হোন্ডা তাদের প্রথম হাই পারফরম্যান্স ইলেকট্রিক মোটরসাইকেলটি ২০২৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী উন্মোচন করতে চলেছে। টিজারে বাইকের স্পোর্টি এবং স্টাইলিশ লুকের ঝলক দেখা গেছে। এই মডেলটি বিশেষভাবে তরুণদের কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে এবং এর পারফরম্যান্স ৫০০সিসি পেট্রোল বাইকের মতো হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Honda EV: বিশ্বে ইলেকট্রিক ভেহিকেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে জাপানি অটোমোবাইল জায়ান্ট হোন্ডা মোটর কোম্পানি তাদের প্রথম হাই পারফরম্যান্স ইলেকট্রিক বাইক লঞ্চ করার ঘোষণা করেছে। এটি ২০২৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী উন্মোচন করা হবে। কোম্পানি একটি ছোট টিজার প্রকাশ করে বাইকের ডিজাইন এবং প্রযুক্তিগত দিকের সামান্য ঝলক দিয়েছে। এই বাইকটি হোন্ডার দীর্ঘমেয়াদী ইলেকট্রিক ভেহিকেল রোডম্যাপের অংশ, যার অধীনে কোম্পানি ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাজারে একাধিক EV টু-হুইলার নিয়ে আসবে।
শক্তিশালী পারফরম্যান্সের দাবি, ৫০০সিসি ইঞ্জিনের মতো ক্ষমতা
হোন্ডা এর আগে তাদের "EV Fun Concept"-এর অধীনে একটি প্রোটোটাইপ ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল পেশ করেছিল, যার পারফরম্যান্স ৫০০সিসি পেট্রোল ইঞ্জিনযুক্ত বাইকের সমান বলা হয়েছিল। এখন হোন্ডার আসন্ন ইলেকট্রিক বাইক থেকেও একই আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মডেলটি শুধু দ্রুতগতির হবে না, বরং এতে চমৎকার অ্যাক্সিলারেশন এবং দীর্ঘ রেঞ্জও পাওয়া যাবে। এটি বিশেষভাবে তরুণ রাইডারদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে, যারা স্পিড, স্টাইল এবং প্রযুক্তির সঙ্গে কোনও আপস করতে চান না।
স্টাইলিশ লুক এবং ফিউচারিস্টিক বৈশিষ্ট্য
টিজার ইমেজ অনুসারে, বাইকটির লুক খুবই শার্প এবং স্পোর্টি দেখাচ্ছে। এতে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে:
- শার্প LED ডেটাইম রানিং লাইটস (DRL)
- TFT ডিজিটাল ডিসপ্লে
- ক্লিপ-অন হ্যান্ডেলবার
- বার-এন্ড মিরর
- সিঙ্গেল সাইড সুইং আর্ম
- ১৭ ইঞ্চি অ্যালয় হুইল
এই ইলেকট্রিক বাইকের স্ট্যান্স নেকেড স্ট্রিট ফাইটারের মতো, যা এটিকে স্পোর্টি লুক দেয়। রাস্তায় এর উপস্থিতি সহজেই নজরে আসবে।
ব্যাটারি এবং চার্জিং ক্যাপাবিলিটিতে বড় পরিবর্তন আসবে
হোন্ডার আসন্ন এই ইলেকট্রিক বাইকে ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে। আশা করা হচ্ছে, এটিতে গাড়ির মতো ফাস্ট চার্জিং সুবিধা থাকবে, যার ফলে মাত্র ৩০-৪০ মিনিটে বাইকটি ৮০-৯০% পর্যন্ত চার্জ করা যাবে।
ব্যাটারি প্যাকের ক্ষমতা সম্পর্কে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করা হয়নি, তবে এটি নিশ্চিত যে একবার চার্জে এটির রেঞ্জ ১৫০-২০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি হতে পারে।
কোথায় লঞ্চ হবে
হোন্ডার এই ইলেকট্রিক মোটরসাইকেলটি প্রথম ইউরোপে লঞ্চ করা হবে। কোম্পানির পরিকল্পনা রয়েছে উন্নত বাজারগুলিতে প্রথমে এই মডেলটি নিয়ে আসার।
ভারত সম্পর্কে কোম্পানি এখনও কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়নি। যদিও, ভারতে হোন্ডা ইতিমধ্যেই স্থানীয় পর্যায়ে অ্যাক্টিভা ইলেকট্রিক এবং QC1-এর মতো স্কুটার প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। এই কারণে অদূর ভবিষ্যতে এই হাই পারফরম্যান্স বাইকটির ভারতে আসা কঠিন মনে হচ্ছে।
তবে, যদি কোম্পানি ভারতে এটি আনার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এই মডেলটি Ultraviolette F77 এবং Oben Rorr-এর মতো বিদ্যমান ইলেকট্রিক বাইকগুলোকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিতে পারে।
হোন্ডার EV ফোকাস এবং ২০৩০ সালের রোডম্যাপ
হোন্ডার এই পদক্ষেপটি কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ, যার অধীনে তারা ২০৩০ সাল নাগাদ গ্লোবাল EV টু-হুইলার সেগমেন্টে তাদের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব তৈরি করতে চায়। কোম্পানির লক্ষ্য হল আগামী পাঁচ বছরে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক স্কুটার এবং বাইক পেশ করা, যা বিভিন্ন সেগমেন্টের গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
এগুলোর মধ্যে এন্ট্রি-লেভেল শহুরে স্কুটার থেকে শুরু করে হাই এন্ড স্পোর্টস ইলেকট্রিক বাইক পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই কৌশল হোন্ডাকে কেবল পেট্রোল যানবাহন প্রস্তুতকারক হিসাবে নয়, একটি প্রযুক্তিগতভাবে আধুনিক এবং স্থিতিশীল অটো ব্র্যান্ড হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
তরুণদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে
হোন্ডার এই আসন্ন ইলেকট্রিক বাইকটি কেবল প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত হবে না, এর ডিজাইন, রঙ এবং স্টাইলও সম্পূর্ণরূপে তরুণদের পছন্দকে মাথায় রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাইকটিতে স্মার্ট কানেক্টিভিটি, অ্যাপ ইন্টিগ্রেশন, রাইড মোড এবং ট্র্যাকিং ফিচারের মতো আধুনিক সুবিধা দেওয়া হতে পারে, যা এটিকে বর্তমান প্রজন্মের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।