হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রো চলাচল একদিনের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আগামী ৩ আগস্ট, রবিবার এই গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরিষেবা স্থগিত থাকবে।
গ্রিন লাইনে ATO টেস্টিং, তাই বন্ধ রাখা হচ্ছে পরিষেবা
মেট্রোর তরফে প্রকাশিত বিবৃতি অনুযায়ী, এই বন্ধের মূল কারণ "অটোমেটিক ট্রেন অপারেশন" বা ATO পদ্ধতির পরীক্ষা। রবিবার এই প্রযুক্তির ট্রায়াল চালানোর জন্যই মেট্রো চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
উভয় সুড়ঙ্গে চলে মেট্রো, রুটটি যাত্রীঘন এলাকায়
এই রুটে এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত পূর্বমুখী ও পশ্চিমমুখী দু’টি সুড়ঙ্গপথ রয়েছে। দু’দিকে চলাচল করে মেট্রো। ফলে এই পরিষেবা বন্ধ থাকায় দুই প্রান্তের হাজার হাজার যাত্রী সমস্যায় পড়বেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ডিসেম্বরে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে ছিল বাধা, পরে পরিষেবা বাড়ানো হয়
গত বছরের ডিসেম্বরে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে সম্পূর্ণ পথে মেট্রো চলছিল না। তখন মাত্র ১১৪টি পরিষেবা চলত এই রুটে। জানুয়ারি থেকে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ১৩০টি করা হয়। কিন্তু ফের পরিষেবা বন্ধ হওয়ার খবরে ফের একবার সমস্যায় পড়তে চলেছেন যাত্রীরা।
রবিবারের ছুটিতে যাত্রীদের মেট্রোর উপরে ভরসা, এবার খুঁজতে হবে বিকল্প
রবিবার অনেকেই হাওড়া থেকে কলকাতায় যাতায়াতের জন্য মেট্রোর উপর নির্ভর করেন। এই পরিষেবা না থাকায় বহু যাত্রীকে বিকল্প গণপরিবহণের সন্ধান করতে হবে। বাস বা রিকশার উপরে ভরসা রাখতে হবে, ফলে সময় ও অর্থ দুই দিকেই বাড়তে পারে চাপ।
এর আগে ব্লু লাইনের কবি সুভাষ স্টেশনেও ধস, বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো
অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই ব্লু লাইনের কবি সুভাষ স্টেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিউ গড়িয়া অঞ্চলের ওই স্টেশনে ২১টি স্তম্ভের মধ্যে ৪টিতে ধরা পড়েছে ফাটল। কলকাতা মেট্রো সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টেশনটি পুরোপুরি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। ই-টেন্ডার ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে।
যাত্রীদের জন্য একের পর এক ধাক্কা, বাড়ছে ক্ষোভ ও উদ্বেগ
একদিকে কবি সুভাষ স্টেশনের বন্ধ থাকা, অন্যদিকে হাওড়া ময়দান–এসপ্ল্যানেড রুটে পরিষেবা স্থগিত হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অফিস যাওয়া, হাসপাতাল বা অন্যান্য জরুরি কাজে মেট্রোর উপর যাঁরা নির্ভর করেন, তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
পরিষেবা উন্নয়নের খাতিরে ভোগান্তি, প্রশ্ন যাত্রীদের
যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিষেবার মানোন্নয়নের জন্যই এই সাময়িক সিদ্ধান্ত, তবে যাত্রীদের প্রশ্ন—ঘনঘন পরিষেবা বন্ধ না করে, রাত্রিকালীন বা ছুটির বাইরে অন্য সময়ে টেস্টিং কি করা যেত না?
কোন পথে সমাধান? নজর যাত্রী ও পরিবহণ বিশেষজ্ঞদের
শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত পরীক্ষার জন্য যাত্রীদের অসুবিধায় ফেলা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পরিবহণ বিশেষজ্ঞদের মতে, মেট্রো কর্তৃপক্ষের উচিত ভবিষ্যতে বিকল্প ব্যবস্থা আগাম জানিয়ে রাখা, যাতে সাধারণ মানুষ প্রস্তুত থাকতে পারেন।