপদ মোকাবেলায় সক্ষম। এর নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে এটি রাডারের দৃষ্টি এড়িয়ে চলতে পারে, যে কারণে এটি একটি 'স্টিলথ' যুদ্ধজাহাজ।
পুরোপুরি দেশীয় নির্মাণ
হিমগিরির নির্মাণ 'মেক ইন ইন্ডিয়া' উদ্যোগের অধীনে করা হয়েছে, যা কেবল নৌবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করেনি, সেই সঙ্গে দেশের আত্মনির্ভরতার দিকেও একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই যুদ্ধজাহাজের নকশা এবং নির্মাণে ভারতের ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ভূমিকা রয়েছে।
প্রোজেক্ট 17A: ভারতের महत्वाकांक्षी নৌসেনা প্রোগ্রাম
প্রোজেক্ট 17A হল ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি প্রধান জাহাজ নির্মাণ কর্মসূচি, যার অধীনে মোট সাতটি স্টিলথ ফ্রিগেট তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে চারটি মুম্বাইয়ের মাজগাঁও ডকস (MDL)-এ এবং তিনটি কলকাতার জিআরএসই (GRSE)-তে তৈরি হচ্ছে। এই প্রোজেক্টের মোট আনুমানিক খরচ প্রায় ৪৫,০০০ কোটি টাকা।
এর আগে প্রোজেক্ট 17A-এর অধীনে জানুয়ারি ২০২৪-এ INS নীলগিরি-কে ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ১ জুলাই মুম্বাইয়ে নির্মিত 'উদয়গিরি'-কেও নৌবাহিনীকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এখন 'হিমগিরি'-র অন্তর্ভুক্তিতে এই ধারাবাহিকতা আরও এগিয়ে গেল। পরিকল্পনা রয়েছে ২০২৫ সালের অগাস্ট মাসের মধ্যে এই ফ্রিগেটগুলোকে নৌবাহিনীতে যুক্ত করার।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত
হিমগিরির মতো যুদ্ধজাহাজগুলোকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে তারা একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অপারেশন চালাতে পারে। এর মধ্যে অ্যান্টি-সাবমেরিন, অ্যান্টি-এয়ার এবং অ্যান্টি-সারফেস ওয়ারফেয়ার অন্তর্ভুক্ত। এতে লাগানো প্রযুক্তিগুলো একে শত্রুর নজর থেকে বাঁচায় এবং যুদ্ধের সময় একাধিক ফ্রন্টে সক্রিয় থাকার ক্ষমতা দেয়।
আত্মনির্ভর ভারতের দিকে আরও এক পদক্ষেপ
এই ফ্রিগেটটি সম্পূর্ণরূপে ভারতে নির্মিত, যা 'আত্মনির্ভর ভারত' অভিযানকেও শক্তিশালী করে। শুধু যুদ্ধজাহাজই নয়, এতে ব্যবহৃত বেশিরভাগ প্রযুক্তি ও সরঞ্জামও দেশীয়। এটি ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষমতার জীবন্ত প্রমাণ।
হিমগিরির মতো স্টিলথ ফ্রিগেটগুলো নৌবাহিনীকে সমুদ্রে শুধু সামরিক শক্তিই প্রদান করে না, কৌশলগত সুবিধাও দেয়। এই ধরনের যুদ্ধজাহাজের মাধ্যমে ভারত সমুদ্রসীমার নজরদারি, টহল এবং সুরক্ষা আরও কার্যকরভাবে করতে পারবে।