আয়কর রিটার্ন (ITR) সময়মতো দাখিল না করলে জরিমানা, সুদ, ট্যাক্স সুবিধার অভাব এবং রিফান্ডে বিলম্বের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, লোন ও ভিসা প্রক্রিয়ায়ও সমস্যা বাড়তে পারে। শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ এবং এই তারিখ পর্যন্ত বিভাগ সময়সীমা বাড়ানোর কোনো ঘোষণা করেনি।
নয়াদিল্লি: আয়কর রিটার্ন (ITR Filing 2025) দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সময়মতো ITR দাখিল করা কেবল একটি আইনগত আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। দেরিতে দাখিল করলে জরিমানা, সুদ এবং ক্যারি-ফরোয়ার্ড ক্ষতির অধিকার হারানোর মতো সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও, ব্যাংক লোন এবং ভিসা আবেদনেও বাধা আসতে পারে। তাই সময়মতো রিটার্ন দাখিল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সময়মতো ITR দাখিল না করলে জরিমানা হতে পারে
আয়কর আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি দেরিতে ITR দাখিল করেন, তবে তাকে ধারা ২৩৪F অনুযায়ী লেট ফি দিতে হয়। যদি আপনার বার্ষিক আয় ৫ লক্ষ টাকার কম হয়, তবে আপনাকে সর্বোচ্চ ১,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে। অন্যদিকে, যাদের আয় ৫ লক্ষ টাকার বেশি, তাদের জন্য এই জরিমানা ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই জরিমানা সেই করের পরিমাণের অতিরিক্ত হবে, যা আপনাকে সরকারকে দিতে হবে।
বকেয়া করের উপর সুদ লাগবে
যদি আপনার উপর কর বকেয়া থাকে এবং আপনি নির্ধারিত তারিখের মধ্যে রিটার্ন দাখিল না করেন, তবে ধারা ২৩৪A, ২৩৪B এবং ২৩৪C অনুযায়ী সুদ আরোপ করা হবে। যতদিন আপনি বকেয়া কর পরিশোধ না করবেন, ততদিন তার উপর সুদ যোগ হতে থাকবে। দেরির অর্থ হল আপনার করের বোঝা ক্রমাগত বাড়তে থাকবে।
ক্যারি-ফরোয়ার্ড সুবিধার অভাব
যদি এই আর্থিক বছরে শেয়ার, সম্পত্তি বা মিউচুয়াল ফান্ডের মতো বিনিয়োগ থেকে আপনার মূলধনী লোকসান হয়ে থাকে, তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আপনি এটি আগামী বছরগুলিতে আপনার লাভের বিপরীতে সমন্বয় করতে পারেন। কিন্তু যদি আপনি সময়মতো ITR দাখিল না করেন, তবে এই সুবিধাটি বাতিল হয়ে যাবে। অর্থাৎ, আপনার ক্ষতি আগামী বছরের লাভের সাথে সমন্বয় করা যাবে না এবং এর ফলে আপনার করের দায় বৃদ্ধি পাবে।
রিফান্ডে বিলম্ব হবে
অনেকের জন্য ট্যাক্স রিফান্ড একটি বড় স্বস্তি। কিন্তু যদি আপনি দেরিতে ITR দাখিল করেন, তবে রিফান্ড প্রক্রিয়াও ধীর হয়ে যাবে। যত দেরিতে আবেদন করবেন, তত দেরিতে টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে পৌঁছাবে। যাদের জন্য রিফান্ডের পরিমাণ বেশি, তাদের জন্য এই বিলম্ব সমস্যা তৈরি করতে পারে।
আয়কর নোটিশের ঝুঁকি বাড়বে
ট্যাক্স বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেরিতে বা অসম্পূর্ণ রিটার্ন দাখিল করলে আয়কর বিভাগ থেকে নোটিশ আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিভাগ আপনাকে কারণ জিজ্ঞাসা করতে পারে যে আপনি কেন সময়মতো রিটার্ন দাখিল করেননি। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে সম্মতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হতে পারে, যা আর্থিক ও মানসিক উভয় দিক থেকে বোঝা বাড়াতে পারে।
লোন পেতে অসুবিধা
বর্তমান সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান লোন মঞ্জুর করার আগে আবেদনকারীর আর্থিক অবস্থা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে। এর জন্য আয়কর রিটার্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি। আপনি হোম লোন, কার লোন বা পার্সোনাল লোন নিতে চান না কেন, ব্যাংক ITR-এর কপি অবশ্যই চায়। যদি আপনি সময়মতো রিটার্ন দাখিল না করেন, তবে লোন অনুমোদনে অসুবিধা হতে পারে।
ভিসা প্রক্রিয়ার উপরও প্রভাব পড়তে পারে
বিদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রক্রিয়ায় আয়কর রিটার্নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অনেক দেশ আবেদনকারীর আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রমাণ চায়, যার জন্য ITR সবচেয়ে প্রয়োজনীয় নথি হিসাবে বিবেচিত হয়। যদি আপনার কাছে আপডেট করা ITR না থাকে, তবে আপনার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে।